দিল্লির বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে অবশেষে সিলমোহর দিয়েই দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এ দিন উপরাজ্যপালের রিপোর্টের বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের কথা রাষ্ট্রপতিকে জানানো হবে। রাষ্ট্রপতির সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরই নির্বাচনের দিন ক্ষণ ঠিক করবে নির্বাচন কমিশন।
দিল্লিতে কোনও দলই যে সরকার গঠনে ‘সমর্থ’ নয় সে কথা জানিয়ে এ দিন সকালে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রিপোর্ট পাঠান উপরাজ্যপাল নাজিব জঙ্গ। তার আগে সোমবার তিনি রাজ্যের তিনটি বড় দল— বিজেপি, আম আদমি পার্টি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে দিল্লিতে সরকার গঠনে তাদের মতামত জানতে বৈঠক করেন উপরাজ্যপাল। একক ভাবে কোনও দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনে তারা যে ‘অসমর্থ’ সে কথা জানিয়ে নতুন করে ভোটের পক্ষে সম্মতি দেয় সব ক’টি দল।
এক দশক পর ফের খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে কোনও রাজ্যে দ্বিতীয় বার বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে। এর আগে ২০০৫-এর ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে বিহারে দু’বার নির্বাচন হয়েছিল।
গত আট মাস ধরে রাষ্ট্রপতি শাসন চলছে দিল্লিতে। ‘গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় স্থায়ী সরকার পাওয়ার অধিকার আছে যে কোনও রাজ্যের’— এ কথা মনে করিয়ে দিয়েই সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট দিল্লিতে সরকার গঠনে কেন্দ্রকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেয়। আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে বলা হয়। একটা স্থির সিদ্ধান্তে আসার লক্ষ্যে সোমবার রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে বৈঠকে বসেন উপরাজ্যপাল জঙ্গ।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন। তার পর থেকে রাজ্যে সরকার গঠন নিয়ে শুরু হয় টালবাহানা। রাজ্যে দীর্ঘ দিন ধরে চলা রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে একক বৃহত্তম দল হিসাবে বিজেপি-কে সম্প্রতি আমন্ত্রণ জানান উপরাজ্যপাল। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সম্মতিও চেয়ে পাঠান তিনি। বিজেপি-কে সরকার গঠন করার সুযোগ দিলে তারা বিধায়কদের ‘কেনাবেচার’র রাস্তা নেবে, অভিযোগ ওঠে আপ-এর তরফে। পরিবর্তে নতুন করে নির্বাচনের দাবি তোলে তারা। এ নিয়ে আপ একটি জনস্বার্থ মামলাও করে। ফলে ফের ‘রাজনৈতিক জটে’ আটকে যায় সরকার গঠনের সম্ভাবনা। এ দিনের রিপোর্টের পর রাষ্ট্রপতি কি সিদ্ধান্ত নেবেন সে দিকে তাকিয়ে রাজধানীর রাজনীতি।