শাসনের সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টারকে তাঁর নিজের বাড়িতে ঢোকার ব্যাপারে পুলিশকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া। তিনি নিজের বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন ওই সিপিএম নেতা। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া মন্তব্য করেন, যে কোনও নাগরিকেরই সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে তাঁর নিজের বাড়িতে ঢোকার।
হাইকোর্টের নির্দেশ জেনে মজিদ মাস্টার এ দিন আশঙ্কা করেন, পুলিশ হাইকোর্টের নির্দেশ মানবে না। তিনি বলেন, “অক্টোবর মাসে যখন বাড়ি ফিরি, সেই সময় তৃণমূল বাধা দেয়। পুলিশ সেই সময় উল্টে আমাকেই গ্রেফতার করে।”
এ দিন মামলার শুনানি শুরু হলে বিচারপতি পাথেরিয়া সরকারি আইনজীবী সুমন সেনগুপ্তের কাছে জানতে চান, মহম্মদ মজিদ আলি ওরফে মজিদ মাস্টারের বাড়িতে ঢোকার ব্যাপারে জেলা পুলিশকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়ে সরকারি আইনজীবী জানান, মজিদ আলি গত পাঁচ বছর তাঁর বাড়িতে নেই। বাড়িতে ঢোকার ব্যাপারে তিনি এই সময়ের মধ্যে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগও দায়ের করেননি।
বিচারপতি পাথেরিয়া সরকারি আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, “ওই ব্যক্তি এখন বাড়িতে আছেন, না নেই?” সরকারি আইনজীবী জানান, “বাড়িতে নেই।” মজিদ মাস্টারের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে অভিযোগ করেন, এক জন নাগরিক তাঁর বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না। প্রশাসনও সেই ব্যাপারে উদ্যোগী নয়। রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্ত আদালতে জানান, মজিদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে পুলিশ তার রিপোর্টে জানিয়েছে। তা শুনে বিচারপতি পাথেরিয়া জানান, কোনও নাগরিকের নিজের বাড়িতে ঢোকার ক্ষেত্রে একাধিক মামলা থাকা বাধা হতে পারে না।
দু’পক্ষের সওয়াল শুনে বিচারপতি পাথেরিয়া এ দিন নির্দেশ দেন, মজিদ মাস্টারকে জেলার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত ভাবে জানাতে হবে কবে তিনি নিজের বাড়িতে ঢুকতে চান। পুলিশ সেই অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। মজিদ যদি বাড়িতে থাকতে চেয়ে পুলিশি নিরাপত্তা চান, তা হলে তাঁকে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে নতুন করে আবেদন করতে হবে। বিচারপতি পাথেরিয়া আরও জানান, তাঁর এই নির্দেশ মজিদের দায়ের করা এই মামলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।