বামেদের মিছিল। মঙ্গলবার বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি।
সারদা কেলেঙ্কারির জন্য সিপিএমের মিছিল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের দাবি তুললেন দলের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু।
আর এই সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে দ্রুত তদন্ত করে যাতে দোষীদের গ্রেফতার করা হয়, সেই দাবি জানাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে সময় চাইলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র।
গত ২৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি পাঠিয়ে সূর্যবাবু বলেছেন, যদি প্রধানমন্ত্রী ২১ থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে কোনও এক দিন সময় দেন তা হলে খুব ভাল হয়। ইউপিএ সরকারের আমলে সূর্যবাবুরা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে দেখা করে সারদা-সহ বিভিন্ন বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার দুর্নীতির ব্যাপারে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। মোদীকে লেখা চিঠিতে তা-ও উল্লেখ করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীকে গত এক বছর ধরে বিভিন্ন ব্যাপারে চিঠি লিখেও জবাব না পেয়ে সেই সব চিঠির সঙ্কলন ‘এ বার জবাব চাই’ প্রকাশ করে মঙ্গলবার সূর্যবাবু বলেন, “বিজেপি-র নেতা, মন্ত্রীরা সারদা নিয়ে যাঁদের বিরুদ্ধে আঙুল তুলছেন, তাঁরা কিন্তু সবাই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সারদায় দোষীদের গ্রেফতার করা হবে। ছ’মাস কেটে গেলেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে জেরা করা হল না! এক জন মন্ত্রীকেও গ্রেফতার করা হল না।” মোদী যাতে তাঁর প্রতিশ্রুতি পালন করেন, তাঁর সঙ্গে দেখা করে বাম পরিষদীয় দলের পক্ষ থেকে সে কথাই মনে করিয়ে দিতে চান সূর্যবাবু।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার মোদীর সঙ্গে দেখা করেছেন। আবার তিনিও মোদীর সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে কী বার্তা দিতে চাইছেন? সূর্যবাবু বলেন, “সারদা তদন্ত নিয়ে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন হচ্ছে না। এই বার্তাই দিতে চাইছি।” সিবিআই, সেবি, ইডি, এসএফআইও যে ক’টি সংস্থা সারদা নিয়ে তদন্ত করছে সবগুলিই কেন্দ্রের অধীন, তা জানিয়ে সূর্যবাবু বলেন, “সব সংস্থা একসঙ্গে কাজ করে দ্রুত তদন্ত শেষ করুক, এটাই আমাদের দাবি।”
মুখ্যমন্ত্রীকে জেরার দাবিতে এ দিন সন্ধ্যায় কলকাতা জেলা সিপিএমের পক্ষ থেকে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত মিছিল করেন সূর্যবাবুরা। মিছিলের শুরুতে উপস্থিত থাকলেও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য হাঁটেননি। বক্তৃতাও করেননি। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু মুখ্যমন্ত্রীকে শুধু জেরার দাবিতেই সন্তুষ্ট না থেকে প্রয়োজনে তাঁকে গ্রেফতারের দাবিও জানান। বিমানবাবু বলেন, “কে চোর, তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে পাঁচ জনের নাম নিয়েছিলেন, তার মধ্যে দু’জন জেলে। মুখ্যমন্ত্রী-সহ বাকি তিন জন দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অবিলম্বে তাঁদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রয়োজনে গ্রেফতার করতে হবে।” দার্জিলিংয়ের ডেলো বাংলোয় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের বৈঠক নিয়ে কেন সিবিআই এখনও তদন্ত করছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিমানবাবু। কী করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, পলাতক সুদীপ্ত সেন উত্তরে আছেন এই প্রশ্ন তুলে বিমানবাবু বলেন, “তা হলে কি মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সুদীপ্ত সেনকে কাশ্মীর হয়ে অন্যত্র পালিয়ে যেতে বলেছিলেন?”