সংগৃহীত চিত্র।
সর্বস্তরের মেধার মূল্যায়নের লক্ষ্যে প্রশ্নপত্রের ধাঁচে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের। একাদশ শ্রেণির প্রথম ও দ্বাদশের প্রথম সিমেস্টারের প্রশ্ন ভাগ করা হচ্ছে তিনটি স্তরে। সেখানে সাধারণ পড়ুয়ার পাশাপাশি মধ্য ও উচ্চ মেধাবী পড়ুয়ারাও যাতে নিজেদের মেধা যাচাই করার সুযোগ পায়, এই ছকেই প্রশ্নপত্র সাজাতে চলেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
ইতিমধ্যে শিক্ষা সংসদের তরফে সিলেবাস এবং কী ধরনের প্রশ্ন হবে তা প্রকাশ করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উচ্চমাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র থাকবে সহজ, সামান্য জটিল এবং কঠিন প্রশ্ন মিলিয়ে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “এমসিকিউ হলেও সব ধরনের মেধার পড়ুয়ারা যাতে ভাল ভাবে পরীক্ষা দিতে পারে, তার জন্যই এই বিভাজন। সাধারণ মেধা পড়ুয়া থেকে উচ্চমেধা পড়ুয়া সকলের জন্যই প্রশ্ন থাকবে। পাশাপাশি পাশের হার কমে না যাওয়ার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।”
নয়া বিভাজনে ৫০ শতাংশ প্রশ্ন থাকছে সহজ। ৩০ শতাংশ প্রশ্ন হবে সামান্য জটিল। এবং ২০ শতাংশ প্রশ্ন থাকবে উচ্চমেধার পড়ুয়াদের জন্য। বাকি দু’টি ভাগের চেয়ে ২০ শতাংশ প্রশ্ন তুলনামূলক ভাবে কঠিন হবে বলে জানানো হয়েছে শিক্ষা সংসদের তরফে।
সংসদ সদস্য ও যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ মেধাকে গুরুত্ব দিতে চাইছে। সাধারণ ছাত্র ছাত্রীরা যেমন সহজেই উত্তর দিতে পারবেন, সেই দিকটা খেয়াল রেখে যারা উচ্চ মেধার ছাত্রছাত্রী তাদেরকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যাতে মুড়ি-মিছরি একদর না হয়ে যায়।’’
এমসিকিউ বলতে বোঝায় একটি প্রশ্নের চারটি বিকল্প থাকে তার থেকে একটি সঠিক উত্তর বেছে নিতে হয়। এটা যেরকম থাকছে তার পাশাপাশি আরও বেশকিছু নতুন সংযোজন হচ্ছে এমসিকিউ প্রশ্নপত্রে। সেগুলি হল শূন্যস্থান পূরণ, সত্য মিথ্যা যাচাই করা, ডানদিকের সঙ্গে বাঁ দিক মেলানো, ডায়াগ্রাম সংক্রান্ত প্রশ্ন, বাক্য সাজিয়ে লেখা, সম্প্রতিক ঘটনাবলির উপর প্রশ্ন। শিক্ষা সংসদের তরফ থেকে মডেল প্রশ্নপত্র প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ যে সময় এই নির্দেশ দিল তা একটু দেরি হয়ে গেল মনে হচ্ছে। কারণ, ইতিমধ্যেই অধিকাংশ প্রকাশক বই জমা দিয়েছে সংসদে। তাদের এই প্রশ্নপত্রের ধাঁচ অনুসরণ করার সুযোগ থাকল না। তা ছাড়া যারা সহায়িকা বই প্রকাশ করেন তারা ইতিমধ্যেই বই ছাপা শুরু করেছেন। আমরা মনে করি এই নির্দেশ সিলেবাস প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে দেওয়া উচিত ছিল।”
প্রসঙ্গত প্রথম ও তৃতীয় সেমিস্টারে মোট নম্বর থাকছে ৩৫ ও ৪০। প্র্যাকটিক্যাল বিষয়ের উপর ৩৫ নম্বর এবং থিওরিটিক্যাল বিষয়ের উপর ৪০ নম্বর।