সারদা-তদন্তে এ বার ডেকে পাঠানো হল প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্রকে। সূত্রের খবর, আগামী ২১ নভেম্বর তাঁকে দেখা করতে বলেছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। সিবিআইয়ের একটি সূত্রের খবর, তদন্তের স্বার্থে আগামী দিনে যে প্রভাবশালীদের ডেকে পাঠানো হতে পারে সেই তালিকায় সোমেনবাবুর নাম ছিল।
যদিও বুধবার সন্ধ্যায় সোমেনবাবু বলেন, “সিবিআই এখনও অবধি আমাকে ডাকেনি। আমি সকাল ১০টায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছি। সওয়া ৩টেয় প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে এসেছি। আমি দফায় দফায় আমার মেল চেক করছি। দেখছি, সিবিআই থেকে কোনও মেল এখনও পর্যন্ত আসেনি। বাড়িতেও স্ত্রীকে ফোন করে জানছি যে কোনও চিঠি এসেছে কি না। বাড়িতে কোনও চিঠি আসেনি। সিবিআই ডাকলে নিশ্চয় যাব। না ডাকলে কী করে যাব? আমরাই তো সিবিআই চেয়েছি। পার্লামেন্টের লবিতে দাঁড়িয়ে আমিই প্রথম সিবিআই দাবি করেছিলাম। আমাকে ডাকলে খুশি হব। কারণ, জানতে পারব সিবিআই নিয়ে মস্করা হচ্ছে না সিরিয়াসলি কাজ হচ্ছে।”
তাঁকে সিবিআই ডাকবে কেন? সোমেনবাবুর জবাব: “আমি তো বুঝতে পারছি না।” তবে ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার ওরফে নিতুর ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও করতে পারে সিবিআই।
২০১১ সালে তৎকালীন তৃণমূল সাংসদ সোমেনবাবু প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। ঘটনাচক্রে তিনি যে লোকসভার সাংসদ ছিলেন সেই ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের বিষ্ণুপুর থেকেই যাত্রা শুরু করেছিল সারদা গোষ্ঠী। সেই সময় ওই এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের বর্তমান পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রকেও সম্প্রতি ডেকে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় এই গোয়েন্দা সংস্থা।
সারদা-কাণ্ডের তদন্তে নেমে সিবিআই ইতিমধ্যেই যাঁদের ডেকে পাঠিয়েছে তাঁদের মধ্যে সোমেন ঘনিষ্ঠ বাদল ভট্টাচার্যও ছিলেন। কিছু দিন আগে তাঁকে সিবিআই দফতরে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বাদলবাবুর ছেলে এক সময় সারদা গোষ্ঠীতে কাজ করতেন। এমনকী, সোমেনবাবু যে পুজোর সঙ্গে জড়িত, সেখানে সারদা গোষ্ঠীর বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিষয়টিও প্রকাশ্যে আসে। অন্য দিকে, সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার সন্দেহে এখনও পর্যন্ত যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ধৃত ইস্টবেঙ্গল কর্তা নিতুও সোমেন ঘনিষ্ঠ। তবে কি বাদলবাবু অথবা নিতুকে জেরা করে এমন কিছু পাওয়া গিয়েছে, যার জেরে সোমেনবাবুকে ডেকে পাঠানো হল? নাকি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তিনি যে বিষয়গুলি তুলে ধরেছিলেন সেগুলোই বিষদে জানতে তাঁকে ডেকে পাঠানো হল? আপাতত এই সব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে।