প্রবন্ধ ১

শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষা, মালিকদেরও

ভারতের শ্রমবিরোধ আইনের গোড়ায় গলদ। সম্প্রতি একটি কমিটি এক বিকল্প শ্রমবিরোধ নীতির রূপরেখা ঘোষণা করল। এই প্রস্তাবে মালিক ও শ্রমিক, দু’পক্ষেরই লাভ। দীপঙ্কর গুপ্ত২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত আর্থিক বৃদ্ধির হারের দৌড় যেই ফুরোল, অমনি আমরা টের পেলাম, আসলে এত দিন ধরে নিজেদের ভুল বুঝিয়েই এসেছি কেবল। নিজেদের গুণে নয়, আমাদের অর্থনীতির অশ্বমেধের ঘোড়া দৌড়োচ্ছিল, কারণ গোটা দুনিয়ার অর্থনীতিরই তখন রমরমা ছিল। বিশ্ববাজারে মন্দা আরম্ভ হতেই ভারতের দ্যুতিও ম্লান হয়ে এল। ভারতের প্রধান দুটো সমস্যা ছিল: ১) রফতানি ছিল মূলত কম মজুরির হারে তৈরি পণ্যভিত্তিক; ২) ভারতে জোরালো অভ্যন্তরীণ বাজার ছিল না (এখনও নেই)।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০১
Share:

২০০৪ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত আর্থিক বৃদ্ধির হারের দৌড় যেই ফুরোল, অমনি আমরা টের পেলাম, আসলে এত দিন ধরে নিজেদের ভুল বুঝিয়েই এসেছি কেবল। নিজেদের গুণে নয়, আমাদের অর্থনীতির অশ্বমেধের ঘোড়া দৌড়োচ্ছিল, কারণ গোটা দুনিয়ার অর্থনীতিরই তখন রমরমা ছিল। বিশ্ববাজারে মন্দা আরম্ভ হতেই ভারতের দ্যুতিও ম্লান হয়ে এল। ভারতের প্রধান দুটো সমস্যা ছিল:
১) রফতানি ছিল মূলত কম মজুরির হারে তৈরি পণ্যভিত্তিক;
২) ভারতে জোরালো অভ্যন্তরীণ বাজার ছিল না (এখনও নেই)।

Advertisement

এই দুটো সমস্যা তৈরি হওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে। ভারতের শ্রমনীতি তার মধ্যে একটা বড় কারণ। ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিসপিউটস অ্যাক্ট বা শিল্প বিরোধ আইন অনুযায়ী, কোনও কর্মক্ষেত্রে ১০০ জনের বেশি শ্রমিক নিয়োগ করা হলে ছাঁটাই করার জন্য রাজ্য সরকারের অনুমোদন নিতে হয়। ফলে, বিনিয়োগকারীরা শ্রমিকের সংখ্যা একশোর গণ্ডি পার করতে দিতে চান না। অন্য দিকে আবার, কোনও শ্রমিক কমপক্ষে ২৪০ দিন একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে তবেই তাঁকে ছাঁটাই করার সময় ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। বিনিয়োগকারীরা তাই স্বল্পমেয়াদে শ্রমিক নিয়োগ করতে পছন্দ করেন। আমাদের দেশে যে শিল্পক্ষেত্রে প্রযুক্তির মান অতি নিচু স্তরের, সব স্তরের শ্রমিকদের দক্ষতাই অতি কম এবং শ্রমিকরা প্রায় অবধারিত ভাবেই গরিব আর তার ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারও অতি দুর্বল এর কোনওটাতেই তাই অবাক হওয়ার কোনও কারণ নেই।

বিনিয়োগকারীরা কেন বড় করে ভাবতে পারেন না, সেই প্রশ্নের উত্তরে তাঁরা শ্রমবিরোধ আইনের দোহাই দেবেন। ভারতে তাই ছোট ছোট শিল্প তৈরি হয়, যেগুলোর আর বড় হয়ে ওঠা হয় না। কারণ, আয়তনে বড় হলেই শিল্পবিরোধ নীতির আওতায় চলে আসবে, এবং তখন শ্রমিক নিয়োগ-ছাঁটাইয়ের নমনীয়তা সরকারি নীতির ফাঁসে আটকে যাবে। অন্য দিকে, শ্রমিকদেরও দক্ষতা অর্জনের তাগিদ থাকে না, বা কোনও একটি নির্দিষ্ট সংস্থায় দীর্ঘ দিন কাজ করার কথাও তাঁরা ভাবেন না। অতএব শ্রমবিরোধ আইনের সংস্কার প্রয়োজন। অবিলম্বে। এই আইনের যে দুটি সমস্যার কথা উল্লেখ করলাম, সেগুলিই সব নয়, আরও হাজার নিয়ম, ট্রাইবুনাল ইত্যাদির জটে ভারতের শ্রমবিরোধ নীতি আটকে আছে।

