পুরসভার ভোট নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত ভোটের নির্ঘণ্টের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
সোমবারই হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। এ দিন শুনানিতে রাজ্য সরকারের হয়ে আদালতে হাজির ছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। কিন্তু কমিশনের পক্ষ থেকে কেউ হাজির না থাকায় পরবর্তী শুনানির দিন স্থির করা হয় আগামী ২৫ মে। সেই সঙ্গে আদালতে গরহাজির থাকার জন্য কমিশনের বিরুদ্ধে নোটিসও জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করার কথা ছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু এ দিন সুপ্রিম কোর্ট পুরভোটের দিন ক্ষণের উপর স্থিতাবস্থা জারি করার ফলে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে না বলে কমিশন সূত্রে খবর। পাশাপাশি, ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে এ দিন যে প্রশাসনিক বৈঠকের কথা ছিল তা-ও বাতিল হয়ে যায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর।
গত ১৫ মে হাইকোর্ট সাতটি পুরসভার ভোট আগামী ১৬ জুনের মধ্যে করানোর নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকারকে। কিন্তু ওই পুরসভাগুলির সংযুক্তিকরণের কাজ বাকি রয়েছে বলে যুক্তি দেখানো হয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এমনকী, নির্ধারিত দিনে ভোট করানো সম্ভব হবে না বলেও হাইকোর্টে আর্জি জানায় রাজ্য সরকার। কিন্তু তাদের সেই আর্জি খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। এর পরই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। আইনজীবী কপিল সিব্বল রাজ্য সরকারের হয়ে সওয়াল করেন। সুপ্রিম কোর্টে যখন পুরভোট নিয়ে মামলা চলছে ঠিক তখনই নাটকীয় ভাবে ভোটের দিন ঘোষণা করে দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়। কমিশন সূত্রে জানানো হয়, ১৪ জুন ভোট হবে। গণনা হবে ১৬ জুন। এই ঘোষণার পরই কমিশনের সঙ্গে কার্যত সংঘাতে যায় রাজ্য। শাসকদলের একাংশের মতে, রাজ্যকে উপেক্ষা করেই কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভোট পিছনো নিয়ে কমিশন ও রাজ্য সরকারের মধ্যে যে ‘টানাপড়েন’-এর আবহ তৈরি হয়েছে, বিরোধীরা সেটিকে দ্বৈরথের ‘গট-আপ গেম’ বলে কটাক্ষ করেছে। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার কর্মযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছে তৃণমূল সরকার।” পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অবশ্য বিরোধীদের এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।