এখন। রাজভবনের পথে প্রতিবাদীরা। কলকাতা, ২০ সেপ্টেম্বর। ছবি: পিটিআই।
ধূপগুড়ির যে মেয়েটির বাবাকে সালিশি সভা ডেকে হেনস্থা করা হয়েছিল, মেয়েটি তা মেনে নেয়নি। সে প্রতিবাদ করেছিল। যেহেতু এই সময়ে পশ্চিম বাংলায় ‘প্রতিবাদ’ করা বড় বেশি ঝুঁকির কাজ, সেহেতু সেই মেয়েটি আর বেঁচে রইল না। আত্মহত্যা না হত্যা, এখনও নিশ্চিত নয়। শুধু একটা ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মৃতা মেয়ের ডায়েরির পাতায় পাওয়া গেছে রক্ত, আর শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার স্তবক। নদীর কবিতা: ‘নদী নদী নদী সোজা যেতিস যদি/ সঙ্গে যেতুম তোর আমি জীবনভর...’ নদী বাঁক নেবেই। জীবনও। তাই তো ‘যেতে যেতে যেতে’ নদীর সঙ্গে দেখা হয়। জীবন ফুরিয়ে যায়, সালিশি সভার রং লাল পাল্টে হয় সবুজ। (কোনও দিন হয়তো গেরুয়াও হবে) নদী বয়ে চলে।
পশ্চিম বাংলায় এখন ‘ছোট’ ঘটনার অভাব নেই। সন্দেহ নেই ধূপগুড়ির মেয়েটির নিথর শরীরটাও ‘ছোট’ একটা ঘটনা হয়েই রয়ে যাবে। শুধু ওর ডায়েরির পাতায় শক্তির কবিতাটা ক্রমশ বড় হয়ে উঠতে পারে। তাড়া করতে পারে সভা আলো করা, সর্বোচ্চ সম্মান পাওয়া গুণিজনদের।
বিশ্বকর্মা পূজার ঠিক আগের রাত্রে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত ছাত্রছাত্রীদের আক্রমণ করল যে শৃঙ্খলারক্ষাকারীর দল, তারা কারা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। সন্দেহ নেই, তারা আলো নিভিয়ে আক্রমণ করেছিল মেয়েদেরও, তাদের টেনে হিঁচড়ে বীরত্ব দেখিয়েছিল। আঘাত করেছিল। ‘ধূপগুড়ি’ নয়, কলকাতাতেই নিঃশব্দে ‘সালিশি সভা’ বসেছিল। ক্ষমতাবানদের শলা। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলতে, আলোচনা করতে সম্মানে বাধে উপাচার্য মহাশয়ের, তাই তাঁর সম্মান রক্ষা করতে ছাত্রছাত্রীদের পেটাতে লোক (নাকি গুন্ডা) পাঠায় প্রশাসন।
মনে ভিড় করছে নানান প্রশ্ন। ক্ষমতা ভোগের শেষ পর্ব থেকেই বাম নেতারা একটু একটু করে নিজেদের পার্টিকে সরিয়ে আনছিলেন যে-কোনও রকম ‘আন্দোলন’ থেকে। নিজেদের একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত, অক্ষম আন্দোলনের দায় ঝেড়ে ফেলে প্রমাণ করতে চাইছিলেন, কতটা শিল্পদরদি তাঁরা। গরিব মানুষের, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ তখন থেকেই সমাজের একটা বড় অংশের কাছে ‘অপ্রয়োজনীয়’ হয়ে উঠল। ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন বা শ্রমিক বিক্ষোভ অচিরে হয়ে উঠল ‘জুলুম’ বা ‘নিষিদ্ধ’ কর্মকাণ্ড। সবাই বিশ্বাস করতে শুরু করল, এ জন্যই পিছিয়ে পড়েছে রাজ্য বা স্তব্ধ হয়েছে ‘উন্নয়ন’। সন্দেহ নেই, বাম আমলে বহু বার, বহু সময় নানান আন্দোলন বিপথগামী হয়েছে। ক্লান্ত, বিরক্ত হয়েছেন মানুষ, রাজ্যের অর্থনীতিতেও তার প্রভাব পড়েছে। কিন্তু তখনকার শাসকরা এক সময় সমস্ত আন্দোলনকেই যে ভাবে বিপথগামী বলে দাগিয়ে দিচ্ছিলেন, সেটা অন্যায়।
