কুমারগঞ্জ ব্লকের জগদীশপুর গ্রামে নিজের বাড়িতে জ্যোৎস্না চক্রবর্তী।
১০৪ বছর বয়স জ্যোৎস্না চক্রবর্তীর। কানে কম শোনেন বটে। কিন্তু এখনও স্নান, খাওয়া থেকে নিজের কাজ নিজেই করেন। সামনে লোকসভা ভোট। প্রতি ভোটেই তিনি নিয়ম করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এ বারও ভোট দেবেন। যা নিয়ে শুধু আত্মীয়-পরিজনেরাই নন, বিশেষ তৎপর প্রশাসনও।
দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের জগদীশপুর গ্রামের বাসিন্দা জ্যোৎস্নাদেবী সরকারি খাতায় জেলার বয়স্কতম ভোটার। তিনি যাতে বাড়িতে বসেই লোকসভার ভোট দিতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে বলে জানালেন জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণ। রবিবার কুমারগঞ্জের বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) রাজু সরকার বাড়িতে গিয়ে জ্যোৎস্নাদেবীর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। তিনি বলেন, ‘‘বাড়িতে বসে যাতে তিনি ভোট দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করার প্রক্রিয়া চলছে।’’
জ্যোৎস্নাদেবীর বড় ছেলে বৈদ্যনাথ বলেন, ‘‘বয়সের ভারে মায়ের স্মৃতি অনেকটাই ধূসর। এক টানা বেশি দূর হাঁটতে পারেন না। পঞ্চায়েতেও তিনি বাড়ি থেকেই ভোট দেন।’’ ভোটের কাজে যুক্ত আধিকারিকেরা তখনও বাড়িতে এসেছিলেন বলে বৈদ্যনাথ জানালেন।
ও পার বাংলা থেকে স্বামীর সঙ্গে কবে এ জেলায় এসেছিলেন, মনে করতে পারেন না জ্যোৎস্নাদেবী। সে আমলে স্কুল ফাইনাল উত্তীর্ণ ওই বৃদ্ধার কাছে ফেলে আসা দিনের কথা জানতে চাইলে, বাংলাদেশের টুকরো স্মৃতিকথা শোনান। তার পরেই চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। ও পার বাংলায় সরকারি চাকুরে স্বামী রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী অনেক দিন আগেই মারা গিয়েছেন। বর্তমানে তাঁর দুই ছেলে, তিন মেয়ে, পুত্রবধূ, জামাতা এবং নাতি-নাতনিরা রয়েছেন। ২৬ এপ্রিল বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে ভোট। মেয়ে শিপ্রাকে পাশে নিয়ে জ্যোৎস্নাদেবী বলার চেষ্টা করেন, ‘‘এ বারও ভোট দেব।’’