আদালত চত্বরে অভিযুক্ত জসিমুদ্দিন।—নিজস্ব চিত্র।
এনআরএস-এর ছাত্র হস্টেলে পাওয়া নিহত ব্যক্তির দেহ শনাক্ত করলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম কোরপান শাহ। তাঁর বাড়ি উলুবেড়িয়া থানার খৈজুড়ি গ্রামের শাহপাড়ায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিহতের পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হয়।
কী ভাবে শনাক্ত হল দেহ?
নিহতের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, এ দিন সকালে সংবাদমাধ্যমে পুলিশের প্রকাশিত ছবিটি দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেন এন্টালি থানার সঙ্গে। এ দিন দুপুরের পর পরিবারের লোকজন পুলিশের সঙ্গে হাসপাতালের মর্গে যান। কোরপানের দেহ শনাক্ত করেন। এর পর আইনি প্রক্রিয়া মিটিয়ে তাঁর দেহ পরিবারের হাতে সন্ধ্যা সওয়া ৬টা নাগাদ তুলে দেওয়া হয়।
গত শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন কোরপান। কিন্তু পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কেন? পরিবারের দাবি, এর আগেও বেশ কয়েক বার বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন কোরবান। কয়েক দিন পরে ফের ফিরেও আসতেন। এ বারও পরিবারের লোকজন ভেবেছিলেন ফিরে আসবেন। তাঁর খুড়তুতো ভাই রওশন শাহ বলেন, “দাদা ফেরার বদলে তার দেহ ফিরল, এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। যারাই ওকে মারুক, তাদের যেন কঠোর শাস্তি হয়।”
রওশন জানিয়েছেন, এর আগে কোরবান মুম্বইতে জরির কাজ করতেন। কিন্তু ওই শিল্পে মন্দা দেখা দেওয়ায় ফিরে আসেন বাড়িতে। ইতিমধ্যেই তাঁর বাবা মারা যান। ফলে সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর ঘাড়ে। এর মধ্যেই এক বাইক দুর্ঘটনায় মাথায় চোট পান কোরবান। তাঁকে কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানে চিকিত্সার গাফিলতি হচ্ছে এই কারণে তাঁকে উলুবেড়িয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বেশ কিছু দিন চিকিত্সার পর জানা যায়, তাঁর মাথার একটি অংশ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রওশন বলেন, “তার পর থেকেই দাদাকে একটু অস্বাভাবিক লাগত।” এর পর আর মুম্বই ফিরে যাননি তিনি। এলাকাতেই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে চানাচুর ফেরি করে বিক্রি করতেন। আর মাঝে মাঝেই কোথায় যেন হারিয়ে যেতেন, বাড়িতে না বলে।
কিন্তু কী ভাবে তিনি ওই হাসপাতালের হস্টেলে পৌঁছলেন সে বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেননি পরিবারের লোকেরা। কোরপানের আত্মীয় সোহরা আলি শাহ জানান, আদপেই চুরি করার ছেলে নন কোরপান। সে বিষয়ে তাঁরা সবাই একমত।