ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী সংগৃহীত ছবি
যে সব তরুণ-তরুণী কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বের পাশাপাশি রোমাঞ্চ, চ্যালেঞ্জের খোঁজে রয়েছেন, তাঁরা ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীতে যোগদানের কথা ভাবতে পারেন। দেশকে সুরক্ষিত রাখার মতো সম্মানজনক কাজে ভারতীয় নৌবাহিনী ছাড়াও ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। সেই উপকূলরক্ষী বাহিনীতেই গেজেটেড অফিসার পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। যে সব যোগ্য পরীক্ষার্থী আবেদন জানাতে আগ্রহী তাঁরা বিশদ জেনে নিন নিয়োগ সম্পর্কিত সমস্ত খুঁটিনাটি।
এই বিজ্ঞপ্তিতে মূলত পুরুষ ও মহিলা অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট (গ্রুপ এ গেজেটেড অফিসার) পদে নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। আবেদন জানানোর প্রক্রিয়া গত ১৭ অগস্ট থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে। আবেদন জানানোর শেষ তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ধার্য করা হয়েছে। সমস্ত আবেদন প্রক্রিয়াই অনলাইন মাধ্যমে সম্পন্ন হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। নিয়োগ সম্পর্কিত যাবতীয় রদবদলের কথাও ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://joinindiancoastguard.cdac.in/) থেকেই জানা যাবে।
অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট জেনারেল ডিউটি (জিডি)/কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (সিপিএল এসএসএ-এ ৫০ টি, টেক (ইঞ্জিনিয়ার)/টেক (ইলেকট্রনিক-এ ২০টি এবং আইনি পদমর্যাদায় একটি শূন্যপদের ঘোষণা করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা
১. জেনারেল ডিউটি পদে আবেদন করার জন্য প্রার্থীদের কোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম ৬০% নম্বর নিয়ে পাশ করতে হবে এবং ইন্টারমিডিয়েট বা দ্বাদশ শ্রেণীতে পদার্থবিদ্যা ও অঙ্কে ৫৫% নম্বর পেতে হবে। যাঁরা ডিপ্লোমা পাশের পরে গ্রাডুয়েশন করেছেন তাঁরাও আবেদন জানাতে পারবেন। তাঁদের ডিপ্লোমাতে পদার্থবিদ্যা ও অঙ্ক থাকতে হবে এবং মোট ৫৫% নম্বর পেতে হবে।
২. কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (এসেসএ)-তে যাঁরা আবেদন জানাতে চান তাঁদের দ্বাদশ শ্রেণি ও তাঁর সমতুল পরীক্ষায় অঙ্ক ও পদার্থবিদ্যাতে ৫৫% নম্বর নিয়ে পাশ করতে হবে। যাঁরা পদার্থবিদ্যা ও অঙ্ক-সহ ডিপ্লোমা পাশ করেছেন তাঁদের মোট ৫৫% নম্বর থাকতে হবে আবেদন করার জন্য। এ ছাড়াও আবেদনকারীদের কাছে আবেদনপত্র জমা করার আগে ডিরেক্টর জেনারেল সিভিল এভিয়েশনের থেকে অনুমোদিত কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স থাকতে হবে।
৩. টেকনিকাল (মেকানিকাল) পদে আবেদন জানাতে প্রার্থীকে কোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেভাল আর্কিটেকচার/মেকানিকাল/মেরিন/অটোমোটিভ/মেকাট্রনিক্স/ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং প্রোডাকশন/মেটালার্জি/ডিসাইন/এরোনটিক্যাল/এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করতে হবে মোট ৬০% নম্বর নিয়ে। এ ছাড়াও যাঁরা ভারতের ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স থেকে উপরিউক্ত বিষয়গুলিতে সমতুল ডিগ্রি নিয়ে পাশ করেছেন, তাঁরা আবেদন জানাতে পারেন।
যাঁরা ইন্টারমিডিয়েট বা দ্বাদশ শ্রেণীতে পদার্থবিদ্যা ও অঙ্কে ৫৫% নম্বর এবং যাঁরা পদার্থবিদ্যা ও অঙ্ক-সহ ডিপ্লোমা পাশ করেছেন তাঁদের ক্ষেত্রে মোট ৫৫% নম্বর থাকতে হবে আবেদন করার জন্য।
