বালির তৃণমূল নেতা তপন দত্ত খুনে বেকসুর পাঁচ

বালির তৃণমূল নেতা তপন দত্ত খুনের ঘটনায় স্রেফ প্রত্যক্ষদর্শী এবং তথ্যপ্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেল পাঁচ অভিযুক্তই। ওই খুনের ঘটনায় সিআইডির তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে হাওড়া ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। শনিবার ওই রায় ঘোষণার পরে তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত জানান, নিম্ন আদালতের এই রায় প্রত্যাশিতই ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ১৮:৩৬
Share:

বালির তৃণমূল নেতা তপন দত্ত খুনের ঘটনায় স্রেফ প্রত্যক্ষদর্শী এবং তথ্যপ্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেল পাঁচ অভিযুক্তই। ওই খুনের ঘটনায় সিআইডির তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে হাওড়া ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। শনিবার ওই রায় ঘোষণার পরে তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত জানান, নিম্ন আদালতের এই রায় প্রত্যাশিতই ছিল। তাঁর অভিযোগ, শুরু থেকেই শাসক দল তৃণমূল তদন্তকে প্রভাবিত করেছে। তাই তিনি কলকাতা হাইকোর্টে সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা করেছেন। তবে তপনবাবুর পরিবারের দাবি, এটা তাঁদের নৈতিক জয়। কেননা, সিআইডি তদন্ত যে ঠিক ভাবে করা হয়নি সে কথা এ দিন আদালতই জানিয়েছে।

Advertisement

২০১১-র ৬ মে রাতে বাড়ি ফেরার পথে বালি লেভেল ক্রশিংয়ের কাছে তপন দত্ত খুন হন। পুলিশ জানায়, তিনি বাবলু প্রসাদ নামে তাঁর এক সঙ্গীকে নিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই লেভেল ক্রশিংয়ের কাছে আসতেই তাঁকে কয়েক জন দুষ্কৃতী ঘিরে ধরে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল তপনবাবুর। তাঁর সঙ্গী বাবলু ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয়।

এই ঘটনার পরে মামলা রুজু করে পুলিশ। পরে সিআইডি তদন্তভার গ্রহণ করে। ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে সিআইডি নিশ্চিত হয়, কোনও রাজনৈতিক কারণে নয়, জলা-জমি ভরাটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্যই তপনবাবুকে খুন করা হয়েছে। ২০১১-র ৩০ অগস্ট সিআইডি মামলার চার্জশিট পেশ করে। চার্জশিটে হাওড়ার কয়েক জন তৃণমূল নেতা-সহ ১৬ জনের নাম রাখা হয়েছিল। যার মধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার এবং অভিযুক্তদের মধ্যে পি রাজু ও সন্তোষ সিংহ নাম দু’জনকে পলাতক দেখানো হয়েছিল।

Advertisement

২০১১-র ২৬ সেপ্টেম্বর সিআইডি আদালতে ফের আর একটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করে। সেখানে কোনও কারণ না দেখিয়ে ৯ জনের নাম বাদ দেওয়া হয়। তাঁরা প্রত্যেকেই হাওড়ার তৃণমূল নেতা।

তিন বছর ধরে এই মামলা চলে। ৩ ডিসেম্বর এই মামলার রায় ঘোষণার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ৫ তারিখ, শুক্রবার মামলার রায় ঘোষণার দিন স্থির হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন আবার তপন দত্তের স্ত্রী আদালতে রায় স্থগিত রাখার আবেদন করেন। আদালত তার পরে শনিবার রায় ঘোষণার দিন স্থির করেন। বিকেল ৪টের সময় রায় ঘোষণা করেন বিচারক দেবব্রত মুখোপাধ্যায়। ওই খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে নাম ছিল রমেশ মাহাতো, ষষ্ঠী গায়েন, সুভাষ ভৌমিক, কার্তিক দাস, অসিত গায়েন, সন্তোষ সিংহ এবং পি রাজুর। এঁদের মধ্যে শেষ দু’জনকে সিআইডি খুঁজে পায়নি। অভিযুক্তদের মধ্যে ষষ্ঠী ও অসিত স্থানীয় তৃণমূল নেতা। মামলা চলাকালীন অবশ্য ওই পাঁচ জন অভিযুক্তই জামিন পেয়েছিলেন। এ দিন রায় ঘোষণা করে আদালত জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও প্রতক্ষ্যদর্শীকে সিআইডি আদালতে হাজির করতে পারেনি। পাশাপাশি আদালতের বক্তব্য, রমেশ মাহাতোকে মূল অভিযুক্ত হিসেবে দেখিয়েছিলেন সিআইডির তদন্তকারীরা। কিন্তু খুনের সময় দেখা যায়, রমেশ মাহাতো অন্য একটি মামলায় জেল হেফাজতে ছিলেন। তা হলে কী ভাবে রমেশ মাহাতোকে সিআইডি মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করল? রমেশের নাম কেন অভিযুক্তদের তালিকায় প্রথমে রাখা হয়?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement