অনুব্রত মণ্ডলের হুমকি দেওয়ার সঙ্গে সাগর ঘোষের খুনের ঘটনার সরাসরি কোনও যোগসূত্র পায়নি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। সেই কারণে অনুব্রবাবুকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি বা তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়নি। পাড়ুই-হত্যা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডনের এজলাসে হাজির হয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি জিএমপি রাজাশেখর রেড্ডি এ কথাই জানিয়েছেন। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ডিজি-র কি কখনও মনে হয়েছিল যে অনুব্রতবাবুকে গ্রেফতার করা দরকার? এই প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, এটি একটি অন্য বিষয়। তিনি পুলিশ সুপারকে দ্রুত তদন্ত শেষ করতে বলেছেন। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ডিজি কি মনে করেন না যে দু’টি ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র আছে? তিনি দু’টিকে আলাদা করছেন কেন? ডিজি জানান, একটি ঘটনার চার-পাঁচ দিন পরে অন্য ঘটনাটি ঘটেছে। খুনের ঘটনার সঙ্গে এর সরাসরি কোনও যোগসূত্র মেলেনি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। ওই দিন সাগর ঘোষের ছেলে হৃদয় ঘোষের আইনজীবী তাঁদের পক্ষের বক্তব্য আদালতে জানাবেন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১০টা ৫০ নাগাদ বিচারপতি হরিশ টন্ডনের এজলাসে মামলা শুরু হয়। প্রথমেই সরকার পক্ষের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিচারপতিকে জানান, ডিজি একটি হলফনামা তৈরি করেছেন এবং সেটি আদালতে দাখিল করতে চান। বিচারপতি সম্মতি দেন। এর পরে ডিজি-কে উদ্দেশ করে প্রশ্ন করতে শুরু করেন বিচারপতি টন্ডন। ডিজি-র কাছে বিচারপতি টন্ডন জানতে চান, বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর তদন্তে নজরদারি করতে বলা হয়েছিল তাঁকে। সেই তদন্তের ব্যাপারে ডিজি-কে কি সব সময় সব কিছু অবগত করা হয়েছিল? ডিজি বলেন, তাঁকে জানানো হয়েছিল।
এর পরেই বিচারপতি জানতে চান, তিনি কি পাড়ুই-কাণ্ডের তদন্তে সন্তুষ্ট? ডিজি জানান, তিনি সন্তুষ্ট। বিচারপতি টন্ডন বলেন, চার্জশিট পেশ করার সময় কি আদালতে জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি? ডিজি জানান, তাঁকে যে আইনি পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল, তার ভিত্তিতেই তিনি চার্জশিট দিয়েছেন। এবং তা তিনি হলফনামায় জানিয়েওছেন। বিচারপতি টন্ডন জানতে চান, হাইকোর্টের অনুমতি ছাড়া যে চার্জশিট পেশ করা যাবে না, সেটা কি ডিজি-কে বলা হয়েছিল? ডিজি বলেন, তাঁকে বলা হয়েছিল যে চার্জশিট পেশ করা যাবে। কারণ চার্জশিট যে পেশ করা যাবে না, এটা হাইকোর্ট কখনও বলেনি।
বিচারপতি টন্ডন বলেন, হৃদয়বাবুর স্ত্রী শিবানী ঘোষের বয়ান সম্পর্কে ডিজি কী বলবেন? ডিজি জানান, তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি আছে। অন্য যাঁরা জবানবন্দি দিয়েছেন, তাঁদের বক্তব্যের সঙ্গে ওঁর কথা মিলছে না। বিষয়টি নিয়ে সবিস্তার তদন্ত হয়েছে। ডিজি আদালতে জানান, শিবানী ঘোষের কথার সঙ্গে বাকিদের বক্তব্যের সঙ্গতি না থাকায় চার্জশিটে ওই দু’জনের (অনুব্রত মণ্ডল ও বিকাশ রায়চৌধুরী) নাম দেওয়া হয়নি।