হাতে হাতে। ভবানীপুরের প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
১৯৮৬’র জানুয়ারি মাসে দিল্লিতে ‘শ্রীরাম সেন্টার ফর আর্ট অ্যান্ড কালচার’-এ উৎপল দত্ত মহাশয় একটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন, যেটি পরে ছাপার অক্ষরে প্রকাশ পেয়েছিল। ওঁর আলোচনার শিরোনাম ছিল: হোয়াট ইজ টু বি ডান? ভারতে তৎকালীন সামাজিক-অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে নাট্যশিল্পীর ভূমিকা কী বা কেমন, বা কতটুকু, তারই একটা আভাস পাওয়া যায় ওই বক্তৃতায়। বক্তব্যের ছত্রে ছত্রে যথারীতি উৎপল দত্ত-স্বরূপ ব্যঙ্গবিদ্রুপ, যা তিরের মতো বিদ্ধ করেছে তৎকালীন ক্ষমতায় আসীন কংগ্রেসি সরকার ও প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীকে। উৎপল দত্ত প্রশ্ন তুলেছেন, কেন ক্ষমতাসীন কংগ্রেসি সরকার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস থেকে সচেতন ভাবে বাদ রাখার বা তুচ্ছ করে দেখবার চেষ্টা করেছেন সমস্ত রকমের সশস্ত্র সংগ্রামের ভূমিকাকে। আঠারো শতকের কৃষক বিদ্রোহ, যা খ্যাত হয়েছিল ‘সন্ন্যাসী-ফকির’ বিদ্রোহ হিসেবে, ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহ, হায়দার আলি-টিপু সুলতানের লড়াই, চিলিয়ানওয়ালার সশস্ত্র সংগ্রাম, মরাঠিদের লড়াই, বাংলার সশস্ত্র সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ— সবই যেন বড় ফিকে। উৎপলের ভাষণে হতাশা ঝরে প়ড়ে: ফলসিফিকেশন অব হিস্টরি ক্যান’ট গো টু মোর শেমলেস লেংথস।
কথাগুলো নিয়ে তর্ক চলতে পারে, কিন্তু সবটা ফেলে দেওয়ার মতো নয়। ইতিহাসকে নিজেদের ইচ্ছেমত সাজিয়ে নেওয়ার প্রবণতা আজও সত্য। বিজেপি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ কংগ্রেসের। অভিযোগগুলো মিথ্যা নয়। আবার এটাও সত্য যে, ক্ষমতায় থাকা মুখগুলো একই রকমের হয়। দেশপ্রেমের নামে গোটা দেশ জুড়ে অসহিষ্ণুতা ও উগ্র হিন্দুত্ববাদকে ছড়িয়ে দিয়ে একটা আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি করেছে বিজেপি। অতীতে কংগ্রেসি সরকারও কি তৈরি করেনি জরুরি অবস্থার ভয়ানক দিনগুলো? আবার, শ্রীমতী ইন্দিরা গাঁধীর হত্যার পর প্রকাশ্য রাজপথে নৃশংস নিধন। উৎপল দত্তের প্রশ্নবাণ: অকালি দলের বিরুদ্ধে কারা তৈরি করেছিল ভিন্দ্রানওয়ালেকে? দেশের নাট্যকারদের তিনি ডাক দিয়েছিলেন: প্রশ্ন করো, প্রশ্ন করো নাটকের ভাষায়। ‘অপারেশন ব্লু স্টার’-এর সময় পঞ্জাবের সমস্ত সংবাদমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা নেমে এসেছিল। সাংবাদিকদের মিলিটারি বাসে চড়িয়ে রেখে আসা হয় হরিয়ানার সীমান্তে, জারি হয় কার্ফু, কোনও সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কেন? উৎপল দত্তের বয়ানে: ‘প্রশ্ন করো এবং প্রশ্ন করো, যতক্ষণ না তারা সিঁটিয়ে, কুঁকড়ে যায়। ছুরিটা ঢুকিয়ে দাও এবং ঘোরাতে থাকো। এ ভাবে ভাবাটাই দায়িত্বসচেতন এক জন নাট্যকারের কর্তব্য।’
