কলেজ প্রাঙ্গণে অ্যাডভেঞ্চার ক্লাইম্বিং ওয়াল। নিজস্ব চিত্র।
পড়াশোনার পাশাপাশি আর্টিফিশিয়াল স্পোর্টস ক্লাইম্বিং-এ পড়ুয়াদের আগ্রহ গড়ে তুলতে কলেজের প্রাঙ্গণে তৈরি করা হয়েছে অ্যাডভেঞ্চার ক্লাইম্বিং ওয়াল। যা বিশেষ ভাবে সাড়া ফেলেছে ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে কলেজের তরফ থেকে।
এই কলেজের প্রাক্তন পড়ুয়া জিৎ রায় ২০১৫ সালে ছাত্রাবস্থায় আর্টিফিশিয়াল স্পোর্টস ক্লাইম্বিং সম্বন্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষকে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন, এবং সেই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছিল ২০২০ সালে। কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমতি পাওয়ার পর জিৎ নিজের উদ্যোগে পড়ুয়াদের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা শুরু করেছেন।
জিৎ বলেন “ক্লাস নাইন থেকে আমার রক ক্লাইম্বিং নিয়ে আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। তারপর আমি নিজেও এর উপর ট্রেনিং করেছি। কলেজে পড়ার সময় কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম যাতে আমাদের কলেজেও এই ধরনের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা হয়, বর্তমানে আমি নিজে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি পড়ুয়াদের।”
এই প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল ১৫ থেকে ২০ জন পড়ুয়া নিয়ে। ২০২২ সালে প্রথম আউটডোর ক্যাম্প হয় মাঠাবুরুতে। সে বার ২৫ জন প্রশিক্ষণরত পড়ুয়া যোগ দিয়েছিলেন। মাঠাবুরুর উচ্চতা ১৮০০ মিটার। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে ৪০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে ১৬০০ মিটার উঁচু টিলাবনি ক্যাম্পে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কলেজে কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে বিবেকানন্দ কলেজে প্রশিক্ষণরত পড়ুয়ার সংখ্যা ১১৫।
কলেজের ভিতরে যে অ্যাডভেঞ্চার ওয়াল তৈরি হয়েছে তার উচ্চতা প্রায় ৩২ ফুট। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর পড়ুয়ারা চাইলে পরবর্তীকালে রাজ্য স্তরে ও জাতীয় স্তরেও বিশেষ প্রশিক্ষণের কাজ বা এই ধরনের খেলার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন। শেষ অলিম্পিকসে আর্টিফিশিয়াল স্পোর্টস- ক্লাইম্বিং যুক্ত করা হয়েছে।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নবকিশোর চন্দ বলেন, “পড়াশোনার পাশাপাশি অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস-এ পড়ুয়াদের আগ্রহ বৃদ্ধি করার জন্য এই অভিনব উদ্যোগ। বর্তমানে বেশ কয়েকজন পড়ুয়া এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে জাতীয় স্তরে খেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। আমরা চাই প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধূলার প্রতিও আগ্রহ বৃদ্ধি পাক ছাত্র-ছাত্রীদের।”
ইতিমধ্যেই একাধিক পড়ুয়া যাঁরা এই প্রশিক্ষণে সফল ভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন তাঁদের ২০ থেকে ২২ জন পূর্বাঞ্চলীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন। প্রতিযোগিতাগুলি অনুষ্ঠিত হয়েছিল জামশেদপুরের টাটা, দার্জিলিং ও কলকাতার সল্টলেকে।