মানুষ সেই অন্যায় মেনে নেয়নি। নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুরে কৃষকদের আন্দোলনে যদি গুলি না চলত, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার যদি চরম ঔদ্ধত্য ও শক্তির সঙ্গে ওই আন্দোলন দমন করার চেষ্টা না করতেন, তা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দলের পক্ষে ওই আন্দোলনের চালিকা শক্তি হয়ে ওঠা সম্ভব ছিল না। বামফ্রন্ট সরকার যে উপায়ে, যে পদ্ধতিতে সিঙ্গুরে বা নন্দীগ্রামে শিল্পস্থাপনা কতে চাইছিল, তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আসা উচিত ছিল বাম কৃষক সভা, বাম শ্রমিক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন থেকে। এল না। সংগ্রামের দায়ভার গিয়ে পড়ল যাঁদের হাতে, তাঁরা গরিব মানুষের প্রকৃত বন্ধু নন। সিপিআই(এম)-এর বিরুদ্ধে ‘একমাত্র’ বিশ্বস্ত লড়াকু নেত্রী হিসেবে মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই সমর্থন করল। আর আমাদের ‘সিভিল সোসাইটি মুভমেন্ট’ টুকরো টুকরো হয়ে গেল সেই সমর্থনের জোয়ারে, বন্ধু শত্রু হল। সব কিছুতেই আমরা-ওরা হয়ে গেল।
সাম্প্রতিক কালে বর্তমান শাসক দল তো আরও সচেতন ভাবে কালিমালিপ্ত করছে যে কোনও গণ-আন্দোলনকে। ফলে তৃণমূল ছাত্র সংগঠনের ঘেরাও কর্মসূচিতে ও দৌরাত্ম্যে পুলিশ নিষ্ক্রিয়, যাদবপুরে সেই পুলিশই প্রচণ্ড সক্রিয়। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কল্যাণে আমরা স্বচক্ষে দেখলাম সেই দৃশ্য। দুঃখিত হলাম, উত্তেজিত হলাম, রেগে গেলাম, মিছিলে হাঁটলাম। যাদবপুরের ঘটনাতে পশ্চিম বাংলায় বহু-বহু মানুষ আলোড়িত হয়েছেন, হবেন। পাশাপাশি এটাও জানি যে, পরিস্থিতি এতটাই গুলিয়ে গেছে যে বিরাট সংখ্যক মানুষের কাছে আজ যে-কোনও মাস মুভমেন্টই ‘এক’। কোনও গণ-আন্দোলনই মানুষের মনে গভীর ভাবে রেখাপাত করতে ব্যর্থ। অত্যন্ত সচেতন ভাবে এটা গুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশঙ্কা হয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের লড়াই, তাঁদের ওপর অন্যায় নিগ্রহ বৃহত্তর সমাজে রেখাপাত করবে তো? না কি, ‘ঘেরাও’ মানেই ‘গুন্ডামি’, এমন সরল সমাধানে পৌঁছে নিশ্চুপ থেকে যাব আমরা?
প্রশ্ন হচ্ছে, যদি এমন একটা ধ্যানধারণা তৈরি হয়ে থাকে সমাজের এক বড় অংশে, সেটা কেন হল? কেন অল্প সময়ের ভিতর সরকারের নানা ব্যর্থতা, অগণতান্ত্রিক কার্যকলাপ, সীমাহীন পেশিশক্তি প্রদর্শন ও দুর্নীতি, আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ভোটবাক্সে মানুষের সমর্থন শাসকরা পাচ্ছেন? শুধুই কি গায়ের জোরে মানুষের সমর্থন আদায়? মনে হয় না। আমার কেমন যেন মনে হচ্ছে, ইতিহাসে এমন এক-একটা সময় আসে, যখন আমরা আমাদের নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে খানিকটা বিমূঢ় বোধ করি।