১৯ অগস্ট ’৯৩ বুকের ওপর কার্ল মার্ক্স আর কাস্তে-হাতুড়ি আঁকা লাল পতাকায় শোভিত হয়ে সব যুক্তি-পাল্টা যুক্তির বাইরে চলে গেলেন উৎপল দত্ত। তবু ’৮৬-র ওই স্মারক বক্তৃতার বেশ কিছু অংশ এই ২০১৬ এপ্রিলে, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্মুহূর্তে নানান কারণেই ভাবাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গবাসী অবাক বিস্ময়ে দেখছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নানাবিধ সব কর্মকাণ্ড। কত রকমের ফিরিস্তি, কত রকমের জোট, হরেক রঙের প্রতিশ্রুতি।
কংগ্রেস বামফ্রন্টের প্রকাশ্য জোটই নয়, তৃণমূল-বিজেপি’র অপ্রকাশ্য বোঝাপড়াই নয়, আমরা দেখছি কী ভাবে, কী অনিবার্য অসহায়তার সঙ্গে শুভবুদ্ধি জোট বাঁধছে দুর্বুদ্ধির সঙ্গে। গুলিয়ে যাচ্ছে ঠিক-বেঠিকের সীমারেখা। নাগরিক সমাজের একটা বড় অংশ জোট বেঁধেছিল নীরবতার সঙ্গে। নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর, নেতাই বা জঙ্গলমহলের গরিব, খেটে খাওয়া মানুষ তাঁদের রক্ত দিয়ে, সর্বস্ব পণ করা লড়াই দিয়ে নাগরিক সমাজকে বুক টান করে দাঁড়াবার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। নাগরিক সমাজের প্রতিবাদীদের একটা বড় অংশ ভাবলেন, বামফ্রন্টকে সরিয়ে তৃণমূলকে ক্ষমতায় নিয়ে আসাটাই ‘একমাত্র’ কর্তব্য। তাঁরা বুঝলেন না, একটা বড় সম্ভাবনাকে গলা টিপে হত্যা করলেন।
এই রকম একটা পশ্চিমবাংলা কি আমাদের প্রাপ্য ছিল? স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, শাসক দলের নেতানেত্রীরা জোট বেঁধেছেন আকণ্ঠ লোভের সঙ্গে। এবং বুক ফুলিয়ে বলছেন, ‘ভোটে মানুষ এর জবাব দেবেন’। অর্থাৎ, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার সৎসাহস নেই, এতটুকু বিবেকের তাড়না নেই, আছে শুধু জয়ী হওয়ার উদগ্র বাসনা। যে কোনও মূল্যে জয়ী হওয়াটাই ‘গণতন্ত্রের’ জয়? আমরা যারা ২০০৭ থেকে ২০১১ নির্বাচন পর্যন্ত সজাগ ও সরব ছিলাম, আমরা কেন জোট বাঁধব ‘নীরবতা’র সঙ্গে? কেন এমন ভাব করব, যেন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না, কিছুই শুনতে পাচ্ছি না?
আজ ওই নিরপেক্ষ নাগরিক মঞ্চটা যদি আমরা রাখতে পারতাম, তা হলে শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের নীতিহীনতা নয়, আমরা প্রশ্ন করতে পারতাম বাম-কংগ্রেস জোট নিয়েও। মানুষ ও নিচুতলার কর্মীরা নাকি এই জোট চাইছেন। হতে পারে সত্য। এও হতে পারে, জোট প্রচুর ভোট পেল। কী প্রমাণ হবে তাতে? বাম নেতৃত্বের যুক্তি, পশ্চিম বাংলায় এই মুহূর্তের সব থেকে বড় শত্রু তৃণমূল এবং বিজেপি। বেশ, মানতে রাজি আছি। কিন্তু কংগ্রেসের ভিতর কোন অসামান্য বিশ্বাসযোগ্যতা আবিষ্কার করলেন বাম নেতারা? ’৭২ থেকে ’৭৭-এর যে রিগিং-সন্ত্রাস-গুন্ডামির কথা বামফ্রন্টের নেতানেত্রীরা বলেছিলেন বছরের পর বছর, সেই ‘ইতিহাস’ কি মিথ্যে? লাল পতাকার সম্মান রক্ষায় সর্বস্ব খুইয়েছেন কত নাম-না-জানা নাট্যকর্মী, সাধারণ মানুষ। তাঁরা এবং তাঁদের নিকটজনরাও এই জোট চাইছেন? নির্বাচনী কৌশল আর নীতিবোধ এক জিনিস নয়। তৃণমূলের কোনও দর্শনগত ভিত্তি নেই, কিন্তু কোন দর্শন বা আদর্শের ভিত্তিতে বামপন্থীদের মনে হল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সম্ভব?
আমাদের রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মহাশয় একটা সময় একটি নাট্যদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই গুরুত্বপূর্ণ নাট্যদলটি আজও নিয়মিত, নিষ্ঠার সঙ্গে নাট্যচর্চায় রত। প্রতিবছর তাঁরা ‘সত্যেন মিত্র স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করেন সেই বছরের সেরা নাট্যকারকে। পশ্চিম বাংলার বিখ্যাত নাট্যকাররা সেই সম্মান পেয়েছেন। যাঁর নামে এই পুরস্কার, সেই সত্যেন মিত্র কংগ্রেসি গুন্ডাদের আক্রমণে নিহত হয়েছিলেন। প্রতি বার, পুরস্কার প্রদানের আগে নাট্যদলের কর্ণধার সেই কথা সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন। ‘জোট’-এর ফলাফল যা-ই হোক, সত্যটা তো সত্যই থাকবে। নন্দীগ্রাম সিঙ্গুরের ঘটনার পর যে সমস্ত বামপন্থী বুদ্ধিজীবী, লেখক, কবি, নাট্যকর্মী সেই সময় বামফ্রন্টকে সমর্থন করেছিলেন, সেই সমর্থন ঠিক হোক বা ভুল হোক, অন্তত তাঁরা সরব ছিলেন। যে তৃণমূল-কংগ্রেস জোটের বিরুদ্ধে তাঁরা তাঁদের যুক্তি-বুদ্ধি অনুযায়ী সরব ছিলেন, জানতে ইচ্ছে করে, এই বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্ মুহূর্তে তাঁদের বক্তব্য কী? তাঁদের জোট কার সঙ্গে? ‘যা হচ্ছে, তা ভালর জন্যই হচ্ছে’, এমন মনোভাবের সঙ্গে?
বামফ্রন্টের শেষের দিকের চরম নৈরাজ্য ও নীতিহীনতা এবং তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকারের চরম ব্যর্থতা পশ্চিমবাংলাকে অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছে। মানুষ চার দিকের নানা রকম নৈরাজ্য দেখে ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ-এ নানান মজার ছড়া আর কার্টুন এঁকে একে অপরকে পাঠিয়ে, হেসে বা রসিকতা করে নিজেদের ভুলিয়ে রাখছেন। তাঁরা জোট বেঁধেছেন এক হতাশায় জীর্ণ পরিহাসের সঙ্গে। আমাদের চিন্তাভাবনা, ইচ্ছে-অনিচ্ছেগুলো ‘বামন-আকার’ ধারণ করেছে। নির্বাচনে জেতার জন্য নানান ‘কৌশল’ কাজে লাগতে পারে, কিন্তু রাজ্যটার বড় রকমের উন্নতি অসম্ভব।
উৎপল দত্ত সেই ভাষণে এক জায়গায় ধ্রুপদী নাটক সম্পর্কে বুর্জোয়া শ্রেণির মনোভাব প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ইউরোপে একটা সময়ে শেক্সপিয়রের নাটকের সংলাপকে, ঘটনাবলিকে, চরিত্রদের আক্রমণ করা হয়েছিল এই বলে যে, তারা ‘অস্বাভাবিক’, তাদের যাবতীয় ব্যবহার ও কর্মকাণ্ড সাধারণের বোধবুদ্ধির বাইরে। মার্ক্সীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উৎপল দত্ত ব্যাখ্যা করছেন, পুঁজিবাদী সভ্যতা মানুষকে ছাঁচে ঢালা বস্তু হিসেবেই দেখতে চায়। তাই, শেক্সপিয়রের নাটকের চরিত্ররা যখন তাদের বিশাল ক্ষমতা, পাপ, ভালবাসা, রাগ, অভিমান, যন্ত্রণা নিয়ে মঞ্চে আসে, তখন বুর্জোয়া শ্রেণির মনে হয় চরিত্রগুলো বড় অস্বাভাবিক।
