অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —সংগৃহীত।
১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা এবং সড়ক যোজনার বরাদ্দ নিয়ে বিজেপি নেতাদের খোলাখুলি বিতর্কে বসার আহ্বান জানিয়ে রেখেছেন তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সময় চেয়েও পিছিয়ে গিয়েছিল পদ্মশিবির। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার সভা থেকে তা নিয়ে ফের এক বার বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তৃণমূল সেনাপতি।
ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বাংলায় এসে অসত্য কথা বলে গিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাকে আবাস, ১০০ দিন এবং রাস্তার টাকা নাকি কেন্দ্র দিয়েছে। আমি পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে বলেছি, ২০২১ সালে হারার পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকার এই তিন প্রকল্পে বাংলায় এক পয়সা দেয়নি।’’ অভিষেকের কথায়, ‘‘আমি বলেছিলাম, আসুন, বিতর্কে বসুন। কিন্তু ২০০ ঘণ্টা কাটতে চলল, বিজেপির কারও সাহস হল না আমার মুখোমুখি বসার। কারণ বিজেপিও জানে প্রধানমন্ত্রী অসত্য বলেছেন। ওরা পারবে না।’’
ব্রিগেডের পরেই জেলায় জেলায় নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন অভিষেক। গত ১৪ মার্চ তাঁর প্রথম সভা ছিল জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়িতে। সে দিন সকালেই এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে অভিষেক লিখেছিলেন, ‘‘মিথ্যাচার করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জনগণের টাকা নষ্ট করছে। আমি বিজেপি নেতৃত্বকে আমার সঙ্গে মুখোমুখি তর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। ২০২১ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পগুলিতে এক পয়সাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। আমি যে ভুল তা প্রমাণ করার জন্য বিজেপিকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি।’’
তার পরেই রাজ্য বিজেপির এক্স হ্যান্ডলে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি বিজ্ঞাপন পোস্ট করে লেখা হয়েছিল, ‘‘আপনি আপনার সুবিধামতো স্থান ও সময় জানান। আমরা আমাদের যুব মোর্চার কোনও এক জন কর্মীকে পাঠিয়ে দেব বিতর্কের জন্য। আপাতত এটা (বিজ্ঞাপন) পড়ে নিন।’’ বিজেপির পোস্টে অভিষেকের নাম উল্লেখ ছিল না। তবে সেই পোস্টটি ‘রিপোস্ট’ করে অভিষেক আবার লিখেছিলেন, ‘‘আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৩টের সময় ময়নাগুড়ি টাউন ক্লাবের মাঠে। দয়া করে রেগা ও আবাস যোজনার শ্বেতপত্র সঙ্গে নিয়ে আসবেন। দেখা হবে।’’ কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিজেপির কেউ সেখানে যাননি। পরে পদ্মশিবিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনও বিজেপি কর্মী অভিষেকের সঙ্গে এক ফ্রেমে যাবেন না। কাটোয়ার সভায় অভিষেক বলেন, ‘‘ওরা সিএএ-এর জন্য কাগজ দেখাতে বলছে, কিন্তু ওরা কাগজ দেখাতে পারছে না।’’
শুক্রবার কাটোয়ায় বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকার এবং বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থী কীর্তি আজাদের সমর্থনে প্রচার করেন অভিষেক। এই সভা থেকেও বিজেপিকে বাংলা-বিরোধী বলে আক্রমণ শানান অভিষেক। গত লোকসভায় বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে জিতেছিলেন বিজেপির সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। সভা থেকে তাঁকে আক্রমণ করেন অভিষেক। তৃণমূলের সেনাপতি বলেন, ‘‘পাঁচ বছরে এক বারও বিজেপির সাংসদ কোথাও উন্নয়ন নিয়ে বৈঠক করেছেন? করেননি। কারণ ওদের গ্যারান্টি মানে জ়িরো ওয়ারেন্টি। আর দিদির গ্যারান্টি মানে ১০০ শতাংশ ওয়ারেন্টি। যা বলেন, তা-ই করেন।’’