বিমানের অবতরণ, সিপিএমে নতুন সূর্যোদয়

সিপিএমের নতুন রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র।দলের ২৪ তম রাজ্য সম্মেলন থেকে বিমান বসুর জায়গায়উঠে এল পলিটবুরো সদস্য সূর্যবাবুর নাম। সম্পাদক বদলের সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্য কমিটির সদস্যদের গড় বয়স কমানোর চেষ্টা শুরু করল সিপিএম। এ বারের সম্মেলন থেকে রাজ্য কমিটিতে ২১টি নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ১৭:১০
Share:

সিপিএমের নতুন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র।—ফাইল চিত্র।

সিপিএমের নতুন রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র।দলের ২৪ তম রাজ্য সম্মেলন থেকে বিমান বসুর জায়গায় উঠে এল পলিটবুরো সদস্য সূর্যবাবুর নাম। সম্পাদক বদলের সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্য কমিটির সদস্যদের গড় বয়স কমানোর চেষ্টা শুরু করল সিপিএম। এ বারের সম্মেলন থেকে রাজ্য কমিটিতে ২১টি নতুন মুখ অন্তর্ভুক্ত হল। তাঁদের বেশির ভাগের বয়স চল্লিশের আশেপাশে। এই সন্মেলন থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সিমিএম রাজ্য কমিটিতে যাঁরা নতুন আসবেন তাঁদের বয়স ৬০-এর নীচে হতে হবে। এই ভাবে পর্যায়ক্রমে দলের নেতৃত্বে ‘বৃদ্ধতন্ত্র’-এর অবসান ঘটাতে চাইছে আলিমুদ্দীন।

Advertisement

রাজ্য সম্মেলনের পঞ্চম ও শেষ দিনে প্রথা মেনে নতুন রাজ্য সম্পাদক পদে সূর্যবাবুর নাম প্রস্তাব করেন বিদায়ী রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুই। সর্বসন্মতিতে রাজ্য সম্পাদকের সঙ্গে রাজ্য কমিটিও নির্ধারিত হয়েছে বলে জানান পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি। পুরনো কমিউনিস্ট পার্টি ভেঙে সিপিএম তৈরির পর এর আগে শৈলেন দাশগুপ্তের জায়গায় রাজ্য সম্পাদক হয়েছিলেন অনিল বিশ্বাস। সেই অর্থে, এই নিয়ে দ্বিতীয় বার রাজ্য সম্পাদক পদে রদবদল হল। এ ছাড়া রাজ্য সম্পাদকেরা নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন পূর্বসূরিদের মৃত্যুর পরেই।

এ রাজ্যে কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাসে দ্বিতীয় বার এবং সিপিএমের ইতিহাসে প্রথম বার রাজ্য সম্পাদক এবং বিরোধী দলনেতার পদে একই ব্যক্তি এলেন। এর আগে এই নজির ছিল প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর। তবে সূর্যবাবু এর পরে বিরোধী দলনেতার পদ ছেড়ে দেবেন কি না তা নিয়ে পরে আলোচনা হবে বলে জানানো হয়েছে সিপিএমের তরফে।

Advertisement

রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর পর একের পর এক নির্বাচনে সিপিএমের রক্তক্ষরণ অব্যাহত। সংগঠনের হালও বেশ করুণ। এ অবস্থায় তৃণমূল এবং বিজেপির মোকাবিলা করে দলকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনা যে বেশ কঠিন কাজ তা বিলক্ষণ জানেন সূর্য। তবে তিনি শুক্রবার বলেছেন, “এর আগে রাজ্য সম্পাদক হিসেবে আমার পূর্বসূরিরা অনেক কঠিন পরিস্থিতি সামলেছেন। সাতের দশকে আধা ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাস মোকাবিলা করেছেন তাঁরা। আরও আগে স্বাধীনতার পরে তিল তিল করে পার্টি গড়ে তুলেছেন। তাঁদের তুলনায় আমি নগন্য।”

আপাতত সামনে আপনার লক্ষ কী?

সূর্যবাবু বলেন, “দলের নতুন পদে নির্বাচিত হওয়া কোনও আনন্দের বিষয় নয়। এটা দায়িত্ব পালনের প্রশ্ন। সরকারে থাকার সময় থেকে এখনও পর্যন্ত আমাদের তিন হাজার কর্মী-সমর্থক খুন হয়েছেন। বহু কর্মী ঘরছাড়া। এঁদের সকলের প্রতি আমি দায়বদ্ধ। সর্বপরি রাজ্যের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ। তাঁদের জন্য আমার যে দায়িত্ব তা শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও পালন করব।”

প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে, তৃণমূল হঠাও রাজ্য বাঁচাও এবং বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও— এই স্লোগান সামনে রেখে সিপিএম এখন থেকে রাস্তায় নেমে লড়াই করবে। নতুন রাজ্য কমিটি সেই লক্ষেই কর্মসূচি চুড়ান্ত করবে।

উল্লেখযোগ্য যাঁরা গেলেন

• নিরুপম সেন (রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী)

• তড়িত্ তোপদার (প্রাক্তন সাংসদ)

• হাসিম আব্দুল হালিম (বিধানসভার প্রাক্তন স্পিকার)

• মহম্মদ আমিন (প্রাক্তন সাংসদ)

• রঘুনাথ কুশারী (প্রাক্তন কলকাতা জেলা সম্পাদক)

• সুনীল সরকার (হুগলি জেলার নেতা)

এঁদের সকলকেই রাজ্য কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য যাঁরা এলেন

• রূপা বাগচী (কলকাতা পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী)

• গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় (পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক)

• পলাশ দাশ (উত্তর ২৪ পরগনার নেতা)

• সোমনাথ ভট্টাচার্য (উত্তর ২৪ পরগনার নেতা)

• সমন পাঠক (দার্জিলিঙের প্রয়াত সাংসদ আনন্দ পাঠকের ছেলে)

এ ছাড়া এ বারের জেলা সন্মেলন থেকে নির্বাচিত নতুন জেলা সম্পাদক হিসেবে রাজ্য কমিটিতে
এলেন সলিল আচার্য, নারায়ণ বিশ্বাস, অপূর্ব পাল, নীলাঞ্জন সিহি এবং অজিত পতি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement