এনআরএসে পিটিয়ে খুনে ধৃত ডাক্তারি ছাত্র পুলিশি হেফাজতে

কোরপান শাহ খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ডাক্তারির ছাত্র জসিমুদ্দিনকে আট দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। বুধবার দুপুরে তাঁকে শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ওই নির্দেশ দেন। এই খুনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৫ দিনে পুলিশ নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের বেশ কয়েক জন ছাত্রকে ডেকে পাঠিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ১৮:০০
Share:

আদালত চত্বরে অভিযুক্ত জসিমুদ্দিন।—নিজস্ব চিত্র।

কোরপান শাহ খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ডাক্তারির ছাত্র জসিমুদ্দিনকে আট দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। বুধবার দুপুরে তাঁকে শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হলে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ওই নির্দেশ দেন।

Advertisement

এই খুনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৫ দিনে পুলিশ নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের বেশ কয়েক জন ছাত্রকে ডেকে পাঠিয়েছে। মঙ্গলবার সে কারণেই লালবাজারে ডেকে পাঠানো হয় জসিমুদ্দিনকে। তিনি ওই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। মালদহ জেলার চাঁচলের গালিমপুরের ছেলে জসিমুদ্দিন হস্টেলে থেকেই পড়াশোনা করেন। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে অনেক অসঙ্গতি থাকায় এন্টালি থানার পুলিশ রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাকে গ্রেফতার করে।

তিনি কী জানিয়েছিলেন পুলিশকে?

Advertisement

জসিমুদ্দিন পুলিশের কাছে দাবি করেন, ওই দিন রাতে হস্টেলের ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎই হইহট্টগোল শুনে ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। এর পর ছাদে উঠে তিনি দেখেন, দড়ি বাঁধা অবস্থায় সেখানে এক জন পড়ে রয়েছে। নিজের মোবাইলটিও তিনি ছাদের রেলিঙের উপর দেখতে পান। জসিমুদ্দিন জানান, মোবাইলটি রেলিং থেকে তুলে নিয়ে তিনি নীচের ঘরে ফিরে আসেন। তার পর ঘুমিয়েও পড়েন। পুলিশের অভিযোগ, প্রথম থেকেই তিনি তদন্তকারীদের ভুল পথে চালিত করছিলেন। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ১৬ নভেম্বর সকালে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে ছেলেদের হস্টেল থেকে একটি দেহ উদ্ধার হয়। পরের দিন সংবাদমাধ্যমে সেই ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর জানা যায় ওই দেহ কোরপান শেখ নামের এক মানসিক প্রতিবন্ধী যুবকের। ১৮ তারিখ উলুবেড়িয়া থেকে এসে তাঁর পরিবারের লোকজন দেহ শনাক্ত করেন। ওই দিন সন্ধ্যায় তাঁর পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেয় পুলিশ। উলুবেড়িয়া থানার খৈজুড়ি গ্রামের শাহ পাড়ার কোরপান শেখের খুনের ঘটনায় এর পর পথে নামেন মানুষজন। শহরের পথে সেই প্রতিবাদে সামিল হন তাঁর স্ত্রী-ও। এমনকী, প্রতিবন্ধী মানুষরাও রাজপথে নেমে প্রতিবাদ জানান। সেই প্রতিবাদ মিছিলে যদিও পুলিশের লাঠি চলে বলে অভিযোগ। ভেঙে দেওয়া হয় তাঁদের একমাত্র সহায়-সম্বল হুইলচেয়ার-ও।

পুলিশ প্রথম থেকেই কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করছিল। এমনকী, ওই হস্টেলে কারা থাকেন, সেই তালিকাও দেওয়া হয়নি পুলিশকে। কলেজের অধ্যক্ষা মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্রদের আড়াল করার অভিযোগ ওঠে। যদিও পরের দিকে বেশ কয়েক জনের নাম জোগাড় করতে পারে পুলিশ। সেই তালিকা থেকেই এন্টালি থানা বা লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। কিন্তু কোরপান খুনের এক মাস পরে এই প্রথম কাউকে গ্রেফতার করল পুলিশ। জসিমুদ্দিনকে জেরা করে অন্য অভিযুক্তদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে পুলিশের আশা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement