ছাত্রীরা লাইব্রেরিতে ঢুকলে ছাত্ররা বেশি পরিমাণে ‘আকর্ষিত’ হবে, এই কারণ দেখিযে স্নাতকস্তরের ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লাইব্রেরিতে ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (এএমইউ)। এই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসার পরই প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে দেশের বিভিন্ন সংগঠন। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা চেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লাইব্রেরিতে মেয়েদের উপস্থিতি ছেলেদের বেশি পরিমাণে আকর্ষিত করছে এবং এতে লাইব্রেরির স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে— এই অজুহাতে স্নাতকস্তরের ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লাইব্রেরিতে না ঢুকতে নির্দেশ জারি করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্দেশিকায় লাইব্রেরির জায়গার অভাবের কথা বলে জানানো হয়, ছাত্রীরা এলে চার গুণ ছাত্র আসবে। নির্দেশিকার সমর্থনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জামিরউদ্দিন সিদ্দিকি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লাইব্রেরিতে ছাত্রীদের প্রবেশাধিকার কোনও দিনই ছিল না। ১৯৬০ সাল থেকেই মৌলানা আজাদ লাইব্রেরিতে ঢুকতে পারেন না স্নাতক স্তরের ছাত্রীরা। এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক স্তরের ছাত্রীর সংখ্যা চার হাজার। সবাই লাইব্রেরিতে এলে দাঁড়ানোর জায়গাও মিলবে না।”
বিভিন্ন মহল থেকে এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধ মত আসতে থাকায় উপাচার্য মনে করিয়ে দেন, স্নাতকোত্তরের ছাত্রীরা যে কোনও সময়ে লাইব্রেরিতে আসতে পারেন। নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অসম্মান করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে নিষেধাজ্ঞার কথা প্রকাশ্যে আসার পরই প্রতিবাদ হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে। কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা চেয়ে মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি বলেছেন, “কিছু কিছু ঘটনা মনকে খুব আঘাত করে। এটা এমনই এক ঘটনা। সমগ্র নারী জাতির কাছে এই ধরনের নির্দেশ অপমানজনক।” নির্দেশের প্রতিবাদ করেছেন সংখ্যালঘু উন্নয়নমন্ত্রী নাজমা হেপতুল্লা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভিও। আইনত এই ধরনের নির্দেশ দেওয়া যায় কি না তা জানতে চেয়েছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন ললিতা কুমারমঙ্গলম। দেশের বিভিন্ন মহিলা সংগঠনও এই নির্দেশের প্রতিবাদ করেছে।