অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
এক সময়ে জোড়াফুলের রথীন চক্রবর্তী এখন পদ্ম শিবিরের হয়ে হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী। রবিবার বালির জনসভা থেকে তাঁকে নিশানা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি নাম না করলেও, প্রাক্তন মেয়র রথীনকে ‘হাওড়ার সব থেকে বড় চোর’ আখ্যা দিয়ে অভিষেক বলেন, “বিজেপির যে প্রার্থী, তাঁকে দল থেকে আমরা বার করে দিয়েছি। দুর্নীতির অভিযোগ ছিল বলে।”
যদিও রথীনের পাল্টা দাবি, “বহিষ্কারের চিঠিটা একটু দেখান, দেখি। ওই দলে দুর্নীতি ছিল বলে আমরা নিজেরা ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি।” হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে এ দিন জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল বালি অ্যাথলেটিক ক্লাবের মাঠে। বালি-সহ হাওড়া শহরের বিভিন্ন বিধানসভা থেকে কর্মী-সমর্থকেরা হাজির হয়েছিলেন সেখানে। ওই মাঠে উপস্থিত হয়ে অভিষেক এটাও দাবি করেন, ওই কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকার উন্নয়নের দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নেবেন। তাঁর কথায়, “যেমন ডায়মন্ড হারবারের উন্নয়নের দায়িত্ব আমার, তেমনই এখন থেকে হাওড়ার দায়িত্বও আমি নিচ্ছি।” যদিও এই বক্তব্যের সূত্র ধরেই প্রশ্ন তুলছেন রথীন। তিনি বলেন, “ওঁদের সাংসদ তা হলে এত বছর ধরে কী কাজ করলেন? তা হলে উনি পরোক্ষ ভাবে স্বীকার করছেন যে হাওড়ায় কোনও কাজ হয়নি। তাই এ বারে ওঁকে দায়িত্ব নিতে হচ্ছে।”
এ দিন সভা থেকে অভিষেকও দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী বার বার এ রাজ্যে সভা করতে এলেও, কোথাও এক মিনিটের জন্যও বলছেন না যে তিনি গত ১০ বছরে মানুষের জন্য কী কাজ করেছেন। সেখানে তৃণমূল রাজ্যে কী কাজ করেছে, সেই পরিসংখ্যান দিতে তিনি প্রস্তুত বলেও জানান অভিষেক। পাশাপাশি, দৃঢ়তার সঙ্গে অভিষেক দাবি করেন, উত্তরবঙ্গ থেকেই বিজেপির জনসমর্থনে ধস নামতে চলেছে আগামী চার জুনের ফলাফলে। তাঁর কথায়, “প্রথম দফায় মানুষ বিজেপির মাথা ভেঙে দিয়েছেন। দ্বিতীয় দফায় ঘাড় ভেঙেছেন। তৃতীয় দফায় মালদহ, মুর্শিদাবাদের মানুষ শিরদাঁড়া ভেঙে দিয়েছেন।” আজ, সোমবার চতুর্থ দফায় বিজেপির কোমর ভাঙবে বলেও দাবি করে অভিষেক আরও বলেন, “পঞ্চম দফায় আপনারা পা ভেঙে দেবেন। ষষ্ঠ দফায় হাত, কনুই সব ভাঙবে। আর শেষ দফায় তো আমি রয়েছি, বিসর্জন দিয়ে দেব।”
আয়ুষ্মান ভারত কেন রাজ্যে চালু হয়নি, এ দিন তারও ব্যাখ্যা দেন অভিষেক। তাঁর দাবি, মোবাইল, সাইকেল, মোটরসাইকেল, টিভি, রেডিয়ো থাকলে কেন্দ্রের ওইপ্রকল্পের সুবিধা মিলবে না। সেখানে এ রাজ্যের সমস্ত মানুষকে তৃণমূল সরকার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প দিয়েছে। অন্য দিকে, বিজেপি ভোটে টাকা ছড়াচ্ছে বলেও তাঁর কাছে অভিযোগ এসেছে বলে দাবি করেনতৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড। তবে, তিনি বলেন, “বিজেপি টাকা দিলে নিয়ে নেবেন। কারণ ওই টাকা আপনাদের। বরং ৫০০ দিতে এলে ১০০০ চাইবেন। আর ক্লাবগুলিকে বলছি, ১০ হাজার দিতে চাইলে ৫০ হাজার চাইবেন। আর, ভোটটা দেবেন জোড়া ফুলে।”