—ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপরে সংশোধনী প্রস্তাবে বিরোধী ঐক্যের কাছে পরাজয়ের পরে ফের বাম-তৃণমূল আঁতাঁতের অভিযোগ তুলল বিজেপি। পাল্টা আক্রমণে গেল বামফ্রন্টও।
তাদের হারাতেই কৌশলে সিপিএম-তৃণমূল ভোটাভুটিতে একজোট হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তাঁর বক্তব্য, “বহু দিন ধরেই সিপিএম-তৃণমূল আঁতাঁতের কথা বলছি। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় একে অপরকে সমর্থন করে ওই দু’দল তাদের আসল চেহারা সামনে নিয়ে এসেছে। সিপিএম এবং তৃণমূল রাজ্যে নিজেদের মধ্যে যে লড়াই করে, তা আদতে মানুষকে বোকা বানানোর কৌশল ছাড়া আর কিছু নয়!” রাজ্যসভায় সংখ্যার নিরিখে বিজেপি-র পিছিয়ে থাকাকে কাজে লাগাতেই সিপিএম-তৃণমূলের এই ‘সখ্য’ বলে রাহুলবাবুর কটাক্ষ। তাঁর আরও দাবি, এ রাজ্যেরই কিছু সাংসদ বাঙালি রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপরে সংশোধনী এনে এবং ভোটাভুটি করে নাকি রাষ্ট্রপতির অপমান করেছেন!
বিজেপি-র অভিযোগ নস্যাৎ করে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু পাল্টা বলেছেন, “এ সব অযৌক্তিক কথা! কালো টাকা ফেরানোর প্রসঙ্গে সরকারি ব্যর্থতা নিয়ে দুই দল একসঙ্গে ভোট দিয়েছে। সংসদের ভিতরে অনেক সময়েই এমন হয়। অন্য বিরোধী দলগুলিও তো এ ব্যাপারে একসঙ্গে ভোট দিয়েছে!” এ ধরনের অভিযোগ তুলে বিজেপি দৃষ্টি ঘোরাতে চায় বলে বিমানবাবুর দাবি। রাজ্যসভায় সংশোধনী প্রস্তাব এনে শাসক দলকে পরাস্ত করার মূল কারিগর ছিলেন সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁরও যুক্তি, সিপিএমের আনা প্রস্তাবে তৃণমূল-সহ অন্য বিরোধীরা একযোগে ভোট দিয়েছে। শাসক পক্ষ তাদের ‘ঔদ্ধত্য’-র জবাব পেয়েছে! এতে অন্য রকম আঁতাঁতের প্রশ্ন আসছে কোথায়? বরং, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই তাঁর ভাষণে বামেদের হঠাৎ আক্রমণ করে তৃণমূলের প্রতি নরম মনোভাব দেখিয়েছেন।
সংসদে মোদী যে ভাবে এ রাজ্যের দুর্দশার জন্য প্রায় সাড়ে তিন দশকের বাম শাসনকে দায়ী করে তৃণমূলের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন, তার প্রেক্ষিতে বিমানবাবুরও তির্যক মন্তব্য, “বামফ্রন্ট ১৯৭৭ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগে পশ্চিমবঙ্গে শিল্প কী অবস্থায় ছিল, আর বাম আমলে নয়ের দশকে কী ভাবে এ রাজ্যে বিনিয়োগ শুরু হয়েছিল, তা ওঁর জানা উচিত ছিল!” বিমানবাবু পরিসংখ্যান দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, “আগে গ্রামবাংলায় শিল্পের চাহিদা ছিল ৮ লক্ষ কোটি টাকা। আটের দশকের পরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০-২২ লক্ষ কোটি টাকা। তার মানে কি বামেদের সময়ে রাজ্যের অবস্থা খারাপ হয়েছিল?”