হাতির হানা রুখতে ফলন্ত জমি ঘিরে রাখা হয়েছিল বিদ্যুৎবাহী তার দিয়ে। সেই তারে পা জড়িয়েই তড়িদাহত হয়ে মারা গিয়েছে দু’টি পূর্ণবয়স্ক হাতি। উত্তরবঙ্গের আনাচকানাচে এ ঘটনা নতুন নয়। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জমিতে ফলন হলেই হাতির দল জঙ্গল থেকে মাঝেমধ্যেই হানা দেয় গ্রামে। আর হস্তিযূথের হানা থেকে ফসল বাঁচাতে বেআইনি ভাবে বিদ্যুতের তার দিয়ে জমি ঘিরে রাখেন গ্রামবাসীদের অনেকেই। একটি প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠনের হিসেব বলছে, গত তিন বছরে উত্তরবঙ্গের চার জেলায় এ ভাবেই তড়িদাহত হয়ে মারা গিয়েছে ১৭টি হাতি।
নকশালবাড়ির কলাবাড়ির জঙ্গল লাগোয়া রকমজোত গ্রামেও হাতির হানা থেকে ফসল বাঁচাতে হাই টেনশন লাইন থেকে হুকিং করা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছেন বনকর্তারা। সেই তারে পা জড়িয়েই মারা গিয়েছে একটি পূর্ণবয়স্ক দাঁতাল-সব দু’টি হাতি। গ্রামবাসীরা জানান, পনেরোটি হাতির একটি দল গত কয়েক দিন ধরেই এলাকায় হানা দিচ্ছিল। সম্ভত সে কারণেই ওই তার দিয়ে নিজের জমি ঘিরে রেখেছিলেন সঞ্জয় লামা ও বিনোদ তামাঙ্গ। তবে ঘটনার পর থেকেই তাঁদের কোনও খোঁজ নেই। এই নিয়ে গত তিন দিনে ওই এলাকাতেই ৩টি হাতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হল বলে জানা গিয়েছে।
কার্শিয়াং ডিভিশনের ডিএফও বুদ্ধরাজ শেওয়া বলেন, “ওই দু’জনের জমিতে তার ছড়িয়ে ছিল। তবে সেই তার তাঁরা নিজেরা বিছিয়ে রেখেছিলেন না ছিঁড়ে পড়ে গিয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” যা শুনে বেজায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমী সংগঠনগুলি। এমনই এক সংগঠন ন্যাফ-এর মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “যাঁরা তার বিছিয়ে রেখেছেন তাঁরা গুরুতর অন্যায় করেছেন। অথচ বন দফতর সে ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিয়ে ব্যপারটা নিয়ে টালবাহানা করছে।” বন দফতরের পক্ষ থেকে অবশ্য এ ব্যাপারে মামলা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের নকশালবাড়ির ইঞ্জিনিয়ার সাগর বসু বলেন, “আমরা বন দফতরের কাছ থেকে লোহার তার পেয়েছি। তবে তাতে বিদ্যুৎ সংযোগ করা হয়েছিল কি না তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত নই। ময়নাতদন্তের পরই তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।”