লুকাকুর পাস থেকেই অতিরিক্ত সময়ের তিন মিনিটের মাথায় গোল করেন ব্রুইন।
প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে নামার আগে কি কোনও সুপার হিরোর ফিল্ম দেখে এসেছিলেন আমেরিকার গোলরক্ষক টিম হাওয়ার্ড? না কি বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জেতার জন্য মার্কিনি গোলপোস্টের সামনে কোনও অদৃশ্য ‘শিল্ড’ তৈরি করে দিয়েছিল নাসা বা পেন্টাগন? মঙ্গলবার সালভাদরে বেলজিয়ামকে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পাকা করতে অপেক্ষা করতে হল ১২০ মিনিট। মোট ৩৯ বার মার্কিনি ডিফেন্স ভাঙলেও প্রায় প্রত্যেক বারই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে হ্যাজার্ড-ফেলাইনিদের। সৌজন্যে গোলরক্ষক টিম হাওয়ার্ড। জীবনের সেরা ম্যাচ খেলে বেলজিয়ামকে ৯০ মিনিট আটকে রাখেন তিনি। তবে দিনের শেষে খালি হাতেই ফিরতে হয় আমেরিকাকে। ২-১ গোলে জিতে ব্রাসিলিয়া রওনা হল বেলজিয়াম।
খেলার প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণ শুরু করে বেলজিয়াম। ডি ব্রুইনের পাস থেকে ওরিগির গোলমুখী শট পা দিয়ে আটকান হাওয়ার্ড। সেই শুরু। এর পর সারা ম্যাচে সব সময় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে তাঁকে। প্রথমার্ধেই হ্যাজার্ড-ব্রুইনদের খান তিনেক নিশ্চিত গোল আটকান তিনি। ৩২ মিনিটের মাথায় জনসনের জায়গায় ইয়েডিনকে নামান ক্লিন্সম্যান। কিছুটা সচল হয় আমেরিকার ডান দিক। এ দিন বেলজিয়াম মাঝমাঠে স্টিভন ডেফো-র অভাব টের পেতে দেননি ফেলাইনিরা।
জুলিয়ন গ্রিনের নেতৃত্বে জ্বলে ওঠে আমেরিকা।
ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হলেন টিম হাওয়ার্ড।
গোলশূন্য ভাবে প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় বেলজিয়াম। এবং আরও তীব্র ভাবে সেই আক্রমণ প্রতিহত করতে থাকেন হাওয়ার্ড। কখনও হ্যাজার্ড, কখনও ওরিগি, কখনও ব্রুইন— হাওয়ার্ডের সামনে অসহায় লাগছিল সবাইকেই। নির্ধারিত সময়ে কোনও গোল না হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেই সময়ে ক্লান্ত ওরিগির জায়গায় লুকাকুকে নামান মার্ক উইলমটস। বদলে যায় খেলার রং। লুকাকুর পাস থেকেই অতিরিক্ত সময়ের তিন মিনিটের মাথায় গোল করেন ব্রুইন। দশ মিনিট পরে দলের দ্বিতীয় গোল করেন লুকাকু। দু’গোলে পিছিয়ে পড়ে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের একেবারে শেষে দলের তরুণতম ফরোয়ার্ড জুলিয়ন গ্রিনকে নামান ক্লিন্সম্যান। এ বারে চমক দেখানোর পালা আমেরিকার। তরুণ গ্রিনের নেতৃত্বে জ্বলে ওঠে আমেরিকা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই অসামান্য ভলি থেকে গোল করেন গ্রিন। ম্যাচের একেবারে শেষে ডেম্পসির একটি নিশ্চিত গোল বাঁচান কুরটিস।
ম্যাচ হারলেও দু’টি সান্ত্বনা পুরস্কার পায় আমেরিকা। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হয়েছেন টিম হাওয়ার্ড। এবং এ বারের বিশ্বকাপে কনিষ্ঠতম হিসাবে গোল করে নজির গড়েন জুলিয়ন গ্রিন।
ছবি: গেটি ইমেজেস।