ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও রয়েছে ভালো বেতনের চাকরির সুযোগ। প্রতীকী ছবি।
শুক্রবার প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিকের রেজাল্ট। পাশ করেছে সুশোভন (কাল্পনিক নাম)। তবে রেজাল্ট নিয়ে বাড়ছে চিন্তা। কারণ যে কাঙ্খিত নম্বর তাঁকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতো, সেই নম্বর আসেনি তাঁর ঝুলিতে। হয়তো তাঁর মাইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে গেল। সত্যিই কি তাই? মাধ্যমিকে ৬৫ শতাংশের কম নম্বর পাওয়ার পরও এই রাজ্য থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া সম্ভব। তফাৎ শুধু একটাই। বিটেকের ডিগ্রির বদলে সুশোভনের হাতে উঠবে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সার্টিফিকেট।
কারা পাবেন এই ডিপ্লোমা করার সুযোগ?
এই রাজ্যে ভাবী ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য রয়েছে এই বিশেষ ডিপ্লোমার সুযোগ। যেখানে উচ্চমাধ্যমিকের পর জয়েন্ট এন্ট্রান্সের প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসতে হত, সেখানে মাধ্যমিক পাশ করার পর কোনও পড়ুয়া যদি ন্যূনতম ৩৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে থাকেন, তিনি জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজ়াম ফর পলিটেকনিক তথা জেক্সপো-র প্রবেশিকা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
কিভাবে ভর্তি হওয়া যায়?
এই পরীক্ষা পশ্চিমবঙ্গ স্টেট কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন দ্বারা পরিচালিত হয়। এই পরীক্ষার পর মেধাতালিকার ভিত্তিতে কাউন্সেলিং শুরু হয়। শিক্ষার্থীকে এই পরীক্ষায় পাশ করার পর কাউন্সেলিং-এ উত্তীর্ণহতে হবে। উত্তীর্ণ হওয়ার পর রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা করার সুযোগ পাবেন তাঁরা। এই রাজ্যে মাইন ইঞ্জিনিয়ারিং, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কারিগরী ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়ন সংসদ তথা কারিগরী শিক্ষা বিভাগে তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্স হিসেবে পড়ানো হয়ে থাকে।
পঠনপাঠনের ধরণ:
পলিটেকনিক নিয়ে পড়ার সময় নিয়ম অনুযায়ী প্রথম সেমেস্টারে এক জন শিক্ষার্থীকে সব বিষয় নিয়েই পড়াশোনা করতে হয়। প্রথম সেমেস্টার পাশ করার পর শিক্ষার্থীদের বিভাগ অনুয়ায়ী পড়তে হয়। মাইন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ মূলত প্রকৃতি থেকে খনিজ পদার্থের উত্তোলন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্পর্কিত তত্ত্ব, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং এর প্রয়োগ নিয়ে কাজ করার পদ্ধতি সম্পর্কে শেখানো হয়।
মাইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কি ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যায়?
সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সিভিল, অটোমোবাইলের পাশাপাশি, মাইন ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়েও তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্সের সুযোগ রয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রেও একই ভাবে এই বিশেষ বিষয়টি পড়ানো হয়ে থাকে।
কাজের সুযোগ কেমন?
এই রাজ্যে যেহেতু বহু খনির উপস্থিতি রয়েছে, তাই প্রজেক্ট, গ্র্যাভিটি সার্ভে, সেইসনিক সার্ভে, আর্সেনিক কন্টামিনেশনের মত বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। দেশ এবং বিদেশের বহুজাতিক সংস্থার প্রজেক্টেও ফুল টাইমার বা কন্ট্র্যাক্টের ভিত্তিতে চাকরির সুযোগ রয়েছে।
তাই সুশোভনের মত বাকিদেরও মন খারাপ করার কোনও কারণ নেই। ডিগ্রি পেলেই ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায়, এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার সময় হয়েছে। মাধ্যমিকে কম নম্বর মানেই ভবিষ্যৎ অন্ধকার, এটা না ভেবে বরং ডিপ্লোমার হাত ধরে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হোক সুশোভনদের।