জ্বলছে কাঠের গুদাম। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
সোমবার বিকেলে বৌবাজারে রাজা রামমোহন রায় সরণির উপর একটি কাঠের দোকানের গুদামে আগুন লাগে। আগুনে গুদামটি ছাড়াও সামনের একটি দোকান ভস্মীভূত হয়ে যায়। গুদাম লাগোয়া পাশের তিন তলা একটি বাড়িও আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই বাড়ি থেকে বাসিন্দাদের বের করে আনা হয়। আশপাশের বাড়ি ও দোকানের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ওই গুদামের পিছনেই রয়েছে একটি বস্তি। আগুন যাতে সেই পর্যন্ত ছড়িয়ে না পড়তে পারে, তার জন্য দমকলের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে হাত লাগান স্থানীয় মানুষও। রাস্তার উল্টো দিকেই লেডি ডাফরিন হাসপাতাল। আগুনের জেরে কেটে দেওয়া হয় সেখানকার বিদ্যুৎ সংযোগও।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ গুদাম ঘর থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকলে। অভিযোগ, দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয় প্রায় ৪৫ মিনিট পর। তত ক্ষণে আগুন সারা গুদামে ছড়িয়ে পড়ে। সুব্রত পোদ্দার নামে এক বাসিন্দা বলেন, “গুদাম বোঝাই কাঠ মজুত করে রাখা ছিল। দমকল আসতে দেরি করায় আগুন ভয়াবহ হয়ে ওঠে।” এই অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে মুচিপাড়া থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
ঘিঞ্জি এলাকায় এমন অগ্নিকাণ্ডে আতঙ্ক ছড়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে। দমকলের এক অধিকর্তা বলেন, “রাস্তায় যানজটের ফলে শুরুর দিকে ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছতে একটু দেরি হয়েছে। তবে, ঠিক কী করে এই ঘটনা ঘটল তা তদন্তের পরেই বলা যাবে।” আগুন নেভানোর সময় কয়েক জন দমকলকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে যান দমকলমন্ত্রী জাভেদ খানও। সন্ধ্যায় তিনি বলেন, “দমকলের ২২টি ইঞ্জিন ও ৫টি পোর্টেবল পাম্প ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।” পরে সেখানে যান কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দোকানটি আইনি না বেআইনি, তা এই সময় যাচাই করা সম্ভব নয়। দোকানে অগ্নিনির্বাপণ ছাড়পত্র ছিল কি না, তা নিয়ে এখনই ভাবছি না। আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসুক, তার পরে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এই অগ্নিকাণ্ডের খবরে উদ্বিগ্ন। তিনি আমার কাছে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট চেয়েছেন।”