Advertisement

এই সমস্যাগুলির কথা মাথায় রেখেই শিব নাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পাবলিক অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ক্রিটিকাল থিয়োরি (সি-প্যাক্ট) ‘রিথিঙ্কিং দি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিসপিউটস অ্যাক্ট’ নামক একটি নথি প্রস্তুত করেছে। আমি প্রকল্পটির দায়িত্বে ছিলাম। সম্প্রতি নথিটি প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য, এক টেলিভিশন চ্যানেলের আলোচনায় ভারতের আর্থ-রাজনৈতিক দুনিয়ার দুই বিপরীত মেরুর বাসিন্দা, এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক গুরুদাস দাশগুপ্ত এবং হিরো মোটোকর্প-এর কর্ণধার সুনীল মুঞ্জল এই নথিটির গুরুত্ব স্বীকার করে নিয়েছেন।

এই নথিটির প্রারম্ভিক প্রস্তাব হল, যাবতীয় ন্যূনতম সীমা বিলোপ করা হোক। সংস্থায় যত জনই কর্মী থাকুন, আর তাঁরা যত দিনই কাজ করুন না কেন, সবাইকেই স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে গণ্য করতে হবে। তা হলেই, প্রত্যেক শ্রমিক প্রভিডেন্ট ফান্ড, বোনাস, গ্র্যাচুইটির মতো সুবিধাগুলি পাবেন। এবং, যদি কেউ ছাঁটাই হন, তবে সংস্থার মালিক তাঁকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতেও বাধ্য থাকবেন। দুটো কথা মনে রাখা দরকার। এক, কোনও সংস্থাই মাপে ছোট থেকে খুব কিছু লাভ করতে পারে না, ফলে ১০০ জনের কম শ্রমিকে আটকে থাকাটা প্রতিষ্ঠানের মালিকের পক্ষে লাভজনক নয়। দুই, ২৪০ দিন হওয়ার আগেই কোনও শ্রমিককে ছাঁটাই করাটাও সব সময় আর্থিক ভাবে লাভজনক সিদ্ধান্ত নয়। এই ন্যূনতম সীমাগুলো উঠিয়ে দিলে মালিকের চোখে এক জন শ্রমিকের সঙ্গে অন্য শ্রমিকের ফারাক থাকবে না। তখন উৎপাদনশীলতাই মূল বিবেচ্য হবে। অন্য দিকে, ছোট বা বড়, সব সংস্থাকেই এক নিয়ম মেনে চলতে হবে।

সরকারের ঘোষিত নীতি হল, শিল্পক্ষেত্রে চুক্তিশ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করা। এই ক্ষেত্রে সি-প্যাক্ট-এর প্রস্তাব সরকারি নীতির অনুসারী। আমাদের প্রস্তাব হল, কোনও কারখানাতেই মোট শ্রমিকের পাঁচ শতাংশের বেশি চুক্তিশ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না। যে প্রতিষ্ঠানে কর্মিসংখ্যা ২০-র কম, সেখানে চুক্তিশ্রমিকের সর্বোচ্চ অনুপাত ২০ শতাংশ হতে পারে। কোনও কারখানায় যেটি মূল কাজ, অথবা যে কাজটি কোনও নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে ফুরিয়ে যায় না, সেই কাজগুলির ক্ষেত্রে চুক্তিশ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না। আরও জরুরি হল, কোনও সংস্থায় যাঁরা চুক্তিশ্রমিক হিসেবে কাজ করবেন, তাঁদের একটি ঠিকাদার সংস্থার কর্মী হতে হবে। তাঁদের যে কাজে নিয়োগ করা হবে, সেই ঠিকাদার সংস্থাটিকে সেই ক্ষেত্রেরই সংস্থা হতে হবে। তাঁরা সেই সংস্থার স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে বেতনসহ অন্য সুযোগসুবিধাগুলি পাবেন। এই নীতি কার্যকর হলে সব শ্রমিকই কোনও না কোনও সংস্থার স্থায়ী শ্রমিক হবেন, ফলে কেউই স্থায়ী শ্রমিকের প্রাপ্য সুবিধাগুলি থেকে বঞ্চিত হবেন না।

