সংগৃহীত চিত্র।
উচ্চপ্রাথমিকের সুপারিশপত্রে বেশ কিছু জায়গায় ভুল। নিয়োগপত্র হাতে পেতে সমস্যায় যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। ফের জেলা পরিদর্শকদের নির্দেশ স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে। বলা হয়েছে, যে সমস্ত ভুল সংশোধনযোগ্য, তা যেন কমিশনকে জানানো হয়। কমিশন দ্রুত তা সংশোধন করবে। প্রার্থীরা যাতে হয়রানি শিকার না হন এবং নিয়োগপত্র যাতে আটকে না যায়, তাই এই বিজ্ঞপ্তি বলে মনে করছে শিক্ষক মহল।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “কিছু দিন আগে এসএসসি-র ভুলের জন্য কিছু উচ্চপ্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীর চাকরিতে যোগদানের অসুবিধা হচ্ছিল। আবারও একই ধরনের ভুলের শিকার বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী। এসএসসি-র এ রকম ভুল বার বার কেন হচ্ছে? এমনিতেই প্রায় ন’বছর পর সুযোগ হয়েছে, তার পরও যদি এ রকম হয়, সেটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
স্কুল সার্ভিস কমিশন স্কুলশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অনুমোদনপত্র প্রদান করে থাকে। কিন্তু কোথায় কোন স্কুল কত শূন্যপদ রয়েছে, সেই স্কুলের ঠিকানা এবং পিন কোড সব কিছুই পাঠিয়ে থাকেন স্কুল শিক্ষা দফতর এবং ডিআইরা। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, সেই সমস্ত জায়গায় তথ্যের ছোটখাটো ভুল রয়েছে। কোথাও পিন কোড আবার কোথাও স্কুলের নামের বানানে ভুল থেকে যাচ্ছে। একই ছবি আবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের ডেটাতেও। সেখানেও বেশ কিছু প্রার্থীর নামের বানানে ভুল রয়েছে। আর এই সুপারিশপত্র নিয়ে যখন স্কুলে যোগদানের জন্য যাচ্ছেন যোগ্য প্রার্থীরা, তখন তাঁদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ।
পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সভাপতি সুশান্ত ঘোষ বলেন, “স্কুলশিক্ষা দফতর এবং ডিআইদের পাঠানো তথ্যে বেশ কিছু ভুলত্রুটি থেকে যাচ্ছে, যার ফলে সমস্যায় পড়ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এই অভিযোগ আমাদের কাছে আসার পর আমরা এসএসসিকে জানাই। যাতে তারা দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এই ধরনের নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।”
স্কুল সার্ভিস কমিশনের এক আধিকারিক জানান, “যে সব ভুল সংশোধনযোগ্য, তার জন্য নিয়োগ যাতে না আটকায় তাই এই বিজ্ঞপ্তি। কমিশনের কাছে এই ধরনের ছোটখাটো ভুলগুলি নজরে আনলে তা সংশোধন করে দেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগেই উচ্চ প্রাথমিকের শূন্যপদের সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। ১ অক্টোবর ১৪,৩৩৯টি শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। প্রথম পর্যায়ের কাউন্সেলিংয়ের সময় দেখা যায়, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং পূর্ব বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জেলায় স্কুলের দেওয়া তথ্যে গরমিল রয়েছে। যে তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে বেশ কিছু স্কুলের ভুল ঠিকানা দেওয়া রয়েছে। এমনকি, বিষয়ভিত্তিক শূন্যপদের যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা-ও সঠিক নয়। সংরক্ষিত শ্রেণির প্রার্থিতালিকাতেও গরমিল ছিল। তার ফলে হয়রানির শিকার হতে পারেন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের।
প্রথম যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে সাড়ে ছ’শোরও বেশি স্কুলের তথ্যে গরমিল ছিল বীরভূম জেলায়। এ ছাড়াও আরও বেশ কিছু স্কুলের দেওয়া তথ্যে গরমিল প্রকাশ্যে এসেছিল। সংশোধিত শূন্যপদের তালিকায় ৭৫৬টি স্কুলের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। যার মধ্যে সিংহভাগ স্কুল রয়েছে বীরভূম জেলায়।