ছবি: সংগৃহীত।
গরমের শুরুতেই হিমালয় সংলগ্ন স্পিতি কিংবা কিন্নর উপত্যকায় ঘুরতে যাওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। শীতল মরুভূমি হিসাবে পরিচিত এই উপত্যকার দৈনন্দিন জীবনযাপন নিয়েই গবেষণা করেছেন অ্যানথ্রোপলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার গবেষক। সেই গবেষণায় জানা গিয়েছে, কী ভাবে প্রতিকূল পরিবেশে অবস্থিত এই উপত্যকা জীবন্ত গবেষণাগার হয়ে উঠেছে। কী ভাবে কয়েক দশকে এখানে বসবাসকারী জনজাতির মানুষ নিজেদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করেছেন, তা নিয়ে আশুতোষ কলেজের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করেন গবেষক সুমিত মুখোপাধ্যায়।
ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী, সমতল থেকে ১৪ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত লাহুল-স্পিতি উপত্যকায় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫০ মিলিমিটার। বছরে সর্বাধিক তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং তুষারপাতের কারণে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা -৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে থাকে। এমন রূক্ষ উপত্যকাতেই ম্যালেরিয়া, প্রদাহজনিত রোগের উপশমে উপকারি ঔষধি গাছ পাওয়া যায়। ভূগোল নিয়ে পাঠরত পড়ুয়াদের জন্য এমন পরিবেশ গবেষণার জন্য আদর্শ, মনে করেন অধ্যক্ষ মানস কবি। তাই গবেষকের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নিজস্ব চিত্র।
পাশাপাশি, গবেষকের আলোচনায় এসেছে উপত্যকার সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রসঙ্গও। তিব্বত এবং ভূটানের ভাষার সংমিশ্রণে তৈরি লাহুলি (স্টড ভোটি) ভাষায় বেশির ভাগ মানুষ কথা বলে থাকেন। এই বিশেষ ভাষার লিপি সংরক্ষণ নিয়েও গবেষণার কাজ শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই উপত্যকায় স্নো লেপার্ড, সাইবেরিয়ান আইবেক্স, পিকা, রেড ফক্সের মতো বিরল প্রজাতির স্তন্যপায়ী জীব এবং গোল্ডেন ঈগলের মতো প্রাণীদের দেখা মেলে। তাই বছরের নির্দিষ্ট সময় বার্ডওয়াচার, ফটোগ্রাফার এবং সাধারণ পর্যটকদের আনাগোনা রয়েছে। এমন বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির মাঝে তিব্বতের বৌদ্ধধর্মালম্বী বাসিন্দারা জৈবিক চাষাবাদ এবং পর্যটন শিল্পকে হাতিয়ার করেই তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাপনে পরিবর্তন এনেছেন। বর্তমানে বাণিজ্যিক ভাবে কড়াইশুটি, আপেল এবং বার্লি উৎপাদনে সক্ষম এই জনজাতি সুস্থায়ী উন্নয়নের পথে এগিয়েছে।