প্রতীকী ছবি।
কেউ কেউ সম্ভবত ‘পাশবিক’ আখ্যা দিতে চাইবেন এই ঘটনাকে। কিন্তু ভুলেও ওই বিশেষণটা প্রয়োগ করা উচিত হবে না। পশুরা এমন ঘটনা ঘটায় না কখনও। এই রকম ঘটনা মানুষই ঘটাতে পারে। অথবা বলা ভাল, মানুষের মতো দেখতে কিছু প্রাণীই এমন জঘন্য স্তরে নামতে পারে। কারও মধ্যে মানবিকতার ন্যূনতম উপস্থিতি যদি তাঁকে মানুষ বলে ডাকার অন্যতম প্রধান শর্ত হয়, তা হলে এই অপরাধীদের কোনও ভাবেই মানুষের পর্যায়েও ফেলা যাবে না।
সদ্য এক ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার সাক্ষী হতে হয়েছে মুম্বইকে। রেলওয়ে স্টেশনের ফুটব্রিজে ভয়ঙ্কর এক দুঃস্বপ্নের মতো হানা দিয়েছিল মৃত্যু। পদপিষ্ট হয়েছেন বহু। হানাদারি শেষে মিলেছে সার সার মৃতদেহ। জখম, ক্ষতবিক্ষত, অসুস্থ আরও অনেকে। আচমকা হানা দেওয়া এই দুঃস্বপ্ন মুম্বইকে যতটা ধাক্কা দিয়েছিল, বাণিজ্য নগরী তার চেয়ে অনেক বেশি হতচকিত হয়েছে দুর্ঘটনাস্থলের কিছু সিসিটিভি ফুটেজ দেখে। উদ্ধারকাজ বা মানবিক সহায়তার নামে দুর্ঘটনাগ্রস্ত নারীর শ্লীলতাহানি চলছে, ধরা পড়েছে সিসিটিভিতে। শুধু বাণিজ্য নগরী নয়, স্তম্ভিত গোটা দেশ! এরা কারা? এরা মানুষ? এরা সভ্য? এরা আমাদের সহ-নাগরিক?
আরও পড়ুন: এলফিনস্টোনে মৃতপ্রায় মহিলাকেও শ্লীলতাহানি!
শুধু সাধারণ উপলব্ধি নয়, মহাকাব্যিক উপলব্ধিও বলে, সামগ্রিক বিপদের ক্ষণে পশুরাও পরস্পরের সহযোগিতায় অভ্যস্ত। খাণ্ডব দাহনের সময় অরণ্য ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিল জীব-জন্তুরা। মহাভারতের এ আখ্যান সুবিদিত। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে খাদ্য-খাদক সম্পর্কের প্রজাতিরাও যে সে সময় পরস্পরের সহায়ক হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিল, তা-ও সুবিদিত। এ আখ্যান কিন্তু অস্বাভাবিক কিছু নয়। প্রকৃতির নিয়মেই এমনটা ঘটার কথা। কিন্তু মুম্বইয়ের সিসিটিভি ফুটেজ বলছে, আমাদের কোনও কোনও সহ-নাগরিকের মধ্যে সেটুকু বোধও অস্তিত্বশীল নয়। এদের আচরণকে পশুর আচরণের সঙ্গে তুলনা করলে পশুর যারপরনাই অপমান হয় না কি?