মনে রাখতে হবে, চৌত্রিশ বছর বাম শাসনে, আমাদের মনে, মোটের ওপর একটা শান্তির প্রলেপ লাগানো থাকত। গরিব মানুষের, নিচুতলার মানুষের সমস্যা-দুঃখ আমাদের তেমন ভাবে স্পর্শ করত না— গোটা পৃথিবীর সঙ্গে যেন আমাদের যোগ ছিল না। ঘড়ির কাঁটা থমকে দাঁড়িয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। যাঁরা এক সময় সত্যি-সত্যি মেহনতি মানুষের আশা-ভরসা ছিলেন, তাঁরাও দ্রুত পাল্টে গেলেন, সেই সঙ্গে যে-কোনও রকম গণ-আন্দোলনই পরিণত হল সুবিধাবাদী কার্যকলাপে। তার ভিতরেও গরিব মানুষের কণ্ঠ তুলে ধরার মতো কিছু গণ-আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু তত দিনে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘বাজার’ সংস্কৃতি, আমরা প্রত্যেকটি মানুষ বুকের ভিতর তৈরি করে নিতে পেরেছি এমন কিছু চাহিদা, এমন কিছু স্বপ্ন, যা আমার নয়, সেই চাহিদা ও স্বপ্নকে ‘আমার’ বলে ভাবতে শেখাচ্ছে বাজার। ফলে, যা হবার তা-ই হল— আমার মনের যাবতীয় ‘কারুবাসনা’ শুকিয়ে যেতে লাগল। এক দিকে পুঁজি-সংস্কৃতি তীব্র ভাবে আমাকে ঠেলে দিল এমন একটা দৌড়ে, যেখানে আমার পাশের মানুষটার দুঃখ-কষ্ট বোঝার অবকাশটাও রইল না। অন্য দিকে, যাঁদের ওপর আমরা নির্ভর করেছিলাম, সেই কমিউনিস্ট পার্টিও ক্রমশ তাঁদের যাবতীয় উদ্যম, সংগ্রাম, লড়াই’কে হিমঘরে পাঠিয়ে মনোনিবেশ করলেন ভোটের হিসেবনিকেশে। এইখানেই বড় বিপদ তৈরি হল। আমরা যেমন এক দিকে ‘বাজার’কে মান্যতা দিয়ে, সুখী-সুখী মুখে ঘুরলাম-ফিরলাম-খেলাম-শুলাম, মিশেল ফুকোর সেই ‘অর্ডার অব ডিসকোর্স’ অনুযায়ী মনের ভিতর ‘রাষ্ট্রকে’ বহন করতে শুরু করলাম, অন্য দিকে কিন্তু ‘বৈষম্য’ রয়ে গেল। গরিব মানুষের দীর্ঘশ্বাস রয়ে গেল এবং যেহেতু এ ধরায় কোনও স্থানই শূন্য থাকে না, এই পশ্চিমবঙ্গেও সেই ফাঁকা জায়গাটা ভরাট হল শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাধ্যমে। মনে করুন, বিরোধী নেত্রী হিসেবে ওঁর যে-কোনও ইস্যুতে ঝাঁপিয়ে এক হঠকারী ও পরস্পরবিরোধী কার্যকলাপ। মনে করুন ওঁর ওপর বর্ষিত হওয়া শাসক দলের তাচ্ছিল্য ও শক্তি প্রদর্শন, মনে করুন সমাজের একটা বড় অংশের ওঁর ওপর অনাস্থা ও ব্যঙ্গবিদ্রুপ— এই সবই আমাদের মনে পড়বে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গরিব মানুষের, প্রান্তিক মানুষের খুব কাছাকাছি এনে ফেলেছেন নিজেকে, এটা যখন উপলব্ধি করলাম, তখন ‘তিনি’ এবং ‘তাঁর’ দল ছাড়া পশ্চিম বাংলায় কোনও বিকল্প নেই আমাদের হাতে। বাম শাসন যখনই দেখেছে, কেউ বা কারা তাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে, তৎক্ষণাৎ তার শাসকরা সেই সব মানুষকে দূরে ঠেলে দিতেন, প্রান্তিক করে দিতেন। শ্রীমতী বন্দ্যোপাধ্যায় যে পদ্ধতি নিলেন, সেটা অন্য রকম— ওঁর সংগ্রামী কার্যকলাপ, সাধারণ গরিব মানুষের পাশে থাকার যে ইমেজ, সেই মোহকে পরিপূর্ণ ভাবে ব্যবহার উনি ওঁর সমালোচক বা বিরুদ্ধবাদীদের কাছে টানলেন— বর্জন নয়, গ্রহণ। এই অন্তর্ভুক্তি আসলে এক রকমের ‘বহিষ্কার’। যাঁরা ক্ষমতার বৃত্তের ভিতর চলে আসছেন, তাঁরা আসলে যে কোনও রকম অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলার স্বর হারিয়ে ফেলছেন। তাই এত সহস্র রকম কমিটি, সাব-কমিটি তাই এত উৎসব, এত পুরস্কার, সম্মান। বাম নেতারা ক্রমশ বিচ্ছিন্ন করে নিয়েছিলেন নিজেদের, বালিতে মুখ গুঁজে অস্বীকার করতে চাইছিলেন