এ বার সরাসরি সাংবাদিকদের হুমকি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এমন অনেক বিষয়ই রয়েছে, যে সব বিষয়ে আপনার তুলনা শুধু আপনিই। আপনার এমন অনেক আচরণ রয়েছে, যেগুলি বেশ বেনজির। কিন্তু সংবাদমাধ্যমকে আক্রমণ করার যে পথ আপনি ধরেছেন, সে পথে আপনিই প্রথম নন। আগেই গোটা পৃথিবী জুড়ে অনেকে এ পথে হেঁটেছেন। এ বার আপনিও হাঁটছেন। বেনজির কিছু করছেন না। তবে যে নজিরটা তৈরি করছেন, তাতে আপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে দুর্ভাবনা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, আপনাকে ইতিমধ্যেই এক বার মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে যে সংবাদমাধ্যমের প্রতি আপনার কটূ বাক্য, আপনার হুঁশিয়ারি, আপনার ধমক সম্পূর্ণ অবাঞ্ছিত। সংবাদমাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিচ্ছবি কী ভাবে ধরা পড়বে, সেটা সংবাদমাধ্যমই স্থির করবে, ডোনাল্ড ট্রাম্প নন— গোটা আমেরিকার সংবাদমাধ্যম অভিন্ন এবং বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরে এই বার্তা ইতিমধ্যেই দিয়েছে। কিন্তু আরও এক দফায় সে কথাটা আপনাকে মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে, কারণ বার্তাটা বলিষ্ঠ হলেও তাৎপর্য আপনার বোধগম্য হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না।
পিছনে ফেলে আসা শতকের পর শতকে কত রকমের আক্রমণের সম্মুখীন সংবাদমাধ্যমকে হতে হয়েছে এবং কত বার বেনজির প্রতিকূলতার সঙ্গে যুঝতে হয়েছে, ইতিহাস তার সাক্ষ্য দিতে সব সময়ই প্রস্তুত। ইতিহাসই আপনাকে বলে দেবে, কোনও অবাঞ্ছিত আক্রমণই সংবাদমাধ্যমে ক্ষয় ধরাতে পারেনি, বরং চূর্ণ হয়ে গিয়েছেন হামলাকারীরাই। বিপ্রতীপে, যত বার আক্রান্ত হয়েছি, শক্তি আমাদের ততই বেড়েছে, ঐক্যের ভিতটা ততই মজবুত হয়েছে। আদ্যন্ত অসৌজন্যমূলক ভাষায় এবং হুমকির সুরে আজ আপনি যা বলছেন, তাতে আমরা দুর্বল হচ্ছি ভাববেন না। আপনার গালমন্দ আমাদের প্রত্যয়কে আরও দৃঢ়ই করছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, সমসাময়িক কালের প্রাচীনতম গণতন্ত্রটির শীর্ষ পদে আজ আসীন আপনি। গণতন্ত্রের প্রতি অটল অঙ্গীকারের সুবাদেই আজ সমৃদ্ধির শিখরে আপনার দেশ। প্রাচীনতম সেই গণতন্ত্রটির শিখরে পা রেখেই আপনি তার ভিতে আঘাত করতে শুরু করেছেন।
মনে করিয়ে দেওয়া যাক আরও এক বার— সংবাদমাধ্যম গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। আপনি সেই স্তম্ভেই বিধ্বংসী আঘাত হানার চেষ্টা করছেন। প্রত্যেকটা আঘাত যে আত্মঘাতী হচ্ছে, প্রত্যেক আঘাতেই যে নিজের এবং দেশের বিপদ ডাকছেন, সে বোধ কি রয়েছে? বোধোদয় হলে মঙ্গল। নচেৎ, ইতিহাসের কোনও গৌরবময় পরিচ্ছেদে যে আপনার ঠাঁই হবে না, সে পূর্বাভাস এখনই দেওয়া যায়।