প্রদীপ মণ্ডল ও সুকান্ত মণ্ডল (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
পতাকা খোলাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতেরক্তাক্ত হল উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির ন্যাজাট। বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে চার জনের। রাজ্যের মন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেছেন, বছর ছাব্বিশের মৃত কায়েম মোল্লা তাঁদের দলের সমর্থক।
এ দিন রাতে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু দাবি করেন, সংঘর্ষে তাঁদের দলের পাঁচ কর্মীরও মৃত্যু হয়েছে। সায়ন্তনবাবুর দাবি, “পাঁচ জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে তিন জনের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। বাকি দু’জনের দেহ পুলিশ সরিয়ে ফেলেছে বলে আমাদের কাছে খবর আসছে।
সুজিত মণ্ডল, তপন মণ্ডল ও সুকান্ত মণ্ডল নামে যে তিন জন বিজেপি কর্মীর দেহ পাওয়া গিয়েছে, এ ছাড়া চার জন নিখোঁজ। ওই চার জনের মধ্যে শঙ্কর মণ্ডল এবং দেবদাস মণ্ডল নামে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। কিন্তু পুলিশ মৃতের সংখ্যা কমিয়ে দেখাতে ওই দুজনের দেহ লোপাট করার চেষ্টা করছে।” বিজেপি সূত্রের খবর, প্রদীপ এস সি মোর্চা-র মণ্ডল সভাপতি। তপন শক্তিকেন্দ্র প্রমূখ এবং সুকান্ত বিজেপি-র কর্মী ছিলেন। বিজেপি-র আরও দাবি, যে চার জন নিখোঁজ, তার মধ্যে দু’জন মৃত। বাকি দু’জন নিখোঁজ হলেন সঞ্জয় মণ্ডল ও তাঁর জামাইবাবু।
অন্য দিকে, তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আমাদের এক তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। বিজেপির হার্মাদরা তাঁকে মেরেছে। মাথায় গুলি করেছে। বিজেপি যদি মারার রাজনীতি শুরু করে আমরাও ছাড়ব না।” জেলা বিজেপি-র সভাপতি গনেশ ঘোষের অভিযোগ, পুলিশ মৃতদেহ সরাতে চাইছে।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
শনিবার সন্ধ্যায় সন্দেশখালিতে বুথ কমিটির বৈঠক হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। সেই সময় পার্টি অফিসের পতাকা খোলাকে কেন্দ্র করে গণ্ডগোলের সূত্রপাত। যে পার্টি অফিসে বুথ কমিটির বৈঠক হচ্ছিল, কয়েকদিন আগে ওই অফিসেই বিজেপি তাদের দলীয় পতাকা লাগিয়ে দেয় বলে জ্যোতিপ্রিয়র অভিযোগ। এ দিন সেই পতাকা খুলে ফের তৃণমূলের পতাকা লাগানোর চেষ্টা করতেই বিজেপি কর্মীরা বাধা দেয়। পাল্টা প্রতিবাদ করে তৃণমূল কর্মীরা।
জ্যোতিপ্রিয় জানিয়েছেন, সেই সময়ে একটি গুলি এসে লাগে কায়েমের গায়ে। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। দু’পক্ষেরই দাবি, তাঁদের বেশ কয়েক জন সমর্থক আহত হয়েছেন। সন্দেশখালির পরিস্থিতি জানাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করবেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।