যে কোনও সংস্থারই কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রয়োজন হতে পারে। আমাদের প্রস্তাবে তার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। কিন্তু তার জন্য সব শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সেই ক্ষতিপূরণের বিভিন্ন দিকের মধ্যে একটি হল ছাঁটাই ভাতা। কোনও শ্রমিক যত বছর একটি সংস্থায় চাকরি করছেন, তার প্রতি বছরের জন্য বর্তমান বেতনের হারে ৪৫ দিনের বেতন হল এই ছাঁটাই ভাতার পরিমাণ। অর্থাৎ, কোনও বিনিয়োগকারী নমনীয় শ্রমনীতি চাইলে তার ব্যবস্থা আছে, কিন্তু তার জন্য মূল্য দিতে হবে। সব শ্রমিককে নির্দিষ্ট হারে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পর বিনিয়োগকারী তাঁর সংস্থার চরিত্রে যে কোনও গোত্রের পরিবর্তন করতে পারেন। শিল্পমহলে এই দাবিটি বহু দিনের।

বর্তমান মজুরির হারে চাকরি জীবনের প্রতি বছরের জন্য ৪৫ দিনের বেতন ছাঁটাই ভাতা হিসেবে দেওয়ার যে প্রস্তাব এই নথিতে রয়েছে, সেটা নতুন কোনও ধারণা নয়। ইয়োরোপের প্রায় সব দেশেই এই ছাঁটাই ভাতা প্রচলিত। ভারতে এই ভাতা আরও বেশি প্রয়োজন, কারণ এ দেশে শ্রমিকদের জন্য কোনও সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। আর, মনে রাখা প্রয়োজন, কোনও সংস্থার নিয়োগকর্তা হওয়ার মানে শুধু লাভের টাকা গুনে নেওয়াই নয়, নিযুক্ত শ্রমিকদের দায়িত্ব গ্রহণও বটে। নিয়োগকর্তারা যদি আইনত শ্রমিকের দায়িত্ব নিতে বাধ্য না হন, তবে সেটা আর্থিক বৃদ্ধির পক্ষেও আখেরে শুভ হয় না।

উল্লিখিত প্রস্তাবগুলি শিল্পের পক্ষে ইতিবাচক। এই প্রস্তাবে শিল্পমহলের বহুকাঙ্ক্ষিত শ্রম-নমনীয়তা আছে। শিল্পপতিরা তাঁদের সুবিধেমত শ্রমিক নিয়োগ করতে পারবেন, ছাঁটাইও করতে পারবেন। ফলে, তাঁদের পক্ষে নতুন পথে হাঁটা অনেক সহজ হবে। অন্য দিকে, এই প্রস্তাব শ্রমিকদেরও স্বার্থরক্ষা করছে। প্রত্যেকেই স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে পারবেন, ফলে ছাঁটাই হলেও তাঁরা স্থায়ী শ্রমিকের প্রাপ্য সুবিধাগুলি পাবেন। কাজেই, আশা করা চলে, মালিক এবং শ্রমিক, উভয় পক্ষই অনেক বেশি দায়িত্বশীল হবেন। শ্রমিকের দক্ষতা, এবং উৎপাদনশীলতা বাড়বে, ফলে ব্যবসার আয়তন বৃদ্ধিতেও সুবিধা হবে।

যাঁরা আর কিছু না ভেবে শুধু নিজেদের মুনাফাটুকু গুছিয়ে নিতে চান, আমরা তাঁদের উদ্যোগপতি হওয়ার পথে কিছু বাধা তৈরি করতে চাই। কেউ যদি উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় না দেন, নতুন পথে হাঁটতে সাহস না করেন, ঝুঁকি না নেন, শ্রমিক ছাঁটাই করতে হলে অনেক আগে থেকে তৈরি না হন, তবে তাঁর বা তাঁদের ব্যবসা করার প্রয়োজন নেই। যে কোনও শিল্পসংস্থায় মালিক ও শ্রমিকপক্ষের মধ্যে বিশ্বাসের সম্পর্ক স্থাপন করতে হলে মালিকপক্ষকেই আগে হাত বাড়াতে হবে। সংস্থার বোর্ড অব ডিরেক্টরস-এ শ্রমিকদের এক জন সম-ক্ষমতাবান প্রতিনিধি থাকলে তা এই পথে এক বিরাট পদক্ষেপ হবে।

