বেআইনি অনুপ্রবেশকারী অভিযোগে বীরভূমের বোলপুর, নদিয়ার ধানতলা এবং উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৮ জনকে। শুক্রবার গ্রেফতার হওয়া এদের সকলকেই শনিবার আদালতে তোলা হয়। এদের মধ্যে দু’জনকে পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাদের সঙ্গে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের কোনও যোগ আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকে বিজেপি-সহ অন্য দলগুলি পশ্চিমবঙ্গ-সহ সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে সরব ছিল। সম্প্রতি বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের পর গোয়েন্দাদের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গি যোগ ছিল। এমনকী, ওই ঘটনায় নিহত শাকিল আহমেদ বছর সাতেক আগে অনুপ্রবেশকারী হিসেবেই এ দেশে ঢুকেছিল বলে গোয়েন্দাদের ধারণা। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে রাজ্য পুলিশ প্রশাসন। সীমান্তবর্তী এলাকায় শুরু হয় তল্লাশি। বর্ধমানের মতো শহরে বিস্ফোরণ হওয়ায় সীমান্ত লাগোয়া জেলাগুলির পার্শ্ববর্তী এলাকাতেও অনুপ্রবেশ বিষয়ে তত্পর হয় পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বোলপুরের দর্জিপাড়ায় একটি ক্লাবের সদস্যেরা ওই এলাকায় ভাড়া থাকা ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিতে শুরু করে। সেই সময় তিন জনের দেওয়া তথ্যে ধোঁয়াশা দেখা দেওয়ায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। বোলপুর থানার পুলিশ ওই তিন জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। নথিপত্র দেখার পর দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণ তাদের দেখাতে পারেনি। ধৃত ওমর ফারুক মণ্ডলকে এ দিন বোলপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
অন্য দিকে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রানাঘাট থানার পুলিশ হানা দেয় ধানতলা বাজার এলাকায়। সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় খালেদ মণ্ডল এবং রেহেনা মণ্ডল নামের এক দম্পতিকে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দম্পতি জাল ভোটার কার্ড তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিল। পুলিশি অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে দু’টি জাল ভোটার কার্ড উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের দাবি, ধৃত খালেদ বাংলাদেশের বাসিন্দা। অনুপ্রবেশকারী হিসেবেই সে ভারতে ঢুকেছিল বলে অভিযোগ। তবে তার স্ত্রী রেহেনা এ দেশের নাগরিক বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতদের এ দিন রানাঘাট মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
উত্তর ২৪ পরগনা থেকেও শুক্রবার বেআইনি অনুপ্রবেশকারী অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৫ জনকে। পুলিশ সূত্রে খবর, স্বরূপনগর থেকে ৬ জন ও বসিরহাট শহর থেকে ২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের প্রত্যেকেই বাংলাদেশি বলে পুলিশের দাবি। তাদের এ দিন বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের প্রত্যেককেই ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।