অশান্তির পর বোলপুরে বড় শিমুলিয়া গ্রাম। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
ফের গুলি। ফের বীরভূম। এবং ফের প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
গত কয়েক বছরে একের পর এক ঘটনায় বার বার শিরোনামে উঠে এসেছে বীরভূমের নাম। কখনও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, কখনও বা বিরোধীদের সঙ্গে বিরোধ। কখনও গ্রাম দখল। কখনও বা পুনর্দখল। আর বোমা-গুলি-মারামারি-কাটাকাটি তো জলভাত। এই জেলার বিভিন্ন গ্রামে এ সব যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার! সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল বীরভূম। প্রথমে পাড়ুই এবং পরে বোলপুর থানার বড় শিমুলিয়া গ্রাম। বোমাবাজি, লুঠপাট, বাড়িতে আগুন লাগানোর পাশাপাশি উঠল গুলি চালানোর অভিযোগ।
সোমবার সকালে এক বিজেপি কর্মী আব্দুল সালামকে মারধরের ঘটনায় ওই দিন রাতে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে বোমাবাজি ও গোলাগুলিতে উত্তাল হয়ে ওঠে পাড়ুইয়ের বেলপাতা গ্রাম। সালামকে দুষ্কৃতীরা লাঠি, রড দিয়ে আক্রমণ করে বলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এর জেরে রাতে নতুন করে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে পাড়ুইয়ে। কয়েক দফায় বোমাবাজি হয়। চলে গুলি। সংঘর্ষের রেশ ছড়িয়ে পড়ে মাখড়া এবং ছাতারবাঁদিতে। মাখড়ায় বোমার আঘাতে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এবং এক বৃদ্ধের জখম হওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাঁদের বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনার পরে এলাকায় পুলিশি টহল চলছে বলে খবর।
অন্য দিকে, এ দিন সকালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বোলপুরের শিমুলিয়া গ্রাম। স্থানীয় সূত্রে খবর, সকালে চাষের কাজে গ্রামের মানুষ বেরিয়ে গেলে শিমুলিয়ার বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুঠপাট চালানো হয়। অভিযোগ, চারটি বাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয়। তৃণমূলের দুই পক্ষের মধ্যে বোমা-গুলি চলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন দু’জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের বোলপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় বর্ধমান মেডিক্যালে।
এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজের ভাই কাজল শেখ এবং নানুরের বিধায়ক গদাধর হাজরার দিকে। যদিও কাজলের অভিযোগ, বহিরাগতদের দিয়ে আউশগ্রাম দখল করার চেষ্টা করছেন গদাধর। সেই চেষ্টা ঠেকাতেই এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। তবে, এ বিষয়ে মুখ খোলেননি গদাধরবাবু।