ঝড়কে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব ধৈর্যের সঙ্গে অন্তর্গত করলেন সমাজের সেই অংশটিকে যাঁরা বিরুদ্ধমত তৈরি করতে সক্ষম। নানা উপায়ে, নানান বিনিময়ে এতটাই কাছে টানলেন তাঁদের, যে তাঁরা হয়ে পড়লেন নিশ্চুপ। অন্য দিকে রইল অনুব্রত মণ্ডল-মণিরুল-আরাবুলদের মতো মুখ— সিপিআই(এম)-এর মতো আড়ালে-আবডালে নয়, প্রকাশ্যে, স্পষ্ট ভাবে। এক দিকে রইল বিরোধী নেত্রী হিসেবে ওঁর সংগ্রামী ইতিহাস, অন্য দিকে যে-কোনও ‘গণ-আন্দোলন’কে স্তব্ধ করে দেওয়ার মতো ইস্পাত-কঠিন মনোভাব। বামপন্থী নেতৃবর্গ যখন চ্যুত হচ্ছিলেন তাঁদের আদর্শ থেকে, তখনও তাঁদের সঙ্গে লেগে থাকা নানান সংগ্রাম ও লড়াইয়ের ইতিহাস মাঝে মাঝে টেনে ধরত তাঁদের পিছন থেকে। তৃণমূল কংগ্রেসের সে দায় নেই, মিডিয়া-প্রমাণ-যুক্তি-তর্ক কিছুই কিছু নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ণধার থেকে পুলিশের কর্তা, সবাই চোখের পলক না ফেলে মিথ্যাচার করেন।
আমরাও, যারা এর বিরুদ্ধে কথা বলছি, ভেবে দেখুন, যে-কোনও গণ-আন্দোলন’কে সমর্থন করার আগে দশ বার ভাবছি বা বলছি— ‘যদিও ঘেরাও উচিত কি উচিত না, সে তর্ক করা যেতে পারে, তবু পুলিশ ডাকাটা অন্যায় হয়েছে।’ অর্থাৎ, প্রথমেই ‘ঘেরাও’ ‘বন্ধ’ ‘হরতাল’ বা ‘ধর্মঘট’ সম্পর্কে একটা অনাস্থা, একটা সন্দেহ আমরা প্রতিষ্ঠা করে ফেললাম, বার বার বলতে থাকলাম ‘আলোচনা’র মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব। যত আমরা ‘আলোচনা’ করব, এই ‘ডিসকোর্স’ ততই প্রতিষ্ঠা করবে ‘ক্ষমতা’কে। ছাত্রছাত্রীদের স্বতঃস্ফূর্ত লড়াইয়ে যে আবেগ, যে সততা, যে সাহসের প্রতিচ্ছবি রয়েছে, তাকে দমন করার জন্য যেমন এক দিকে রয়েছে পুলিশ ও গুন্ডাবাহিনী, অন্য দিকে তেমন ভাবেই রয়েছে এই ‘আলোচনার শাসন’, যার মাধ্যমে আমাদেরই অজান্তে আমাদের ব্যবহার করছে রাষ্ট্র। এক বার যদি কিছু গুন্ডামি, কিছু বিপথগামী ব্যর্থ গণ-আন্দোলনকে উদাহরণ হিসেবে খাড়া করে যে-কোনও সম্ভাবনাময় গণ-আন্দোলনকে ডানা ছেঁটে ‘আলোচনা’য় টেনে আনা যায়, তা হলে সম্পূর্ণ হয় ক্ষমতার উদ্দেশ্য। ‘শিক্ষক ও ছাত্র সম্পর্ক’, ‘শিক্ষার মান ও প্রসার’, ‘শিক্ষাঙ্গনে পুলিশি হস্তক্ষেপ কতটা জরুরি বা নয়’— এই সব নিয়ে সভা-সমিতি-সেমিনার হবে যত, ততই স্তিমিত হবে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি, ততই ঝাপসা হবে সেই মেয়েটির সমস্যা, যার জন্য ছাত্রছাত্রীরা লড়াইয়ে নেমেছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রামী ছাত্রছাত্রীদের এই আন্দোলনে বৃহত্তর সমাজের সমর্থন কতটা প্রয়োজন, আমি জানি না। বরং আমার মনে হয়, ছাত্রছাত্রীরাই এর প্রকৃত নিয়ন্ত্রক থাকুক। রাজনৈতিক দলগুলো বা সুশীল সমাজের সতর্ক দৃষ্টি থাকুক, কিন্তু আমরা যেন দূরেই থাকি। ভুল বা ঠিক, যা করার ছাত্রছাত্রীরাই করুক। ওদের গান, ওদের গিটার স্যাক্সোফোন বাঁশির সুর চাপ সৃষ্টি করুক শাসকদের উপর, প্রবল নৈতিক চাপ। ‘আলোচনা’র আড়ালে ক্ষমতার অনুপ্রবেশের হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখুক ওদের সংগ্রামকে।