ভোট দিলেন সস্ত্রীক সচিন। ছবি: পিটিআই।
সকাল ৭টা ৪০। দুই রাজ্যে সবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। একটি আবেদন-বার্তা ভেসে উঠল সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট টুইটার-এর স্ক্রিনে। সেই বার্তায় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোটটি দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে হরিয়ানা এবং মহারাষ্ট্রের মানুষের কাছে। শুধু তাই নয়, যুব সম্প্রদায়ই পথ দেখাবে বলে তাঁদের রেকর্ড ভোট নিশ্চিত করতে ওই একই বার্তায় আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুই রাজ্যে তিনিই বিজেপি-র একমাত্র মুখ। কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করে নয়, মহারাষ্ট্র-হরিয়ানায় বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনে লড়ছে মোদী-ইমেজের উপর ভরসা করেই।
বুধবার সকালে মোদীর এই বার্তার প্রায় সাড়ে ১৬ ঘণ্টা আগে টুইটারে লেখা হয়েছিল, ‘আগামিকাল এক জন দায়িত্বশীল নাগরিক হওয়ার দিন। আপনার ভোটটি দিন।’ লিখেছিলেন, মুম্বইয়ের ভূমিপুত্র সচিন তেন্ডুলকর। ক্রিকেটের এই ‘ঈশ্বর’ যদিও বর্তমানে রাজ্যসভার সাংসদ। সংসদে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। এ দিন সকালেই ভোট দিয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের দৌলতে সেই ছবিও ভেসে উঠেছে টুইটারে।
ভোট দেওয়ার পর অভিনেত্রী রেখা।
রাজ্যসভার আরও দুই তারকা সাংসদ এ দিন সকাল সকাল ভোট দিয়েছেন। রেখা এবং জয়া। টুইটারে সংবাদ সংস্থার পোস্ট করা ছবিতে দেখা গিয়েছে, ভোট দেওয়ার পর ‘উমরাওজান’-এর কালির চিহ্নওয়ালা আঙুল। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। পাশের ছবিতেই দু’হাত ওষ্ঠে ছুঁইয়ে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন। সাদা পোশাক, চোখে সানগ্লাস, মুখে স্মিত হাসি— সকালেই ছেলে অভিষেককে নিয়ে ভোট দিতে গিয়েছিলেন অমিতাভ-জায়া জয়া বচ্চন। ভোট দিয়েছেন সলমন খান। পাশাপাশি তিনি তাঁর ভক্তদের ভোট দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। ভোট-মেজাজে টুইটারে ছবি পোস্ট করেছেন অভিনেতা বোমান ইরানি।
সকালে ভোট দিতে গিয়ে অভিনেতা গুলশন গ্রোভারের সঙ্গে দেখা হয় অভিনেত্রী পূজা বেদীর। সঙ্গে সঙ্গেই টুইট করলেন পূজা। তিনি লিখছেন, ‘বুথেই দেখা গুলশনের সঙ্গে। ফিল্মের খারাপ লোকটি বাস্তবে একটি ভাল কাজ করল।’ এর পরেই তাঁর আবেদন, ‘ভোট দিন।’ ভোট দিয়েছেন অভিনেতা অনুপম খের-ও। তার পর পোস্ট করেছেন স্ক্রিন জোড়া একটি আঙুলের ছবি, যার ডগায় রয়েছে নীল কালির তিলক কাটা। তলায় লেখা, ‘ভোট দিলাম।’ প্রায় একই ছবি পোস্ট করেছেন অভিনেতা রীতেশ দেশমুখ। তবে আঙুলের পাশে রয়েছে তাঁর মুখ। ভোট দিয়েছেন শিল্পপতি অনিল অম্বানীও।
ভোটের মেজাজে সপরিবার বোমান ইরানি
দিয়েছি: রিতেশ তিওয়ারি
এ তো গেল ভোটদাতাদের কথা। ভোটপ্রার্থী দলগুলির খবর কী?
বলিউডের পাশে পিছিয়ে নেই রাজনীতিবিদরাও। সকাল সকাল ভোট দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা। শরদ পওয়ার, অজিত পওয়ার, সস্ত্রীক কৃপাশঙ্কর সিংহ, সুপ্রিয়া সুলে, দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, রাজ ঠাকরে, উদ্ধব ঠাকরে, পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ, পঙ্কজা মুন্ডে, বিনোদ তৌড়ে প্রমুখ। এ বারের পঞ্চমুখী নির্বাচনে শেষ অবধি কার হাতে রাজ্যের শাসনদণ্ড উঠবে তা নিয়ে সংশয়ে সব পক্ষই। নিজেদের মতো করে ঘুঁটি সাজিয়েছে বিজেপি, কংগ্রেস, এনসিপি, শিবসেনা বা মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা। সংশয়ের মাঝেই এক ধাপ এগিয়ে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে এ দিন দলীয় মুখপত্রে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “চা-ওয়ালা হিসেবে জীবন শুরু করে এক জন সাধারণ মানুষ নরেন্দ্র মোদী যদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, তবে আমিও মুখ্যমন্ত্রী হতে পারি।” উদ্ধব পরিবর্তনের কথা বলছেন। একই সুর বিজেপি-রও। সম্প্রতি প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গোপীনাথ মুন্ডের কন্যা পঙ্কজা বলছেন, “এ রাজ্যে পরিবর্তন ছিল আমার বাবা স্বপ্ন। মানুষও পরিবর্তন চাইছে। কাজেই সংখ্যাগরিষ্ট দল হিসেবে বিজেপি জিতছে।”
২৮৮ আসনের এই বিধানসভা শেষ অবধি শাসন করবে কোন দল? একক ভাবে সরকার গঠিত হবে? না কি ফের জোট-রাজনীতির দ্বারস্থ হবে মহারাষ্ট্র? সব প্রশ্নের উত্তর আপাতত ইভিএম-এর স্মৃতিতে।
সচিন তেন্ডুলকর
নরেন্দ্র মোদী
পূজা বেদী
টুইটার থেকে নেওয়া ছবি।
ভোটের আরও ছবি...