কারখানায় কাজের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আরও একটি কারণ হল বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব। এই সংগঠনের পেশাদার নেতাদের আন্তরিক বাসনা শ্রমিকরা বিপন্ন, সুতরাং তাঁদের ওপর নির্ভরশীল, থাকুন। এই পরিস্থিতি বদলাতে সি-প্যাক্ট-এর প্রস্তাব, শ্রমবিরোধ আইনের আওতায় থাকা প্রতিটি সংস্থায় একটি করে শ্রমিক কাউন্সিল গঠিত হোক। কারখানায় কর্মরত সব শ্রমিক, গোপন ব্যালটের মাধ্যমে, কারখানার কর্মীদের মধ্যে থেকেই সেই কাউন্সিলের সদস্যদের বেছে নেবেন। ট্রেড ইউনিয়নগুলিও থাকুক, তবে একটি সীমার মধ্যে। তাতে কোনও বহিরাগতের ঠাঁই হবে না। ট্রেড ইউনিয়নগুলি চাইলে শ্রমিক কাউন্সিলের সদস্যপদের জন্য নিজেদের কোনও সদস্যকে ভোটপ্রার্থী করতে পারে। কারখানার শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার থাকবে কাউন্সিলেরই। ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যাবতীয় আলাপ-আলোচনা, দর কষাকষি করবে কাউন্সিল।

শ্রমক্ষেত্রে বিরোধ আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু, সেই বিরোধের যত দ্রুত নিষ্পত্তি হবে, মালিক এবং শ্রমিক, উভয় পক্ষেরই তত লাভ। বর্তমান শ্রমবিরোধ আইনে এই নিষ্পত্তির বিষয়টি একে তো বিভিন্ন জটে জড়িয়ে আছে, উপরন্তু তার কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমাও নেই। সি-প্যাক্ট এই বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে একটি ত্রিস্তরীয় প্রস্তাব পেশ করেছে। কোনও বিরোধ সৃষ্টি হলে প্রথমে শ্রমিক কাউন্সিল তার নিষ্পত্তির চেষ্টা করবে। সেই প্রয়াস বিফল হলে কাউন্সিল ও ম্যানেজমেন্টের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি মীমাংসা কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটির প্রধান হবেন শ্রমবিরোধ আইনের অধীনে নিযুক্ত কোনও সরকারি কনসিলিয়েশন অফিসার। এই ধাপেও ফয়সলা না হলে বিষয়টি ট্রাইবুনালে যাবে। ট্রাইবুনালের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। প্রতিটি ধাপেরই সময় নির্দিষ্ট। শ্রমিক কাউন্সিলের চেষ্টা থেকে ট্রাইবুনালের সিদ্ধান্ত, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি চার মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে।

সি-প্যাক্ট-এর প্রস্তাবে আরও এমন বহু বিষয় আলোচিত হয়েছে যাতে এই প্রস্তাবটি বর্তমান শ্রমবিরোধ আইনের একটি উন্নততর বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। এই প্রস্তাব দাঁড়িয়ে আছে একটা অসম্ভব সরল ও প্রাথমিক ভিত্তির ওপর শ্রমবিরোধ আইনে যত ন্যূনতম সীমার কথা বলা আছে, সব বিলোপ করা হোক। এই প্রস্তাবটি যদি আইনের রূপ পায়, তবে ভবিষ্যতে কোনও বিনিয়োগকারী শ্রমনীতির দোহাই দিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে পারবেন না। কোনও শ্রমিকও আর বলতে পারবেন না যে সংস্থার থেকে তাঁরা কিছু পান না বলেই তাঁরাও নিজেদের সবটুকু দেওয়ার চেষ্টা করেন না।

শিব নাদার বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিস্টিঙ্গুইশড প্রফেসর

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement