(বাঁ দিক থেকে) অধীর চৌধুরী, দিলীপ ঘোষ, শত্রুঘ্ন সিন্হা এবং মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
সোমবার চতুর্থ দফার ভোট দেশ জুড়ে। আর এই চতুর্থ দফায় পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ভোট হবে মোট আটটি আসনে। বহরমপুর, রানাঘাট, বর্ধমান-দুর্গাপুর, বোলপুর, কৃষ্ণনগর, বর্ধমান-পূর্ব, আসানসোল এবং বীরভূম। এই আট আসনে গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী কারা? কারা বড় তারকা? ভোটযুদ্ধে মোট কত জন প্রার্থী নামছেন? তার এক ঝলক রইল আনন্দবাজার অনলাইনে।
নজরে কারা
সোমবার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই সাত জন প্রাক্তন সাংসদের। এঁরা হলেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী, বিজেপির রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার, বিজেপির বর্ধমান পূর্বের সাংসদ কিন্তু আসানসোলের প্রার্থী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া, বিজেপির মেদিনীপুরের সাংসদ কিন্তু এই বছর বর্ধমান পূর্বের প্রার্থী দিলীপ ঘোষ, তৃণমূলের বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র, আসানসোলের সংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা ও শতাব্দী রায়। এঁরা প্রত্যেকেই গত বারের নির্বাচিত সাংসদ। অধিকাংশই নিজের কেন্দ্র থেকে লড়ছেন। শুধু অহলুওয়ালিয়া তাঁর বর্ধমান পূর্ব আসন ছেড়ে প্রার্থী হয়েছেন আসানসোলের। অন্য দিকে মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপকে এ বার নিয়ে আসা হয়েছে গত বারের অহলুওয়ালিয়ার কেন্দ্র বর্ধমান পূর্বে।
নতুন ‘তারা’
চতুর্থ দফার ভোটে নিজেদের প্রমাণ করার লড়াইও লড়বেন কয়েক জন। এঁরা হলেন, কৃ্ষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়, যিনি কৃষ্ণনগরের রানিমা। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট তারকা তথা তৃণমূলের বর্ধমান পূর্বের প্রার্থী কীর্তি আজাদ, বহরমপুরের তৃণমূল প্রার্থী এবং ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান।
এঁদের মধ্যে রানিমা এবং পাঠান দু’জনেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি দেওয়ার পরেই লোকসভা ভোটের ময়দানে নেমে পড়েছেন। তবে কীর্তি রাজনীতিতে নতুন নন। এর আগে তৃণমূলের হয়ে গোয়ার দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।
প্রার্থী
তবে বাংলার চতুর্থ দফার ভোটে এরা ছাড়াও আরও বহু প্রার্থী রয়েছেন। সোমবারের ভোটে মোট ৭৫ জন প্রার্থী নামছেন ভোটযুদ্ধে। এঁদের মধ্যে তৃণমূলের ৮ জন, বিজেপির ৮, বিএসপির ৮, কংগ্রেসের ২, সিপিআইএমের ৬, অন্যান্য ২১ এবং নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা ২০ জন। ৭৫ জন প্রার্থীর মধ্যে পুরুষ প্রার্থীর সংখ্যা ৫৯। মহিলা প্রার্থী ১৬ জন। আটটি কেন্দ্রের মধ্যে প্রার্থী সংখ্যায় সবচেয়ে বেশি এগিয়ে বহরমপুর। বিদায়ী সংসদ অধীরের কেন্দ্রে মোট ভোট প্রার্থীর সংখ্যা ১৫। অন্য দিকে, প্রার্থীসংখ্যায় সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে রানাঘাট, বর্ধমান পূর্ব এবং আসানসোল। এই তিন কেন্দ্রেই সাত জন করে প্রার্থী রয়েছেন।
বুথ
ভোট হবে ১৫ হাজার ৫০৭টি বুথে। এর মধ্যে বহরমপুরে ১৮৭৯টি বুথ, কৃষ্ণনগরে ১৮৪১, রানাঘাটে ১৯৮৩, বর্ধমান পূর্বে ১৯৪২, বর্ধমান-দুর্গাপুরে ২০৩৯, আসানসোলে ১৯০১, বোলপুরে ১৯৭৯ এবং বীরভূমে ১৯৪৩টি বুথ রয়েছে। তবে এই ১৫,৫০৭টি বুথের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের হিসাবে স্পর্শকাতর বুথ ৩৬৪৭টি। ৭৯১টি বুথ সম্পূর্ণ মহিলা নিয়ন্ত্রিত। মডেল বুথ ৫৭টি।
ভোটার
চতুর্থ দফার ভোটে আটটি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১ কোটি, ৪৫ লক্ষ, ৩০ হাজার ১৭ জন। এঁদের মধ্যে মহিলা ভোটার ৭১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৩৭৯ জন। পুরুষ ভোটার ৭৩ লক্ষ ৮৪ হাজার ৩৫৬ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ২৮২জন। এ ছাড়া মোট ভোটারদের মধ্যে ১৮-১৯ বছর বয়সি ভোটার ৩ লক্ষ ২৩ লক্ষ ৫৪৪ জন (মহিলা, পুরুষ এবং তৃতীয় লিঙ্গ মিলিয়ে), ৮৫ বছরের বেশি বয়স ৭০ হাজার ৬৪৭ জন ভোটারের।
বাহিনী
চতুর্থ দফার ভোটে আটটি কেন্দ্রে মোট ৫৭৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বর্ধমান পূর্বে। মোট ১৫২ কোম্পানি বাহিনী থাকবে সেখানে। এর পরেই রয়েছে বীরভূম। ১৩২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে সেখানে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অধীনস্থ এলাকা। এই এলাকায় ৮৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৩০,০০৯ জন পুলিশকর্মী মোতায়েন রয়েছেন ১৫,৫০৭ বুথে।