রাজনৈতিক নেতাদের ছবি মুড়ি-মুড়কির মতো আর সরকারি বিজ্ঞাপনে দেখা যাবে না। বুধবার এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে প্রচারিত কোনও সরকারি বিজ্ঞাপনে প্রধানমন্ত্রী ছাড়া অন্য কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছবি প্রকাশ করা যাবে না। প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ছবি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, সব ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুমতি নিতে হবে।
অভিযোগ, সরকারি কোষাগারের টাকায় প্রচারিত বিজ্ঞাপন থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলেন শাসক দলের নেতানেত্রীরা। যে দল যেখানে ক্ষমতায় থাকে, তারা তাদের মতো করে সরকারি প্রকল্পকে হাতিয়ার করে বিজ্ঞাপন করে। এমনকী, সেই দলের শীর্ষ নেতানেত্রীদের ছবি প্রকাশ করে তাঁর কর্মমাহাত্ম্য প্রচারের চেষ্টা করা হয় সরকারি টাকায়। এই বিষয়টিকে সামনে রেখে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করে একটি বেসরকারি সংস্থা।
ওই সংস্থার পক্ষে প্রাক্তন আপ নেতা তথা আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ মামলাটি করেন। করদাতাদের টাকায় নেতানেত্রীদের রাজনৈতিক ফায়দা তোলা আটকাতে তিনি আদালতের কাছে নতুন আইন প্রণয়নের জন্য আবেদন জানান। এ দিন তারই প্রেক্ষিতে ওই নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর বেঞ্চ। পাশাপাশি, জনস্বার্থ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে এই নিয়ম-নীতি সঠিক ভাবে মানা হচ্ছে কি না, তার নজরদারিতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
ব্যক্তির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সরকারি বিজ্ঞাপনে ছবি ব্যবহারের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে এ দিন মন্তব্য করে আদালত। বিচারপতিদের মতে, সরকারি বিজ্ঞাপনের বয়ান সব সময় বর্ণনামূলক হওয়া উচিত এবং তা যেন কখনওই শাসক দলের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ না করে।
সরকারের যুক্তি ছিল, নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে শীর্ষ আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কিন্তু, বিচারপতি গগৈ-এর বেঞ্চ স্পষ্ট ভাবে এ দিন জানিয়ে দিয়েছে, কোনও বিষয়ে স্পষ্ট নীতি এবং আইন না থাকলে সুপ্রিম কোর্ট সে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে।