শিক্ষামন্ত্রীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রভাব ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিনেও। সাড়ম্বরে সরকারি অনুষ্ঠান করে নয়, শুধুমাত্র শিক্ষামন্ত্রীর মাল্যদানের মধ্যে দিয়ে অনাড়ম্বর ভাবে পালিত হল বর্ণপরিচয়-স্রষ্টার জন্মদিবস।
বিগত কয়েক বছর ধরে উত্তর কলকাতায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বসতবাটীতে জাঁকজমকে পালিত হয় তাঁর জন্মদিন। এ বছর নেই কোনও মণ্ডপ, সরকারি ভাবে কোনও অনুষ্ঠানও হয়নি। শুধুমাত্র সেখানে গিয়ে মাল্যদান করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর কথায়, “সাম্প্রতিক এই ঘটনার পরে সরকারি ভাবে সমস্ত অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হয়েছে। তাই অনাড়ম্বর ভাবে শ্রদ্ধা জানিয়ে দিনটি পালন করা হল। বিদ্যাসাগরের জন্মদিন-সহ বেশ কিছু অনুষ্ঠান কয়েক মাস পরে আয়োজিত হবে।”
শিক্ষামন্ত্রীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। নিজস্ব চিত্র।
শুধু বিদ্যাসাগরের জন্মদিন নয়। গত এক মাসে শিক্ষক দিবস, কৃতি পড়ুয়াদের সম্মাননা-সহ বেশ কয়েকটি সরকারি অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু অনুষ্ঠানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজেই উপস্থিত থাকেন। সরকারি সূত্রের খবর, পুজোর পর এই অনুষ্ঠানগুলির আয়োজন করা হবে।
১৯৭৪ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাঁর বাবা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে এই বাড়ি বানানোর অনুমতি পান। এ বাড়িতে বসবাস শুরু করেন ১৮৭৭ সাল থেকে। ১৮৮২ সালে শ্রীরামকৃষ্ণ এই বাড়িতেই বিদ্যাসাগরকে দেখতে এসেছিলেন। ১৮৯১ সালে এই বাড়িতেই প্রয়াণ ঘটে বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টার।
১৯৯৮ সালে উচ্চশিক্ষা দফতর এই বাড়িটি অধিগ্রহণ করে। তার পর থেকে প্রতি বছর বিদ্যাসাগরের জন্মদিন উপলক্ষে এখানে সরকারি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিদ্যাসাগরকে নিয়ে গবেষণারত বিভিন্ন পড়ুয়াদের পাশাপাশি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরাও সামিল হন অনুষ্ঠানে। ২০২১ সালে উচ্চশিক্ষা দফতরের উদ্যোগে বিদ্যাসাগরের জীবন ও কাজ এবং তার প্রভাব অধ্যয়ন ও তাঁর জ্ঞানের প্রসারে এ বাড়িতে বিদ্যাসাগর অ্যাকাডেমি তৈরি হয়। পাশাপাশি এখানে গ্রন্থাগার নির্মাণের কাজও চলছে। সেই কাজ দ্রুত শেষ হবে বলেই আশা সরকারের।