জঙ্গিদের খোঁজে উরিতে চলছে সেনার তল্লাশি। ছবি: রয়টার্স।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী প্রচারের ঠিক আগেই তিন তিন বার জঙ্গি হামলায় অশান্ত হয়ে উঠল জম্মু-কাশ্মীর। তিনটি ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১৭।
আগামী ৯ ডিসেম্বর জম্মুতে তৃতীয় দফার নির্বাচন। তার আগে রবিবার সেখানে ভোট-প্রচার করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদীর সফরের আগে ফের এক বার জঙ্গি হামলা নির্বাচনকে বানচাল করারই ষড়যন্ত্র বলে মনে করছে সেনাদের একাংশ।
শুক্রবার সকাল থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে পর পর তিন বার জঙ্গি আক্রমণ হয় গোটা রাজ্যে। প্রথম বার হামলা হয় বারামুলার উরি সেক্টরের সেনা ছাউনিতে। সেখানে সেনা-জঙ্গি সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ছয় জঙ্গি-সহ মোট ১৬ জনের। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন তিন জন পুলিশকর্মী এবং সাত সেনা জওয়ান। দুপুর পর্যন্ত চলে গুলির লড়াই। দ্বিতীয় হামলাটি হয়েছে লাল চক থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে শ্রীনগরের সৌরা এলাকায়। সেখানে গুলির লড়াইতে মৃত্যু হয়েছে এক জঙ্গির। তৃতীয় হামলাটি হয় সোফিয়ান জেলার একটি পুলিশ স্টেশনে। সেনা সূত্রে খবর, পুলিশ স্টেশন লক্ষ করে গ্রেনেড ছুড়ে পালায় জঙ্গিরা।
সেনা সূত্রে খবর, এ দিন রাত ৩টে নাগাদ উত্তর কাশ্মীরের বারামুলার কাছে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ঢুকে পড়ে পাঁচ-ছয় জন জঙ্গির একটি দল। উরি সেক্টরের ৩১ নম্বর রেজিমেন্টের মোহরা ক্যাম্প লক্ষ করে গুলি ছুড়তে করে তারা। পাল্টা জবাব দেয় সেনারাও। এক সেনা আধিকারিকের কথায়, আরও জঙ্গির লুকিয়ে থাকার আশঙ্কায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপত্যকা পেরিয়েই এই জঙ্গি দলটি ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন সেনারা। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা টুইটারে জানিয়েছেন, “রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে মরিয়া আক্রমণ চালাচ্ছে জঙ্গিরা।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, গোটা রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। বারামুলা থেকে উরি যাওয়ার রাস্তাগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গত মাসেই জম্মুর আরনিয়া সেক্টরে জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছিল চার জঙ্গি সহ-১০ জনের। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তিন সেনা জওয়ান। দ্বিতীয় দফার নির্বাচন চলাকালীন ফের এক বার জঙ্গি হামলা হয় কাশ্মীরের কুপওয়ারায়। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢোকার সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় পাঁচ জঙ্গির। মৃত্যু হয় এক সেনা জওয়ানেরও। নিহত জঙ্গিদের কাছ থেকে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেন জওয়ানেরা।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নজরদারিতে নির্বিঘ্নেই শেষ হয়েছে প্রথম ও দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, দুই দফাতেই ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল। এর আগে রাজ্যে কখনও এত বেশি হারে ভোট পড়েনি। অথচ আতঙ্কের কারণ ছিল যথেষ্ট। কাশ্মীরে যথারীতি ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিল হুরিয়ত-সহ বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। তা ছাড়াও ছিল প্রচণ্ড ঠান্ডা এবং জঙ্গি হানার আশঙ্কাও।