অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
‘‘যাঁর দোকান নেই এখানে, তিনি কী গ্যারান্টি দেবেন? দোকান তো তিন হাজার কিলোমিটার দূরে। আপনি কোন গ্যারান্টি দিয়ে পূরণ করেছেন?’’
‘‘পদ্মফুলের কাছ থেকে টাকা নেবেন, তৃণমূলে ভোট দেবেন। তবেই এরা শায়েস্তা হবে। এত দিন বঞ্চিত করে রেখেছে আপনাদের। কোথায় ছিল কোভিডের সময় থেকে।’’
‘‘আমাকে অনেক ধমকানো-চমকানোর চেষ্টা করেছে। আমার বাবা-মা, স্ত্রীকেও ছাড়েনি। আরে আমরা অন্য ধাতুতে তৈরি। যত পোড়াবে, তত শক্ত হবে। ঘাসফুলের দল। যত কাটবে, তত বাড়বে।’’
‘‘১৫ লক্ষ টাকা পেলেন না কি কেউ? বছরে দু’কোটি চাকরি মানে একটা বুথে দুশো চাকরি। হাওড়ায় একটা ঘটনা দেখান।’’
‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরি দিচ্ছে। আর বিজেপি কোর্টে যাচ্ছে যাতে চাকরি চলে যায়। আমি চাই,যাঁরা ঠিক ভাবে চাকরি পেয়েছেন যাঁরা, তাঁদের এক জনেরও যেন চাকরি না-যায়। দুটো বেলুন ছিল বিজেপির কাছে। একটা এসএসসির চাকরি খাওয়া। আর একটা হল সন্দেশখালির বেলুন। সন্দেশখালির বেলুনে স্টিং অপারেশ হয়ে বেলুন ফুস্ হয়ে গিয়েছে। আর এসএসসির বেলুনে তো আলপিনটা সুপ্রিম কোর্টই ফুটিয়ে দিয়েছে। কিচ্ছু নেই!’’
‘‘মমতা না-থাকলে আজও সিপিএমের বোমা-বন্দুকের নীচে থাকতে হত সবাইকে। তৃণমূল পথ দেখিয়েছে। আর হাওড়ার সব থেকে বড় চোরটা এখন বিজেপির প্রার্থী!’’
‘‘বাংলার সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এক করে দিচ্ছে। বিজেপি ভুলে যাচ্ছে বাংলা না থাকলে স্বাধীনতা আসত না দেশে।’’
‘‘সন্দেশখালিকাণ্ডে ‘স্টিং ভিডিয়ো’ নিয়ে বিজেপিকে নিশানা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বললেন, ‘‘পাড়ায় যান, কোনও সভ্য মানুষ বিজেপি করে না। মদখোর, পাতাখোরেরা বিজেপি করে।’’
‘‘একটা খুঁটি পুঁতে ১০ ওয়াটের বালব্ লাগানোর ক্ষমতা যাদের নেই, তাঁরা বলছেন উন্নয়নের কথা! বিজেপি নিদান দিচ্ছে, আমি ডিম খাব না, মাছ খাব না, মাংস খাব না। আমি কোথায় যাব, কী পরব, কী খাব ঠিক করে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। নিদান দেবেন প্রধানমন্ত্রী!’’
‘‘অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান নিয়ে কথা নেই। খালি মন্দির করেছি বলে ভোট চাওয়া। আমি যদি বলি, বালিতে মন্দির করব, আমায় ভোট দেবেন? আমার কোনও ধর্ম নেই জনপ্রতিনিধি হিসাবে। একটাই ধর্ম মানুষের জনসেবা। তাদের পরিষেবা দেওয়া।’’
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘এক দিকে এক হাজার টাকা দিদি আপনাদের দিচ্ছে। অন্য দিকে, আধার আর প্যান কার্ডের লিঙ্ক করবে বলে সেই টাকা মোদী আপনার হাত দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এক দিকে দিদি দিচ্ছে। অন্য দিকে মোদী নিচ্ছে। ১৩ বছরে একটা জনবিরোধী নীতি নেই তৃণমূলের।
ভাইরাল রেকর্ড শুনিয়ে শুভেন্দুকে কটাক্ষ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, সন্দেশখালি নিয়ে মিথ্যাচার করে গিয়েছে বিজেপি।
‘‘দু’হাজার টাকা দিয়ে এক জন মহিলার সম্মান বিকিয়ে দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন। আমি ভেবেছিলাম, সন্দেশখালি নিয়ে উনি ক্ষমা চাইবেন।’’
‘‘পান থেকে চুন খসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী, আকাশে মেঘ হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী। তাপমাত্রা বাড়লে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী। মোদীকে নিয়ে চুপ! সন্দেশখালি নিয়ে তিন মাস মিথ্যাচার করেছে। এই দলটা যে এত ছোট, নির্লজ্জ আমরা শুনেছিলাম। গোধরা জানতাম।’’
‘‘আমি নবজোয়ার করেছিলাম আড়াই মাস। তখন বলেছিলাম, আপনার একটা ভোটের যা ক্ষমতা, আমাদের মূল্য শূন্য, আপনার একটা ভোটের মূল্য অনেক। আমি মানুষের চোখ দেখে বুঝি। আগামী চার তারিখ পরিবর্তন শুধু সময়ের অপেক্ষা। চারশো পারের গল্প দিয়েছিল। দুশো পেরোতে ল্যাজে-গোবরে হবে।’’
‘‘উত্তরবঙ্গে ভোটবাক্স খোলা হলে দেখবেন , এদের ঘাড়, মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে। আগামিকাল বোলপুর, বর্ধমান, আসানসোল, দুর্গাপুর— একাধিক আসনে ভোট রয়েছে। সেখানে মানুষ এদের কোমর ভাঙবে। পঞ্চম দফায় আপনাদের কাজ পা ভাঙা। সপ্তম দফায় আমি আছি। ডায়মন্ডহারবারে। অহংকার, দম্ভ ভেঙে চূর্ণ করে দেব।’’
কোভিডের সফায় বাংলায় আট দফা ভোট করেছে। সাত দফায় ভোট করে গরমে বাংলার মানুষের উপর অত্যাচার করতে চেয়েছে।
‘‘যাঁরা যেখানেই আমাদের সভা শুনছেন, দেখছেন সবাইকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। দশ-পনেরো দিন আগে শিবপুরে এসেছিলাম রোড-শো করতে। যে ভাবে মানুষের সমর্থন দেখেছি— আমি ভেবেচিন্তে কথা বলি... আমি কৃতজ্ঞ। আজকের সভা থেকে বলছি, আমি ডায়মন্ড হারবার থেকে যে ভালবাসা পেয়েছি একই ভালবাসা হাওড়ায় পেয়েছি। উন্নয়নের মাধ্যমে ভালবাসার শোধ দেব।’’
আপনারা যারা সভাস্থলে এসেছেন, আমাদের সভাকে সফল করেছেন, সবাইকে নত মস্তকে প্রণাম জানাচ্ছি।