প্রতীকী চিত্র।
সামনেই কালীপুজো, তার পরেই শুরু হতে চলেছে কলেজের ক্লাস। নতুন কলেজে ভর্তি হওয়ার পরে বহু পড়ুয়ার মনেই নানা ভাবনা ভিড় করে আসে। নতুন বন্ধুরা ভাল ব্যবহার করবে কি না, নতুন বিষয় কী ভাবে শিখব, ইংরেজি না বাংলা - কোন ভাষায় পরীক্ষা দিলে সুবিধা হবে, কী ভাবে ক্লাসে নিজের সেরাটা দেব— প্রশ্নের পাহাড় ক্রমশ উঁচু হতে থাকে। কিন্তু এতে ঘাবড়ে গেলে তো চলবে না!
এই ধরনের ভাবনা অনেক সময়েই মানসিক দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে ওঠে। এমনই মত সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যা বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর তপোলগ্না দাসের। তিনি বলেন, “নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, নতুন পরিবেশে এসে অনেকেই মানিয়ে নিতে পারেন না। পড়াশোনার পাশাপাশি, সকলের সঙ্গে সাবলীল ভাবে কথোপকথনের ক্ষেত্রে জড়তা এসে যায়। বিষয়টি স্বাভাবিক, তাই ঘাবড়ে গেলে চলবে না। বরং নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।”
অনেক ক্ষেত্রে আলাদা ভাষা বা সাংস্কৃতিক রদবদলও পড়ুয়াদের কাছে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সে ক্ষেত্রে নতুন কিছু শেখার মতো নতুন ভাষা এবং সংস্কৃতি সম্পর্কেও সমান ভাবে শ্রদ্ধা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তপোলগ্না। তাঁর মতে, যে কোনও নতুনের থেকে ভালর পাশাপাশি, খারাপটাও জানা সমান ভাবে প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হলে অবশ্যই অধ্যাপক বা সিনিয়র দাদা-দিদিদের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন, যাঁরা ইতিমধ্যে এই ধরনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
তা ছাড়া, পড়াশোনার খাতিরে হোক বা মন ভাল রাখতে নতুন বন্ধু তৈরি করা, সহপাঠীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেই করতেই নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার বিষয়টি সহজ হয়ে ওঠে। এ ছাড়াও পড়াশোনা এবং ব্যক্তিগত সময়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখাটা ভীষণ প্রয়োজন। তা না হলে, সব কিছু মিলেমিশে একাকার হয়ে যেতে পারে।
সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যা বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের মতে, নতুন বিষয় নিয়ে পড়াশোনায় সফলতা অর্জনের জন্য নিজের মনে এই ছবিটা পরিষ্কার থাকা খুব দরকার যে, আমি কী হতে চাই বা কী পড়তে চাই। তার পরে সেই বিষয়টি নিয়ে নিয়মিত নিজের মতো করে চর্চা করা, প্রয়োজনে নোটস বানানোর মতো বিষয়গুলিতেও নিজের অভ্যাস তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মানসিক চাপ অনুভব করলে অধ্যাপক কিংবা বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে হবে। প্রয়োজনে কলেজের স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে কাউন্সেলিংয়ের সাহায্যও নেওয়া যেতে পারে।