জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে বাস। ছবি: এএফপি।
ক্রমশ বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে কাশ্মীরে। শনিবার সকালে পুলওয়ামা জেলায় ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ চালানোর সময়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সেনাবাহিনীর একটি নৌকা। ঝিলমের তীব্র স্রোতে উল্টে যায় সেটি। নৌকায় থাকা সেনাকর্মীদের ১১ জন কোনও রকমে সাঁতরে প্রাণ বাঁচাতে পারলেও আটকে যান ৯ জওয়ান। সেনা সূত্রে খবর, তাঁদের উদ্ধারে এলাকায় দু’টি হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে। আটক জওয়ানদের মধ্যে ৭ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এখনও দুই সেনা আটকে রয়েছেন। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর এক আধিকারিক। অন্য দিকে, বন্যায় এখনও পর্যন্ত ১২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। সেনাবাহিনীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত বছরে উত্তরাখণ্ডের বন্যার থেকেও এ বার ভয়াবহ অবস্থা ভূস্বর্গের। পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামানো হয়েছে ৬০ কোম্পানি সেনা। এখনও পর্যন্ত ৫ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। উপত্যকা জুড়ে অনেকগুলি অস্থায়ী শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অন্য দিকে, ঝিলমের পর বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে সিন্ধু। প্রশাসনের তরফে সিন্ধু তীরবর্তী গ্রামগুলিতে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গান্ডেরওয়ালের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, বেশ কিছু জায়গায় মেঘ ভেঙে বৃষ্টি হওয়ায় বেড়ে গিয়েছে সিন্ধুর জলস্তর। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে গত ৫ দিনের নাগাড়ে বৃষ্টি। কঙ্গন, ওয়েই, শাদিপোরা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। গান্ডেরওয়াল শহরের বাসিন্দাদেরও বলা হয়েছে সতর্ক থাকতে। বৃষ্টি ও হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে বহু সেতু এবং রাস্তা। জায়গায় জায়গায় ভেসে গিয়েছে শ্রীনগর-লেহ্ জাতীয় সড়ক। এ দিন সকালে মাটি ধসে উধমপুরে ভেঙে পড়ে খান দু’য়েক বাড়ি। মারা গিয়েছেন অন্তত সাত জন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে দু’জনকে।
শনিবার রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি দেখতে আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। এ দিন সকালে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। ওমর নিজেই তাঁকে শ্রীনগরের পরিস্থিতি ঘুরে দেখান। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিকে ছ’দশকের মধ্যে ভয়ঙ্করতম বন্যা আখ্যা দিয়ে কেন্দ্রের তরফ থেকে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।