অধীর চৌধুরীকে ঘিরে বিক্ষোভের দৃশ্য (বাঁ দিকে)। নওয়াদার বিধায়ক শাহিনা মমতাজ। —ফাইল চিত্র।
তাঁর বিধানসভা এলাকায় প্রচারে এসে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী অধীর চৌধুরী। কর্মী এবং সমর্থকদের ওই কাজ মোটেই সমর্থন করতে পারছেন না নওদার তৃণমূল বিধায়ক শাহিনা মমতাজ। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘যা হয়েছে সেটা অসভ্যতা এবং নোংরামি। এমন কাজকে মোটেই সমর্থন করছি না।’’ তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্যের পর কংগ্রেসের বক্তব্য, ‘‘উনি ভাল মানুষ।’’
শনিবার নওদা বিধানসভার দমদমা শ্যামনগর থেকে পায়ে হেঁটে প্রচার শুরু করেন অধীর। সেখানেই ব্লক সভাপতি শফিউজ্জামান ওরফে হাবিব মাস্টারের নেতৃত্বে অধীর চৌধুরীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয় বলে অভিযোগ। হাবিব মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী আবু তাহের খানের ভাগ্নে। অধীরের গাড়ি ঘিরে যখন বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল, পাল্টা স্লোগান তোলেন কংগ্রেসের কর্মীরা। উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো হিমশিম খায় পুলিশ।
এর আগেও দু’বার প্রচারে বেরিয়ে একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন অধীর। শেষ বার বহরমপুরে প্রচারে বেরিয়ে বিক্ষোভ দেখে মেজাজও হারাতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেস প্রার্থীকে। তৃণমূল অভিযোগ করে, তাদের এক কর্মীর গায়ে হাত তুলেছেন কংগ্রেস প্রার্থী। এ নিয়ে জোর তরজা হয়। শনিবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল নওদায়। এ নিয়ে অধীর আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘তৃণমূলের উস্কানিতে ওই দলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা আমার উপর হামলা করার চেষ্টা করেছে। স্থানীয়েরাই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তৃণমূল চেয়েছিল এখানে আমার প্রোগ্রাম বন্ধ করতে। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, প্রোগ্রাম এখানেই হবে, নির্দিষ্ট সূচি মেনেই হবে। তৃণমূলের দু’চারটে গুন্ডা দেখে দমে যাওয়ার লোক অধীর চৌধুরী নয়। বিষয়টি প্রশাসনকেও জানিয়েছি। আমি আবার চ্যালেঞ্জ করে বলছি, যদি কারও হিম্মত থাকে তো একটা বুথ ভোটের দিন দখল করে দেখাক।’’
আর দলের একাংশের এই কাজ যে মোটেই ঠিক হয়নি, তা কুণ্ঠাহীন ভাবে বললেন নওদার তৃণমূল বিধায়ক মমতাজও। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘দলের এই বিক্ষোভ অসভ্যতামি ও নোংরামি। এটা আমি মেনে নিতেই পারি না। আমি সমর্থন করি না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমি কখনও আমার ছেলেমেয়েদের (দলীয় কর্মী) বলব না এ ধরনের অন্যায় কাজ করতে। কারণ, উনি এক জন প্রার্থী, ওঁর অধিকার আছে প্রচার করার, প্রার্থী হিসাবে সবার এই অধিকার আছে।’’
দলের শীর্ষনেতৃত্বকে কি এই বিষয়ে কিছু বলবেন তিনি? নওদার তৃণমূল বিধায়কের জবাব, ‘‘আমার কাছে বেশ কিছু ফোন এসেছিল। প্রত্যেককেই আমি বলেছি , একই কথা— এগুলো ঠিক নয়।’’ মমতাজের প্রশ্ন, ‘‘কেন নোংরামো করবে? এই ধরনের নোংরামো একদমই ঠিক নয়।’’
তৃণমূলের তরফে বিধায়কই এমন মন্তব্য করার পর কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘তৃণমূলে কিছু বিবেকবান ভাল মানুষ আছেন। তাঁরা অন্যায় সহ্য করলেও শেষ মুহূর্তে প্রতিবাদ করেন। নওদার বিধায়ক হয়তো ভাল মানুষ।’’