সংগৃহীত চিত্র।
একাদশ ও দ্বাদশে প্রতি সিমেস্টারে প্রতিটি বিষয়ে ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে পড়ুয়াদের। পাশাপাশি একাদশের প্রথম ও দ্বাদশের তৃতীয় সিমেস্টার না দিয়েও পাশ করার সুযোগ থাকছে পড়ুয়াদের। তবে সে ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৭৫ শতাংশ ও শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে মার্কশিটে লেখা থাকবে ‘সাপ্লিমেন্টারি’।
উচ্চ মাধ্যমিকে এ বার থেকে বছরে দু’বার পরীক্ষা দিতে হবে পড়ুয়াদের। পরীক্ষার ফলও ঘোষণা করা হবে বছরের দু’বার। তবে প্রথম ও তৃতীয় সিমেস্টারের ফল অনলাইনে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “উচ্চমাধ্যমিকে অতিরিক্ত বিষয় নিয়ে মোট ছ’টি বিষয় রয়েছে। তার মধ্যে যদি কেউ পাঁচটি বিষয়ে ৩০ শতাংশ করে পায় তাহলে তাকে পাশ বলে গণ্য করা হবে। উচ্চ মাধ্যমিকে স্পেশাল ও সি সি বলে যে বিষয় ছিল তা এ বছর থেকে বাদ দিয়ে ‘সাপ্লিমেন্টারি’ হিসাবে যুক্ত করা হল। একাদশের প্রথম এবং তৃতীয় সিমেস্টারে কোন বিষয়ে পাশ করতে না পারলে ‘সাপ্লিমেন্টারি’ দেওয়ার সুযোগ থাকছে একাদশের দ্বিতীয় এবং দ্বাদশের চতুর্থ সিমেস্টারে। আর শেষ দু’টি সিমেস্টার একাদশ ও দ্বাদশ উভয় ক্ষেত্রেই পাশ না করলে তার বছর নষ্ট হবে। একজন পরীক্ষার্থী সর্বোচ্চ রেজিস্ট্রেশন থেকে সাত বছর ‘সাপ্লিমেন্টারি’ পরীক্ষা দিতে পারবে।”
একাদশ ও দ্বাদশে প্রতি সিমেস্টারে প্রতিটি বিষয়ে ৩০ শতাংশ নম্বর পেতে হবে পড়ুয়াদের। কোনও সিমেস্টারের কোনও একটি বিষয়ে যদি ৩০ শতাংশ নম্বর কেউ না পায় তা হলে সে পরের সিমেস্টারে পরীক্ষার সঙ্গেই ওই বিষয়ে ‘সাপ্লিমেন্টারি’ পরীক্ষা দেবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি মিলিয়ে মোট চারটি সিমেস্টার দিতে হবে পড়ুয়াদের। একাদশ শ্রেণির সেমিস্টারের ক্ষেত্রে দু’টি সিমেস্টার মিলিয়ে সমস্ত বিষয়ে পাশ করতে হবে পড়ুয়াদের, তা না হলে অকৃতকার্য বলে গণ্য করা হবে। অর্থাৎ সেই পরীক্ষার্থী আর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারবে না।
দ্বাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে এই নিয়মে পরিবর্তন এনেছে শিক্ষা সংসদ। চতুর্থ সিমেস্টারে কোনও পরীক্ষার্থী কোনও বিষয়ে ফেল করলে পরের বছর আবার দ্বাদশের পরীক্ষার সঙ্গে এই বিষয়গুলির পরীক্ষা দিতে পারবে। অর্থাৎ বছর নষ্ট হলেও সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর দ্বাদশের চতুর্থ সিমেস্টারের ‘সাপ্লিমেন্টারি’ দেওয়ার সুযোগ থাকছে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে সিমেস্টার পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি সিমেস্টার-এ পাশ ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনলেও পরীক্ষার্থীরা চাইলে প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টারে পরীক্ষায় না বসেও দ্বিতীয় চতুর্থ সিমেস্টার পরীক্ষায় বসে পাশ করার সুযোগ থাকছে। তবে সে ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের একই সঙ্গে একই দিনে দু’টি করে পরীক্ষা দিতে হবে সেক্ষেত্রে তাদের অনেকটা চাপ বৃদ্ধি পাবে।
চিরঞ্জীব বলেন, “আমরা চাই প্রত্যেক পড়ুয়া দু’টি করে সিমেস্টারে অংশগ্রহণ করুক। তাতে নম্বর বৃদ্ধি করার সুযোগ-এর পাশাপাশি মেধার উৎকর্ষতাও বৃদ্ধি পাবে। একসঙ্গে একই দিনে দু’টি পরীক্ষার চাপ গ্রহণ করতে হবে না।” প্রসঙ্গত পরীক্ষার্থীদের ছ’টা বিষয়ের মধ্যে পাঁচটা বিষয় এই পাশ ফেল নিয়ম কার্যকর হচ্ছে। তবে পাশ ফেলের মধ্যেও বেশ কিছু সুবিধা যোগ করা হয়েছে শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে।
প্রসঙ্গত, যদি কোনও পরীক্ষার্থী একটি বিষয় পাশ নম্বরের থেকে পাঁচ শতাংশের কম পায়, তা হলে তার অন্য যে চারটি বিষয় রয়েছে সেখানে যে বিষয়টিতে সব থেকে বেশি নম্বর পেয়েছে সেই নম্বর পাঁচ নম্বর নিয়ে ওই নম্বর যোগ করে দেওয়া হবে এবং এই নিয়ম কার্যকর হবে শুধুমাত্র একটি বিষয় জন্য। এমনকি, প্রথম ও দ্বিতীয় ভাষার ক্ষেত্রেও এই সুযোগ পাওয়া যাবে।