রামজীবনপুরের জয়ী নির্দল কাউন্সিলরদের পাশে নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। ছবি: সুদীপ আচার্য।
রামজীবনপুরের ত্রিশঙ্কু পুরবোর্ড তারাই গড়তে চলেছে বলে দাবি করল বিজেপি। পশ্চিম মেদিনীপুরের ১১ আসনের ওই পুরসভার সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে জয়ী চার নির্দল কাউন্সিলরকে পাশে বসিয়ে শুক্রবার কলকাতায় বিজেপি-র রাজ্য দফতরে ডাকা এক সাংবাদিক বৈঠকে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, ‘‘উদিত সূর্য প্রতীকে জয়ী ওই চার কাউন্সিলর লিখিত ভাবে বিজেপির বোর্ডকে সমর্থন করবেন বলে জানিয়েছেন। তা ছাড়া আমাদের দলীয় প্রতীকে জিতে কাউন্সিলর হয়েছেন আরও দু’জন। সব মিলিয়ে ৬ জনকে নিয়ে আমরাই বোর্ড গড়ব। আর সেটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।’’ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতির দাবি সত্যি হলে রামজীবনপুর হবে রাজ্যের দ্বিতীয় বিজেপি পরিচালিত পুরসভা। এর আগে হাবরায় পুরবোর্ড গড়েছিল বিজেপি।
রামজীবনপুরে অবশ্য ভোটে লড়েছিল বাম-কংগ্রেস-বিজেপি এবং বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের মহাজোট— ‘দুর্নীতি বিরোধী মঞ্চ’। ১১টির মধ্যে ৯টিতে প্রার্থী দিয়েছিল এই মহাজোট। ‘উদিত সূর্য’ প্রতীকে নির্দল হিসেবে লড়ে জিতেও গিয়েছেন চার জন। এঁরা হলেন— রিঙ্কুরানি নিয়োগী, শিউলি সিংহ ভট্টাচার্য, জয়দেব ধাড়া এবং মানসী চৌধুরী। আর বিজেপি-র প্রতীকে জিতেছেন গোবিন্দ মুখোপাধ্যায় এবং সুলোচনা রায়। গোবিন্দবাবু প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন, গেরুয়া-শিবিরের প্রার্থী হিসেবে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বোর্ড গড়ার ক্ষেত্রে মহাজোটকেই সমর্থন করবেন তিনি এবং বিজেপি-র আর এক কাউন্সিলর। সে ক্ষেত্রেও বিজেপি ও বাকি দলগুলির মহাজোটেরই বোর্ড হত। এই অবস্থায় এ দিন রামজীবনপুরে তারাই পুরবোর্ড গড়বে বলে দাবি তুলে বিজেপি পরিস্থিতিতে খানিকটা জটিল করে তুলল বলেই অনুমান রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
রামজীবনপুরে মহাজোটের ঐতিহ্য কিন্তু পুরনো। ২০০৫ এবং ২০১০ সালের পুর-নির্বাচনেও ঘুঁটি উল্টে বামেদের পুরনো ঘাঁটি এই পুরসভা দখল করেছিল মহাজোট। তখন নেতৃত্বে ছিল তৃণমূল। আর এ বার সেই মহাজোট অস্ত্রেই তৃণমূলকে রুখতে ভোট ময়দানে নেমেছিল বিরোধীরা। জয়ী নির্দলদের মধ্যে রয়েছে সিপিএমের লোকাল সদস্য জয়দেব ধাড়া। শিউলিদেবীর বাবাও সিপিএমের লোকাল কমিটির সদস্য।
তবু কেন বিজেপি-র বোর্ডকে সমর্থন? শিউলিদেবী, মানসীদেবীদের জবাব, ‘‘তৃণমূলকে হারাতেই আমরা জোটবদ্ধ ভাবে লড়েছিলাম। এখন বোর্ড গড়ার ক্ষেত্রেও আমাদের একমাত্র লক্ষ্য তৃণমূল যাতে কোনও ভাবে বোর্ড গড়তে না পারে।’’