মুম্বইয়ের দায়রা আদালত সলমন খানের পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়ার পরে আইনজীবী মহলে নানা আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই বলিউড তারকার আইনজীবীরা বম্বে হাইকোর্টে তাঁর জামিনের আর্জি জানিয়েছেন। হাইকোর্ট তাঁর দু’দিনের অন্তর্বর্তী জামিনও মঞ্জুর করেছে।
কারাদণ্ডের পরে সলমন খানের পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ কী হতে পারে, তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীরা তাঁদের অভিমত দিয়েছেন। যেমন, ফৌজদারি আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ জানান, এই ধরনের ক্ষেত্রে, যেখানে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হয়, সে ক্ষেত্রে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে আপিল মামলা করা যায়। এই আপিল গ্রহণ করে সিঙ্গল বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট মামলায় নিম্ন আদালতের সব নথিপত্র চেয়ে পাঠাবে। সলমনও একইসঙ্গে এখানেই জামিনের আর্জি জানান। সঞ্জীববাবুর মতে, সাধারণত এ সব ক্ষেত্রে জামিন পাওয়ার সুযোগ থাকে।
আর যদি এ ক্ষেত্রে সলমন অন্তর্বর্তীকালীন জামিন না পেতেন? সে ক্ষেত্রে সলমন সুপ্রিম কোর্টে তাঁর জামিনের আবেদন জানাতে পারতেন বলে এই আইনজীবীর বক্তব্য। সঞ্জীববাবুর কথায়: ‘‘চার্জ ফ্রেম হয়ে যাওয়ার অনেক পরে সলমনের গাড়ির চালক এসে বলেন, তিনিই এই অপরাধ করেছেন। সেখানেই নিম্ন আদালত বলেছে, তিনি এত দিন পরে এ কথা জানাচ্ছেন কেন? আমার অনুমান, আদালত সেই জায়গাটাই ধরেছে।’’ কলকাতা হাইকোর্টের আর এক ফৌজদারি আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহ রায়ের অভিমতও একই। তিনিও জানান, এ সব ক্ষেত্রে নিয়মটা একই। সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের নির্দেশ হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ করতে হয়। এরই পাশাপাশি জামিনের আবেদনও করা হয়। সলমন ঠিক সেটাই করেছেন।
আইনজীবীদের অভিমত, গাড়ি চাপা দিয়ে অনিচ্ছাকৃত হত্যা মামলায় সলমনের যে হেতু পাঁচ বছর কারাদণ্ড হয়েছে, তাই তিনি বম্বে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে জামিনের আবেদন জানান। সাধারণ ভাবে অন্তর্বর্তী জামিন মিলেও যায়। কারণ, নিম্ন আদালত থেকে কাগজপত্র আসার পরে হাইকোর্টে মামলার শুনানি হওয়ার পরে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে তিন-চার বছর লেগে যেতে পারে। নিম্ন আদালতে যে দোষী ব্যক্তির পাঁচ বছর কারাদণ্ড হয়েছে, জামিন না পেয়ে তিনি যদি ওই সময়কাল জেলেই কাটান এবং হাইকোর্টে মামলার চূড়ান্ত ফয়সালার পরে যদি বেকসুর খালাস হয়ে যান, সে ক্ষেত্রে কী হবে?
আপাতত দু’দিনের স্বস্তি মিলেছে সল্লু মিঞার। তার পরে কী হবে? অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ফের জামিনের আবেদন নাকচ হলে বলিউডের তারকা সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন। সেই রাস্তা তাঁর খোলা থাকছে।
আপাতত দেশ তাকিয়ে শুক্রবারের দিকে।