WBCHSE Exam Security 2025

উচ্চ মাধ্যমিকে দেহ তল্লাশিতে ‘মেটাল ডিটেক্টর’, প্রশ্নপত্রের সুরক্ষাতেও নয়া ব্যবস্থা

চলতি বছরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে ৩ মার্চ, শেষ হবে ১৮ মার্চ। নির্ধারিত দিনগুলিতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা, অর্থাৎ তিন ঘন্টা পরীক্ষা হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৩২
Share:
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

উচ্চ মাধ্যমিকে দেহ তল্লাশিতে ‘মেটাল ডিটেক্টর’। প্রতিটি স্কুলকে শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে দেওয়া হবে এই যন্ত্র। পাশাপাশি, এ বছর পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সুরক্ষিত রাখতে তৃণমূল স্তর থেকে আঁটসাঁট করা হচ্ছে নিরাপত্তা।

Advertisement

প্রতি বছর পরীক্ষার নিরাপত্তা নিয়ে ওঠে একাধিক প্রশ্ন। পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই সমাজমাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার জন্য গত বছর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ করা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, স্পর্শকাতর পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে ‘মেটাল ডিটেক্টর’-এর মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি। সেই দেহ তল্লাশির দায়িত্বে থাকেন ওই কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরা।

এ বছর থেকে সেই ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে চলেছে শিক্ষা সংসদ। এ বার পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশিতে আর পুলিশ নয়। দেহ তল্লাশি করবেন পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা। এ ক্ষেত্রে যে সমস্ত স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে, তাদের হাতে শিক্ষা সংসদের তরফ থেকেই তুলে দেওয়া হবে একটি ‘মেটাল ডিটেক্টর’।

Advertisement

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের এক আধিকারিক জানান, একটি করে ‘মেটাল ডিটেক্টর’ স্কুলগুলিকে দেওয়া হলেও এর মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের প্রবেশ করাতে বেশ খানিকটা সময় লেগে যাবে। তাই স্কুলগুলিকে কোনও প্রশাসনিক দফতর থেকে আরও একটি ‘মেটাল ডিটেক্টর’ জোগাড় করার পরামর্শ দিয়েছে সংসদ।

একই সঙ্গে, প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে ‘সর্টিং’-এর ক্ষেত্রেও নয়া ব্যবস্থা আনতে চলেছে শিক্ষা সংসদ। এত দিন পর্যন্ত প্রশ্নপত্র প্রথমে ‘ট্রেজ়ারি’ বা নির্দিষ্ট থানায় যেত। এর পর সেখান থেকে সেগুলি ভাগ করে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হত। আবার সেখান থেকে প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে যেত সমস্ত প্রশ্নপত্র। এর পর পরীক্ষাকেন্দ্রের প্রধান পরীক্ষকের ঘরে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে, তা পরীক্ষার ‘হল’ অনুযায়ী পুনরায় ‘সিল’ করে পাঠানো হত।

এ বছর থেকে শিক্ষা সংসদের তত্ত্বাবধানে ছাপাখানাতেই প্রশ্নপত্র ‘সর্টিং’ বা বাছাই করা হবে। এখানে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রের মোট পরীক্ষার্থী সংখ্যার উপর নির্ভর করে প্রশ্নপত্রের প্যাকেটিং করা হবে। এর পর সরাসরি প্রশ্নপত্রের বান্ডিল প্রতিটি ধাপ পেরিয়ে পৌঁছে যাবে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে। সেখানে পরীক্ষার্থীদের সামনেই পরীক্ষা শুরুর পাঁচ মিনিট আগে খোলা হবে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট। ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সম্ভাবনা আরও কমবে।

এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা সুচারু ভাবে সম্পন্ন করার জন্য শিক্ষা সংসদ বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ করছে। যে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপকে আমরা সমর্থন করি। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সঠিক জায়গাগুলি চিহ্নিত করে পদক্ষেপ করছে। কিন্ত আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে শাসক ঘনিষ্ট যে ব্যক্তিরা পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত আছে তাঁদের নিয়ে।”

এ ছাড়া, পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য এ বার থেকে অ্যাডমিট কার্ডে পরীক্ষাকেন্দ্রের নাম উল্লেখ করা থাকবে। ২০১১ সালের আগে এই নিয়ম চালু থাকলেও মাঝে তা বন্ধ হয়ে যায়। এ বার সেই নিয়ম আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরে উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হতে চলেছে ৩ মার্চ, শেষ হবে ১৮ মার্চ। নির্ধারিত দিনগুলিতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা, অর্থাৎ তিন ঘণ্টা পরীক্ষা হবে। এ বছরই বার্ষিক ব্যবস্থায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার অন্তিম বর্ষ। কারণ, পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ ২০২৫-২৬ থেকে সিমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিতে পারবেন পড়ুয়ারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement