হাড়োয়া স্টেশনে অবরোধ আমানতকারীদের। ছবি: নির্মল বসু।
ভোটের মরসুমে ফের কাঠগড়ায় শাসক দল। এ বার চিট ফান্ড সংস্থাগুলিতে টাকা রেখে প্রতারিতদের মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত তারা। শুক্রবার সকাল থেকেই দফায় দফায় হাওড়া ও শিয়ালদহের বিভিন্ন শাখায় রেল অবরোধ শুরু করেন সারদা-সহ বিভিন্ন লগ্নি সংস্থার আমানতকারীরা। এই অবরোধের নেতৃত্ব দেয় চিটফান্ড সাফারার্স ইউনিটি ফোরাম। অবরোধের জেরে বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে লোকাল ও দূরপাল্লার বহু ট্রেন। ফলে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হয় নিত্যযাত্রীদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে ছুটে যান আরপিএফ ও রেলের আধিকারিকেরা। রেল সূত্রে খবর, অন্তত এক ঘণ্টা ধরে এই অবরোধ চলে। অন্য দিকে, এ দিন লগ্নি সংস্থার প্রতারিত আমানতকারীদের রেল অবরোধ তুলতে গড়িয়া স্টেশনে অবরোধকারীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী। প্রতারিত আমানতকারীদের বেধড়ক মারধর করারও অভিযোগ ওঠে। প্রহৃতেরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিভাস মুখোপাধ্যায়ের সামনেই দলীয় কর্মীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিভাসবাবু বলেন, “ঘটনার সময় আমি দূরে ছিলাম। সেখানেই শুনি আমাদের কয়েক জন ছেলেকে মারধর করা হচ্ছে। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি ও রেল চলাচল শুরু করতে সাহায্য করি।”
এ দিন সকাল ৭টা ৫৫মিনিট নাগাদ হাওড়া দক্ষিণ-পূর্ব শাখার মৌরীগ্রাম স্টেশনে অবরোধ শুরু করেন বিভিন্ন লগ্নি সংস্থার আমানতকারীরা। প্রতারিত আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন অবরোধকারীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সকাল ৮টা ৪০ মিনিট নাগাদ হাওড়া দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় অবরোধ উঠে যায়। অন্য দিকে, এ দিন ভোর থেকেই অবরোধ শুরু হয় শিয়ালদহ মেন, বনগাঁ, ডানকুনি ও দক্ষিণ শাখার বেশ কিছু স্টেশনে। তবে হাবড়া ও বনগাঁ শাখায় ১০ মিনিটের বেশি অবরোধ চলেনি বলেই দাবি রেল কর্তৃপক্ষের। রেল সূত্রে খবর, অবরোধের জেরে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য আটকে পড়ে ডাউন পুরী এক্সপ্রেস, ডাউন সমরসোতা এক্সপ্রেস, আপ আরণ্যক ও দুরন্ত এক্সপ্রেস। এ ছাড়াও দেরিতে চলে বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেন।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র এ দিন বলেন, ‘‘হাওড়া দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।” তবে বাকি স্টেশনগুলিতেও অবরোধ উঠে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।