বাঁ দিক থেকে, কেজরীওয়াল এবং রাহুল। — ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে অভিন্ন ‘শত্রু’ বিজেপিকে হারাতে শেষ পর্যন্ত হাত মেলাল কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টি (আপ)। দিল্লির পাশাপাশি গোয়া, হরিয়ানা, চণ্ডীগড় এমনকি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতেও আসন সমঝোতা করে লড়বে দু’দল। বৃহস্পতিবার রফা-বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। তবে আপ শসিত পঞ্জাবে সম্ভবত কোনও আসন রফার পথে হাঁটছে না রাহুল গান্ধী এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল।
রফাসূত্র অনুযায়ী দিল্লির সাতটি লোকসভা আসনের মধ্যে তিনটি কংগ্রেসকে ছাড়ছে কেজরীওয়ালের দল। এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেনুগোপালের বাড়িতে দু’দলের নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় পূর্ব দিল্লি এবং উত্তর-পশ্চিম দিল্লি লোকসভা আসনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। তবে রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গের দলের তৃতীয় আসনটি এখনও চিহ্নিত করা হয়নি। অন্য দিকে, আপ চাঁদনি চক, নয়াদিল্লি এবং পশ্চিম দিল্লিতে লড়বে বলে স্থির হয়েছে বৈঠকে। শুক্রবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হতে পারে।
জানুয়ারিতে কংগ্রেস এবং আপ নেতৃত্ব আসন সমঝোতা নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা করলেও জট কাটেনি। সূত্রের খবর আপের তরফে দিল্লির সাতটি আসনের মধ্যে একটি বা দু’টি ছাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস অন্তত তিনটিতে লড়ার দাবিতে অনড় থাকায় আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল। কংগ্রেস নেতা মুকুল ওয়াসনিকের নেতৃত্বে গঠিত আসন সমঝোতার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির অন্য চার সদস্য— রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত, ছত্তীসগঢ়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সলমন খুরশিদ এবং এআইসিসির প্রাক্তন মুখপাত্র মোহন প্রকাশ ছিলেন বৈঠকে। সঙ্গে ছিলেন দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অরবিন্দর সিংহ লভলীও।
অন্য দিকে, আপের তরফে রাজ্যসভা সাংসদ সন্দীপ পাঠক এবং দিল্লির দুই মন্ত্রী অতিশী এবং সৌরভ ভরদ্বাজ অংশ নিয়েছিলেন জানুয়ারির রফা-আলোচনায়। ইতিমধ্যেই পঞ্জাব, গুজরাত, অসম, গোয়া-সহ বিভিন্ন রাজ্যে লোকসভা ভোটে ‘একলা চলো’র বার্তা দিয়েছে আপ। ওই রাজ্যগুলির কিছু আসনে একতরফা প্রার্থী ঘোষণাও করেছে তারা। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ‘আপ’ শাসিত দিল্লির সাতটি আসনের সবগুলি আসনই জিতেছিল বিজেপি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তার মধ্যে পাঁচটি আসনেই কংগ্রেস দ্বিতীয় স্থানে ছিল।
যদিও ২০২০ সালে দিল্লির বিধানসভায় বেশির ভাগ আসনে জিতে কেজরীওয়াল ফের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। গত বছর দিল্লির পুরসভাও বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে আপ। এই পরিস্থিতিতে আপ এবং কংগ্রেসের জোট হওয়ায় দেশের রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে ভোট পণ্ডিতদের একাংশ মনে করছেন। আপ সূত্রের খবর, দিল্লির পরে অন্য কয়েকটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড়ে রফা নিয়ে আলোচনা শুরু হবে।