দেবীপক্ষেও নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। লজ্জা লুকনোর জায়গা কোথায় পাই?
প্রথমেই সকলকে মহাষষ্ঠীর শুভেচ্ছা। কিন্তু যতটা উচ্ছ্বাসে টইটম্বুর হয়ে এ শুভেচ্ছা জানানোর কথা, ততটাই উচ্ছ্বাস রইল এই শব্দগুলোয়— এমন কথা খুব হলফ করে বলতে পারছি না। কারণ দেবীর বোধনের সকালেও খুব নিশ্চিত হতে পারছি না সামাজিক বোধোদয় সম্পর্কে।
ভারতীয় রীতি নারীর নামে ‘দেবী’ শব্দ ব্যবহার করতে শেখায়। ভারতীয় সভ্যতার বহু প্রাচীন রীতি এটি। এই রীতি যে নারীর প্রতি সম্মানসূচক ও সম্ভ্রমসূচক, সে কথার উচ্চারণ বাহুল্য মাত্র। কিন্তু সে সব তাৎপর্য সম্পর্কে ভাবার অবকাশ বা অভ্যাস অনেকেরই তৈরি হয়নি। তাই দেবীপক্ষেও নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। লজ্জা লুকনোর জায়গা কোথায় পাই?
বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ তথা জনপ্রিয় অভিনেত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে চতুর্থীর রাতে। রাস্তার উপরে বসে চলছিল মদ্যপান। সেই রাস্তা ধরেই পরিজনের বাড়ি যাচ্ছিলেন ওই মহিলা। ফলে থমকে যায় গাড়ি, মদ্যপরা রাস্তা না ছাড়া পর্যন্ত এগোনোর উপায় ছিল না। কিন্তু রাস্তা ছেড়ে দেওয়া তো দূরের কথা, গাড়ির আলো চোখে পড়ায় উল্টে চড়াও হয় মদ্যপরা। মহিলা প্রতিবাদ করায় তাঁর শ্লীলতাহানি ঘটানো হয়। অভিযোগ অন্তত এই রকমই।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
ঘটনার যে বর্ণনা শোনা গিয়েছে, তা স্তম্ভিত করার মতো! এই ঘটনা যদি ঘটে থাকে, তা হলে সে চরম নৈরাজ্যের সূচক। আইন-শৃঙ্খলা বা পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি অবজ্ঞা এ রাজ্যের নাগরিকদের একাংশের অধিকার হয়ে উঠেছে সম্প্রতি যেন। চতুর্থীর রাতে খাস কলকাতায় যে ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ, সে ঘটনা ওই অধিকারের বলেই ঘটানো সম্ভব। পঞ্চমীর রাত পর্যন্ত কারও গ্রেফতার হওয়ার খবর মেলেনি। ঘটনাটাকে নগণ্য হিসেবে দেখানোর চেষ্টা কোনও মহল থেকে হচ্ছে না বা হবে না, এমন নিশ্চয়তাও বোধহয় নেই। কারণ আমাদের রাজ্য এখন উৎসব মুখর আর উৎসবের দিনে ঘটে যাওয়া বড় অঘটনকেও যথা সম্ভব ছোট করে দেখানোর প্রবণতার সাক্ষী আমরা সবাই।
আরও পড়ুন
রাস্তায় মদের আসর, প্রতিবাদ করায় টলি অভিনেত্রীর শ্লীলতাহানি!
পুলিশ-প্রশাসন ঠিক মতো কাজ করলে এমন ঘটনা ঘটতে পারত না— এ কথা অনেকেই বলবেন। ভুল কথা নয়| অপরাধ রুখতে পুলিশ সব সময় বদ্ধপরিকর— এই বার্তা সুচারু ভাবে চারিয়ে দেওয়া থাকলে এমন ঘটনা ঘটত না হয়তো। কিন্তু সামাজিক অবক্ষয়টাও উদ্বেগজনক আকার নিয়েছে। তার প্রতিকারটাও খুঁজতে হবে আমাদের।