পৃথিবীটা বদলে গেছে। বিশ্ব জুড়ে একটা বৃহৎ স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটেছে। বদলে গেছে অনেক কিছু। কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতি, বিশ্বায়ন, কিছুই মানুষের প্রতিদিনের বেঁচে থাকাকে নির্ভরতা দিতে পারেনি; উল্টে কঠিনতর করেছে। চৌত্রিশ বছরের বাম শাসন একটা ‘স্থিতাবস্থা’র জন্ম দিয়েছিল, ভোটকে একমাত্র ‘সত্য’ হিসেবে ভাবার কারণে সর্বক্ষেত্রেই তৈরি হয়েছিল মধ্যমেধার দাপট। বামনাকৃতি স্বপ্ন দেখার সেই শুরু, তৃণমূল সেটা আরও ক্ষুদ্র করেছে।
তবু কী আশ্চর্য, ঠিক এমন সময়কালেই বাংলা মঞ্চে ও চলচ্চিত্রে এসেছেন উইলিয়াম শেক্সপিয়র, আরও এক বার। ‘নীল সোফা সেটে বসে মিঠে খুনসুটি’ ছেড়ে মঞ্চে এসেছে হ্যামলেট, রাজা লিয়র, ম্যাকবেথ, ওথেলো, জুলিয়াস সিজার, রোমিয়ো জুলিয়েট, ফাগুন রাতের গপ্প (আ মিডসামার নাইট’স ড্রিম), হৃদমাঝারে (অ্যাজ ইউ লাইক ইট), মুম্বই নাইটস (টুয়েলফথ নাইট), সম্প্রতি আবারও ‘ওথেলো’ অবলম্বনে ‘অথৈ’, তরুণ নির্দেশক অর্ণ মুখোপাধ্যায় গোটা দেশ জুড়ে জাতপাত-নির্ভর রাজনীতি ও দলিত শ্রেণির মানুষদের ওপর অত্যাচারের কথা নিয়ে এসেছেন খুব সূক্ষ্ম ভাবে তাঁর প্রযোজনায়। বাংলা চলচ্চিত্রেও এসেছে ‘আরশিনগর’ (রোমিয়ো জুলিয়েট প্রাণিত অপর্ণা সেনের নির্মাণে), আসতে চলেছে ‘হ্যামলেট’ অবলম্বনে অঞ্জন দত্তর ‘হেমন্ত’, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘জুলফিকার’ (জুলিয়াস সিজার)।
শেক্সপিয়রের বেশ কয়েকটি নাটকে এমন কিছু মানুষকে আমরা ‘জোট’ বাঁধতে দেখি, যাঁদের মধ্যে আপাতদৃষ্টিতে কোনও মিলই নেই। কিন্তু, কী ভাবে যেন ‘ঠিক-বেঠিক’-এর সীমাটা গুলিয়ে যায়, ন্যায়-নীতির বোধকে গ্রাস করে ক্ষমতালিপ্সা, প্রেমকে ঢেকে দেয় ঈর্ষা। ম্যাকবেথের ভিতর কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে থাকা ক্ষমতালিপ্সাকে জাগিয়ে তোলে লেডি ম্যাকবেথ। ব্রুটাস-এর স্বদেশপ্রেমকে ভুল পথে চালিত করে ক্যাসিয়াস, ওথেলোর ভিতর ইয়াগো পুরে দিতে সমর্থ হয় সর্বনাশা ঈর্ষার বিষ। আরও বহু স্তর রয়েছে চরিত্রগুলির, যা নানা ভাবে ভাবাচ্ছে নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের। প্রেরণা জোগাচ্ছে সময়কে বিশ্লেষণ করতে।
ফিরে যাই সেই গোড়ার প্রশ্নে: হোয়াট ইজ টু বি ডান? কী করতে হবে? এই সময়ের প্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে এক জন নাট্যকর্মী শুধু নন, এক জন শিল্পীর দায়িত্ব কী? বলা বাহুল্য, সত্য বলা এবং প্রশ্ন করা, যে প্রশ্ন অস্বস্তিতে ফেলবে ক্ষমতালোভী মানুষদের। আর এই সব কিছুর বিনিময়ে শিল্পী কী পাবেন? ‘বঙ্গভূষণ’, ‘শ্রী’, ‘বিভূষণ’, এ সব কিছু নয়। পাবেন সেই শক্তি ও সামর্থ্য, হেনরিক ইবসেন-এর নাটকের নায়ক ড. স্টকম্যান যা পেয়েছিলেন: ‘পৃথিবীর সবলতম মানুষ হলেন তিনি, যিনি সবচেয়ে একা দাঁড়িয়ে থাকেন।’
এখানেই শেষ নয়। ইবসেন-এর কালজয়ী নাটকটিকে বহু পরে নাট্যকার আর্থার মিলার একটু ভিন্ন ভাবে রূপান্তর করেন। সেই নাটকের শেষে ড. স্টকম্যান উপলব্ধি করেন আরও এটি মহাসত্য: ‘তুমি সত্যের জন্য লড়াই করছ, এবং সেই কারণেই তুমি একা। এটা তোমাকে সবল করে। আর যে সবল তাকে একা হতে শিখতেই হবে।’ একা হওয়া ছাড়া এই মুহূর্তে এক জন শিল্পীর আর কিছু পাওয়ার নেই।