আবু তাহের খান। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিনের অসুস্থতা কাটিয়ে বাড়ি ফেরার পর থেকে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি সাংসদ। প্রথম কিছু দিন হুইল চেয়ার, পরে অন্যের সাহায্য নিয়ে হাঁটাচলা করে এ দিক-সে দিক গিয়েছেন। যোগ দিয়েছেন দলীয় কর্মসূচিতে। অনুগামীদের দাবি, গত ১০ দিনে ১০০টিরও বেশি সভায় গিয়েছেন ‘দাদা’। অসুস্থতার কারণে তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হলেও মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে সেই আবু তাহের খানের উপরেই ভরসা রাখলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফের প্রার্থী হওয়ার পর বিদায়ী সাংসদ তাহের আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘এখন ৯০ শতাংশ সুস্থ। হয়তো দৌড়তে পারব না। কিন্তু আমাদের দৌড়নোর প্রয়োজনও নেই। কারণ আমরা সারা বছর কাজ করি।’’
প্রায় সাত মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন তাহের। গত ১৯ এপ্রিল স্নায়ু ও ফুসফুস সংক্রমণের কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। কলকাতার মল্লিকবাজারের এক বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরিবার সূত্রে খবর, তাহেরকে পরে দিল্লিও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পর গত ৩ নভেম্বর বাড়ি ফিরেছিলেন সাংসদ। তার পর থেকেই তাঁকে রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচিতে সক্রিয় ভাবে উপস্থিত থাকতে দেখা যাচ্ছিল। গত ২৩ নভেম্বর কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলনেত্রীর ডাকে দলের অধিবেশনেও উপস্থিত ছিলেন। তার পর দিল্লির রাজঘাট ও যন্তরমন্তরে দলের কর্মসূচিতেও হুইল চেয়ারে বসে হাজির হয়েছিলেন তাহের। সেই সময় লোকসভার অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে জানিয়েছিলেন, তিনি সুস্থ। এতে স্বভাবতই উজ্জীবিত ছিলেন তাহের ঘনিষ্ঠেরা।
কিন্তু চেয়ারম্যান পদ থেকে তাহেরকে দল সরিয়ে দেওয়ায় অনুগামীদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল যে, মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে হয়তো প্রার্থী বদল করতে পারেন তৃণমূলনেত্রী। সেই আবহে প্রার্থী হিসাবে নিয়ামত শেখ-সহ বেশ কয়েক জনের নাম ঘিরেও জল্পনা তৈরি হয়। কিন্তু সব জল্পনার অবসান হল রবিবার ব্রিগেড মঞ্চে। যখন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের প্রার্থী হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণা করা হল। এক অনুগামী জানান, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে নিজের নাম শোনার পরেই উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিলেন তাহের। সেই দু’জন সহযোগী দৌড়ে গিয়ে দু’দিক থেকে হাত চেপে ধরেন। সেই অবস্থাতেই দলনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে হাতও নাড়েন।
পরে তাহের বলেন, ‘‘আমরা সারা বছর কাজ করি। এত কাজ করেছি মানুষের জন্য যে প্রচারের প্রয়োজনই পড়বে না। আর আমার বিরুদ্ধে কে প্রার্থী হবেন, সেটাই তো ভেবে ঠিক করতে পারছে না বিরোধীরা। আগে প্রার্থী ঠিক করুক তারা। তবে প্রার্থী যে-ই হোক, গতবারের থেকে ব্যবধান বাড়বে।’’ মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘রাজ্যের ৪২টা কেন্দ্রে প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জয় নিশ্চিত। শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’