সারদা ছাড়াও অন্য যে সমস্ত অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাদের অফিস-সহ কর্তা-কর্মী-এজেন্টদের বাড়িতে তল্লাশি প্রক্রিয়া জারি রাখল সিবিআই। বুধবার সকালে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স এবং নিজাম প্যালেস থেকে সিবিআই-এর প্রায় ১৫টি দল বিভিন্ন জায়গায় অভিযানে বেরোয়। এ দিন তারা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে টালিগঞ্জ এলাকার রানিকুঠি, বাইপাস সংলগ্ন একটি আবাসন, উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর, ইছাপুর, খড়দহ-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালায়।
এ দিন সকালে খড়দহের ডাঙাপাড়া এলাকায় প্রণবেশ চক্রবর্তীর বাড়িতে অভিযান চালায় সিবিআয়ের একটি দল। তিনি ‘টিউলিপ’ সংস্থার এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। তবে, সিবিআই তল্লাশির সময়ে প্রণবেশবাবু বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, তদন্তকারীরা যে সমস্ত প্রশ্ন করেছেন তার যথাযথ উত্তর দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু নথি তাঁরা দেখতে চেয়েছেন বলে খবর। অন্য দিকে, যাদবপুর, রানিকুঠি, বাইপাস সংলগ্ল সিলভার স্প্রিং আবাসন, ব্যারাকপুরের চন্দনপুকুর, ইছাপুরে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি আবাসন ইত্যাদি জায়গায় একই সঙ্গে তল্লাশি চালায় সিবিআই। তবে এ দিনের অভিযানে কেউ গ্রেফতার হননি।
সিবিআই সূত্রে খবর, প্রায় আড়াই মাস আগে ‘রিয়েল টিউলিপ ইন্ডিয়া’ নামে একটি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে তারা। সেই সূত্রেই এ দিনের তল্লাশি। সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, এই মামলায় বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের খোঁজ করতে হবে। তদন্তকারীদের একাংশের মতে, ২০১১ সালে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থা ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠে। সারদার পাশপাশি এই সমস্ত সংস্থা বাজার থেকে কোটি কোটি টাকা তোলে। কিন্তু, সারদা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এরাও তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলে। গোয়েন্দাদের একাংশের ধারণা, সারদার টাকা পাচার করতেই এই সমস্ত ছোট সংস্থা খোলা হয়ে থাকতে পারে। সেই লক্ষ্যেই এ দিনের তল্লাশি।
একই লক্ষ্যে এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি ‘উইন রিয়েলকন’ নামে অন্য একটি অর্থলগ্নি সংস্থার বেশ কিছু অফিস-সহ তাদের কর্মী-এজেন্টদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল সিবিআইয়ের একাধিক দল। সেই সময়েও উত্তর ২৪ পরগনার একাধিক জায়গাতে তল্লাশি চালায় তারা। তবে ওই দিন বড়সড় সাফল্য পেয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। হাওড়ার সাঁতরাগাছি ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে সারদা রিয়েলটি সংস্থার প্রাক্তন ডিরেক্টর শিবনারায়ণ দাসকে গ্রেফতার করে তারা। শিবনারায়ণবাবু ‘সিলিকন’ নামে একটি অর্থলগ্নি সংস্থা খুলেছিলেন। তাঁকে সারদা রিয়েলটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়।