৪. টেকনিকাল(ইলেকট্রনিক্স/ইলেকট্রিকাল)-এর জন্য আবেদন জানাতে হলে কোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিকাল/ইলেকট্রনিক্স/টেলিকম্যুনিকেশন/ইন্সট্রুমেন্টেশন এবং কমিউনিকেশন/পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং/পাওয়ার ইলেকট্রনিক্স বিষয় নিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ন্যূনতম ৬০% নম্বর নিয়ে পাশ করতে হবে। এ ছাড়াও যাঁরা ভারতের ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স থেকে উপরিউক্ত বিষয়গুলিতে সমতুল ডিগ্রি নিয়ে পাশ করেছেন, তাঁরা আবেদন জানাতে পারেন। এ ছাড়াও যাঁরা ইন্টারমিডিয়েট বা দ্বাদশ শ্রেণিতে পদার্থবিদ্যা ও অঙ্কে ৫৫% নম্বর এবং যাঁরা পদার্থবিদ্যা ও অঙ্ক-সহ ডিপ্লোমা পাশ করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে মোট ৫৫% নম্বর থাকতে হবে আবেদন করার জন্য।
৫. আইনি পদে আবেদন জানানোর জন্য কোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম ৬০% নম্বর নিয়ে পাশ করতে হবে।
বয়ঃসীমা
১. জেনারেল ডিউটি পদে আবেদন করার জন্য মহিলা ও পুরুষ প্রার্থীদের জন্ম ১ জুলাই, ১৯৯৭ থেকে ৩০ জুন, ২০০১-এর মধ্যে হতে হবে। উপকূলরক্ষী বাহিনী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীতে কর্মরতদের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর ছাড় দেওয়া হয়।
২. কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (এসেসএ) আবেদন করার জন্য মহিলা ও পুরুষ প্রার্থীদের জন্ম ১ জুলাই, ১৯৯৭ থেকে ৩০ জুন, ২০০৩-এর মধ্যে হতে হবে।
৩. টেকনিকাল(মেকানিকাল) পদে আবেদন জানানোর জন্য মহিলা ও পুরুষ প্রার্থীদের জন্ম ১ জুলাই, ১৯৯৭ থেকে ৩০ জুন, ২০০১-এর মধ্যে হতে হবে। উপকূলরক্ষী বাহিনীতে কর্মরতদের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর ছাড় দেওয়া হয়।
৪. টেকনিকাল(ইলেকট্রনিক্স/ইলেকট্রিকাল)-এর জন্য আবেদন জানাতে হলে মহিলা ও পুরুষ প্রার্থীদের জন্ম ১ জুলাই, ১৯৯৭ থেকে ৩০ জুন, ২০০১-এর মধ্যে হতে হবে। উপকূলরক্ষী বাহিনীতে কর্মরতদের ক্ষেত্রে পাচ বছর ছাড় দেওয়া হয়।
৫. আইনি পদে আবেদন জানানোর জন্য মহিলা ও পুরুষ প্রার্থীদের জন্ম ১ জুলাই, ১৯৯৭ থেকে ৩০ জুন, ২০০১-এর মধ্যে হতে হবে। উপকূলরক্ষী বাহিনী, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীতে কর্মরতদের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর ছাড় দেওয়া হয়।
এ ছাড়া এসসি/এসটিদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পাঁচ বছর, ওবিসিদের অতিরিক্ত তিন বছর ছাড় দেওয়া হয়। এসসি, এসটিদের ডিগ্রি সার্টিফিকেটও ৫% ছাড় দেওয়া হয়।
উপরিউক্ত সমস্ত যোগ্যতার মাপকাঠি ছাড়াও আরও কিছু মানদণ্ড নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন-
১. প্রার্থীরা যদি আগে অন্য কোনও চাকরিতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে বাদ পড়ে থাকেন, তা হলে তাঁরা এই পরীক্ষাতেও বসতে পারবেন না।
২. প্রার্থী কোনও অপরাধমূলক কাজে গ্রেপ্তার, দোষী সাব্যস্ত বা অভিযুক্ত হলে চলবে না।
৩. যদি এসসি/এসটি/ইডব্লিউএস/ওবিসি প্রার্থীদের জন্য কোনও শূন্যপদ না থাকে, তা হলে তাঁরা অসংরক্ষিত বিভাগে আবেদন জানাতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে বয়স বা পাশ করার নম্বরের ক্ষেত্রে তাঁদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। তাঁদের শুধু আবেদন জানানোর জন্য কোনও আবেদন মূল্য দিতে হবে না।
৪. যাঁরা কলেজের শেষ বছরের চূড়ান্ত পরীক্ষা দেবেন বা যাঁদের শেষ সেমেস্টার চলছে ডিগ্রি কোর্সের, তাঁরাও আবেদন জানাতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে আগে কোন সমস্ত বছরে সব পেপার পাশ করে থাকতে হবে। প্রার্থীদের আবেদন জানানোর আগের সেমেস্টার পর্যন্ত ন্যূনতম ৬০% নম্বর থাকতে হবে। তাদের ৩০ মে, ২০২৩-এর মধ্যে পাশ করা সমস্ত ডিগ্রি পরীক্ষার মার্কশিট জমা দিতে হবে। রেজাল্ট না বেরিয়ে থাকলে রেজিস্ট্রার বা কন্ট্রোলারের সই করা একটি বিবৃতি প্রমাণ হিসেবে জমা দিতে হবে।
এই যোগ্যতার মাপকাঠিগুলো পূরণ করতে পারলেই আগ্রহী প্রার্থীরা আবেদন জানাতে পারবেন। না হলে আবেদনপত্র খারিজ করে দেওয়া হবে। তাই আগেই ভাল করে সমস্ত কিছু পড়ে নিয়ে, সঠিক তথ্য সহযোগে আবেদন জানিয়ে ফেলুন।